নওগাঁর মহাদেবপুরে অনৈতিক কাজের অভিযোগে যুবককে গণপিটুনি

নওগাঁর মহাদেবপুরে অনৈতিক কাজের অভিযোগে যুবককে গণপিটুনি
MostPlay

নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলায় অনৈতিক কাজের অভিযোগে রুহুল আমিন সরকার (৩৫) নামে এক যুবককে গ্রামবাসী আটক করে গণপিটুনি দিয়েছে। তিনি উপজেলার হাতুড় ইউনিয়নের সোনাকুড়ি গ্রামের লুৎফর রহমান সরকারের ছেলে এবং ওই ইউনিয়নের আগামী নির্বাচনে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী।

এ নিয়ে এলাকায় দারুন চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার সারাদিন মহাদেবপুরে বিষয়টি টক অব দ্য টাউন ছিল। সোনাকুড়ি গ্রামের বাসিন্দা হাতুড় ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা মেম্বার রহিমা খাতুন জানান, তার প্রতিবেশী এক গৃহবধূর সঙ্গে দীর্ঘদিন থেকে অভিযুক্ত রুহুলের অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায়ই রুহুল ওই গৃহবধূর ঘরে রাত কাটায়। এনিয়ে গ্রামের লোকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা কয়েকবার রুহুলকে ওই গৃহবধূর বাড়ি থেকে আটক করে। কিন্তু প্রতিবারই রুহুল আর ওই গৃহবধূর ঘরে যাবেনা বলে আশ্বাস দিয়ে অভিভাবকেরা তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। তিন সপ্তাহ আগেও এধরনের ঘটনা ঘটে। কিছুদিন আগে এনিয়ে উপজেলা সদরেও বৈঠক হয়।

এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াই টায় রুহুল ওই গৃহবধূর মাটির বাড়ির দোতলা থেকে খোলা জানালা দিয়ে নিচে লাফিয়ে পড়লে গ্রামবাসী তাকে আটক করে বেদম প্রহার করে। জানতে পেরে তার পিতা সকালে তার বিচার করবেন এই আশ্বাস দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে যান। কিন্তু সারাদিন এর কোন শালিসের আয়োজন না করায় বিকেলে ওই গৃবধূর শ্বাশুড়ি ও দেবর একদল গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে মহাদেবপুর থানায় ফৌজদারী দন্ডবিধির ২৯০ ধারায় মামলা করতে যান। কিন্তু থানা পুলিশ মামলা নিতে অস্বীকার করেন।

শুক্রবার বিকেলে সরেজমিনে ওই গ্রামে গেলে গ্রামবাসী নারী-পুরুষ সমবেত হয়ে ঘটনার বর্ণনা দেন। ওই গৃহবধূর শ্বাশুড়ি ও দেবর অভিযোগ করেন যে, দীর্ঘদিন ধরে তাদের চোখের সামনে এ অনৈতিক কাজ চলছে। তারা প্রতিবাদ করলে উল্টো তাদেরকেই নানাভাবে শাসন করা হয়। জানতে চাইলে রুহুল আমিন জানান, তিনি আগামী নির্বাচনে হাতুড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এ কারণে তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা তাকে সমাজে হেয় করার জন্য তার বিরুদ্ধে অপবাদ রটাচ্ছে। ওই রাতে তিনি হাতুড় গ্রামের একটি বিয়ে বাড়ি থেকে ফিরে ওই গৃহবধূর বাড়ির পাশে অবস্থিত তাদের পুকুর থেকে কেউ মাছ চুরি করছে কিনা তা দেখতে গেলে প্রতিপক্ষরা তাকে আটক করে মারপিট করে। এ ব্যাপারে রুহুল বাদি হয়ে তাকে মারপিটের অভিযোগে ওই গ্রামের সেকেন্দার, রুবেল, আন্তাজ, সোহেল, এনামুল ও মানিকসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন বলে জানান। রুহুলের পিতা তার ছেলের অনৈতিক কাজের বিষয় অস্বীকার করে জানান, প্রতিবারই রুহুলকে ওই গৃহবধূর বাড়ির সামনে থেকে আটক করে অন্যায়ভাবে মারপিট করা হয়।

মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজম উদ্দিন মাহমুদ জানান, গ্রামবাসী রুহুলকে অনৈতিক কাজের সময় ঘরের ভিতরে আটক করলে ২৯০ ধারায় মামলা হতো। কিন্তু বাড়ির বাইরে আটক করায় তার বিরুদ্ধে মামলা নেয়া যায়নি। রুহুলের দেয়া অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password