বিদেশ যেতে হলে খালেদা জিয়াকে কীভাবে দরখাস্ত করতে হবে

বিদেশ যেতে হলে খালেদা জিয়াকে কীভাবে দরখাস্ত করতে হবে
MostPlay

দুর্নীতিতে দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে হলে তাকে কীভাবে দরখাস্ত করতে হবে- সেই প্রক্রিয়া আবারো জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। মন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়া যদি বলেন- আপনারা আমাকে যে শর্তযুক্ত (শর্তে) ছেড়ে দিয়েছেন, এটা আমি মানি না।

আমাকে জেলে নিয়ে যান, আমি আবার দরখাস্ত করব। তখন উনি আবার দরখাস্ত করতে পারেন।’ বুধবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) বার্ষিক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমি এখানেও বলছি, সংসদেও বলেছি। শর্তযুক্ত শর্তে তিনি সাজা স্থগিতে যে মুক্তি পেয়েছেন, সেটি যদি না মেনে পুনরায় জেলে যেতে চান, সেটাও হতে পারে।’ ‘এই অবস্থায় ফৌজদারি কার্যবিধিতে কোথাও নেই যে তাকে আমরা আগের দরখাস্তের বিবেচনায় বিদেশ যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে পারব।

ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় কাউকে বিদেশ যেতে দেওয়া যাবে না, এটা আমি কখনো বলিনি। একবার নিষ্পত্তিকৃত কোনো দরখাস্ত আবার পুনর্বিবেচনার কোনো সুযোগ ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় নেই।’ আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আইনে আছে শর্তযুক্ত, শর্তমুক্ত।

খালেদা জিয়ার দরখাস্ত নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। সরকারকে আইনের মধ্যে থেকে কাজ করতে হয়। এই দরখাস্ত সেটি নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। আমার কথা হল, আমি যেটা বারবার বলে আসছি, একটা নিষ্পত্তি করা দরখাস্ত, আইনে পুনর্বিবেচনা করার ক্ষমতা আমার নাই। এখন খালেদা জিয়া ‘নতুন করে’ একটি আবেদন করলে তার ওপর আলোচনা হতে পারে।’

এভার কেয়ার হাসপাতাল তার (খালেদা জিয়ার) জন্য সর্বশেষ প্রযুক্তিতে চিকিৎসা করছে উল্লেখ করে আনিসুল হক জানান, ‘আমি যতটুকু খবর পেয়েছি, কিছুটা তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। এখানে তিনি (খালেদা জিয়া) যতটুকু সম্ভব সুচিকিৎসা পাচ্ছেন। এইটুকু আমি আপনাদের বলতে পারি। সেখানে সরকারের কোনো হাত নেই। তাদের ইচ্ছেমতো তারা চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং পাচ্ছেন।’

৭৬ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বহু বছর ধরে আর্থ্রারাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। অসুস্থতার জন্য টানা ২৬ দিন ওই হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ৭ নভেম্বর বাসায় ফেরেন তিনি। এর ছয়দিনের ব্যবধানে খালেদা জিয়াকে আবার ঢাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তির পর ১৪ নভেম্বর দিবাগত রাতে তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে সিসিইউতে নেওয়া হয়।

এখন তার ‘পরিপাকতন্ত্রে’ রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসের কথা জানান চিকিৎসকরা। তার চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এর আগে গত এপ্রিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন খালেদা জিয়া। পরে করোনা পরবর্তী জটিলতায় ২৭ এপ্রিল হাসপাতালে ভর্তি হন।

সে সময় এক মাসের বেশি সময় হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি ছিলেন। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে ১৯ জুন বাসায় ফেরেন। পরে করোনার টিকা নিতে তিনি দুই দফায় মহাখালীর শেখ রাসেল ন্যাশনাল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালে যান। উল্লেখ্য, দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে খালেদা জিয়া ২০০৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান।

করোনা মহামারির প্রেক্ষাপটে গত বছরের ২৫ মার্চ সরকার শর্তসাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। এ পর্যন্ত তিন দফায় খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়। তবে বিএনপির নেতারা খালেদা জিয়ার শর্তসাপেক্ষে এ মুক্তিকে ‘গৃহবন্দি’ বলছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে বারবার আবেদন করা হলেও সরকার তা নাকচ করে দেয়। তাকে দেশে থেকেই চিকিৎসা নিতে হবে বলে শর্তও দেওয়া হয়েছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password