আগামী বছরের মার্চেই ইরানের বহরে যুক্ত হতে চলেছে ৪টি অত্যাধুনিক রুশ হেলিকপ্টার। এমনটি জানিয়েছে ইরানের বার্তা সংস্থা, ইরনা। প্রতিবেদনে বলা হয়, গেল এপ্রিলে রাশিয়া থেকে ১৫টি হেলিকপ্টার কেনার জন্য চুক্তি করে ইরান। প্রয়াত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসির শাসনামলে প্রায় ৫শ' মিলিয়ন ডলারের ঐ চুক্তি হয়। এরমধ্যে ১২টি হেলিকপ্টার মুলত উদ্ধারকাজ চালানোর জন্য ব্যবহৃত হবে। বাকিগুলো ব্যবহৃত হবে আগুন নেভানোর কাজে। তবে কোন প্রতিষ্ঠানের হেলিকপ্টার কিংবা এগুলোর সামরিক সক্ষমতা রয়েছে কি না সেই বিষয়ে এখনও কিছু স্পষ্ট করা হয়নি।
হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ইরানের প্রেসিডেন্টের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর থেকেই আলোচনা চলছে দেশটির হেলিকপ্টার পরিষেবা নিয়ে। রাশিয়ার কাছ থেকে ১৫টি হেলিকপ্টার কেনার একটি চুক্তি করেছে ইরান। সদ্য প্রয়াত ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির প্রশাসনের সময় এসব হেলিকপ্টার কেনার চুক্তি হয়েছিল।
রোববার (২৬ মে) ইরানি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির একজন কর্মকর্তার বরাতে এই খবর দিয়েছে বার্তাসংস্থা ইরনা। ইরানি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ত্রাণ ও উদ্ধার সংস্থার প্রধান বাবাক মাহমুদি বলেন, প্রেসিডেন্ট রাইসির সময় রাশিয়ার কাছ থেকে রাতে দেখতে পাবে এমন ১২টি উদ্ধার হেলিকপ্টার এবং তিনটি অগ্নিনির্বাপক হেলিকপ্টার কেনার চুক্তি করেছে ইরান।
তিনি জানান, এই চুক্তিটি গত এপ্রিলের শেষের দিকে রাশিয়ার বিশেষ হেলিকপ্টার উৎপাদনকারী কোম্পানির কর্মকর্তাদের সঙ্গে স্বাক্ষরিত হয়েছিল। বর্তমান ইরানি ক্যালেন্ডার বছরের শেষের দিকে (২০২৫ সালের ২০ মার্চ ইরানি বছর শেষ হবে) চারটি হেলিকপ্টার সরবরাহ করতে পারবে বলে জানিয়েছে রাশিয়া। গত ১৯ মে আজারবাইজান থেকে ফেরার পথে প্রেসিডেন্ট রাইসি ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী হেলিকপ্টারটি ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জোলফার পাহাড়ি এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
ঘন কুয়াশার কারণে দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টার টানা অভিযান শেষে ২০ মে তাদের হেলিকপ্টারটির খোঁজ পায় উদ্ধার দল। তবে এই হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ানসহ ৯ জন নিহত হন। ইরানি গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, রাইসি যে হেলিকপ্টারে সফর করছিলেন সেটি যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি। এর মডেল বেল ২১২। সত্তরের দশকে এই মডেলের কয়েকটি হেলিকপ্টার কিনেছিল ইরান।
তখন দেশটির ক্ষমতায় ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত মোহাম্মদ রেজা পাহলভি। তবে ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লবের পর সবকিছু বদলে যায়। বন্ধু থেকে ইরানের অন্যতম শত্রুতে পরিণত হয় আমেরিকা। দেশটির ওপর একের এক নিষেধাজ্ঞা দেয় মার্কিন প্রশাসন। এর ফলে বিমান মেরামতে আমেরিকার কাছ থেকে কোনো খুচরা যন্ত্রাংশ কিনতে পারেনি তেহরান।
 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন