অজানা রোগে মিনিটে মিনিটে মারা যাচ্ছে গরু

অজানা রোগে মিনিটে মিনিটে মারা যাচ্ছে গরু

অজানা রোগে মিনিটে মিনিটে মারা যাচ্ছে গরু। গত ৩ দিন ধরে অজ্ঞাত রোগে এক খামারির ২৫টি গরু-মহিষের মৃত্যু হয়েছে। 

অজ্ঞাত রোগে দিনাজপুরের বীরগঞ্জে এক খামারির ২২টিসহ ২৫টি গরু-মহিষের মৃত্যু হয়েছে। গত ৩দিন ধরে বীরগঞ্জে বিভিন্ন খামারে এধরনের ঘটনা ঘটছে। অজ্ঞাত রোগ নির্ণয়ের জন্য জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার নেতৃত্বে ৪ সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে।

জেলা ভেটেরিনারি কর্মকর্তা ডাক্তার আশিকা আকবর তিশার নেতৃত্বে ৪ সদস্যের টিম রোগ নির্ণয়ের জন্য কাজ শুরু করেছে। খামারিরা জানিয়েছেন, রোগটি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মুখ দিয়ে লালা আসার কিছুক্ষণের মধ্যে মাটিতে পড়ে গিয়ে একের পর এক গরু মারা যাচ্ছে। হঠাৎ করে অজ্ঞাত রোগে গরুর মৃত্যুতে ক্ষতির মুখে পড়েছে খামারিরা। ঘটনার পর থেকে খামারিদের মাঝে আতংকের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

এ ঘটনায় রোববার পর্যন্ত উপজেলার সাতোর ইউনিয়নের প্রাণনগর ঘোষপাড়ার বাসিন্দা মৃত বীরেন্দ্রনাথ ঘোষের ছেলে গোপাল ঘোষের ২২টি গরু এবং গোবিন্দ ঘোষের ১টি গরু ও ১টি মহিষের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়াও আশপাশের বেশ কিছু গরু আক্রান্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত খামারি গোপাল ঘোষ জানান, তার গরুর খামারে ১৩০টি বিভিন্ন প্রজাতির গরু রয়েছে।

বৃহস্পতিবার হঠাৎ করে খামারের বেশ কয়েকটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর রাত থেকে গরুর মুখ দিয়ে লালা পড়ার শুরু করে। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই একের পর এক গরু মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। কোন রোগে আক্রান্ত হয়েছে এখনও নিশ্চিত হতে পারছি না।

রোববার (১০ ডিসেম্বর) পর্যন্ত খামারের ২২টি গরুর মৃত্যু রয়েছে বলে তিনি জানান। এ ব্যাপারে গোবিন্দ ঘোষ জানান, একইভাবে তার খামারের ১টি গরু এবং একটি মহিষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে তারসহ প্রতিবেশীদের বেশ কয়েকটি গরু আক্রান্ত হয়েছে। ঘটনার পর থেকে গরু নিয়ে এলাকার মানুষ দিশেহারা এবং খামারিদের মাঝ আতংকের সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে সংবাদ পেয়ে শনিবার রাত থেকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. শামীমা বেগমের নেতৃত্বে একটি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ওসমান গণি।

তিনি বলেন, শনিবার রাতে সংবাদ পেয়ে বিষয়টি ঊর্ধ্ব তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। মৃত গরুর স্যাম্পল সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। সকাল থেকে নিজেও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পুরো বিষয়টি তদারকি করছেন তিনি। এটি ফুড অ্যান্ড মাউথ রোগের লক্ষণ বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এবং জেলা থেকে একটি বিশেষজ্ঞ মেডিকেল টিম ঘটনাস্থলে রওয়ানা হয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন  জানান, ঘটনা জানার পরপরই বীরগঞ্জ এবং খানসামা থেকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এবং ভেটেনারি সার্জনরা ওখানে অবস্থান করছেন। আজ বিকেলে জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকেও ১০ জনের একটি টিম সেখানে যাচ্ছেন। অজ্ঞাত রোগ থেকে খামারীরা যেন রক্ষা পায় সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে প্রাণিসম্পদ বিভাগের বিশেষজ্ঞরা।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password