রংপুরে ছাত্রীকে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাবে তোলপাড়

রংপুরে ছাত্রীকে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাবে তোলপাড়

রংপুরের বদরগঞ্জের কুতুবপুর অরুন্নেছা স্কুল এন্ড কলেজে কলেজের অষ্টম শ্রেনির এক ছাত্রীকে মোবাইলে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের ম্যাসেজিং করাসহ ইভটিজিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠলেও ছুটি নিয়ে গা ডাকা দিয়েছেন ওই শিক্ষক।


ভুক্তভোগি ওই শ্রেনির ছাত্রী জানান, বেশ কিছুদিন থেকে স্কুলের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সেলিম শাহ আমাকে রিলেশন করার জন্য প্রস্তাব দেয়। তখন আমি তাকে বলি আমার ফুফাত ভাইয়ের সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে। আমাকে বিরক্ত করবেন না।

তারপরেও ওই শিক্ষক আমার মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে আমাকে প্রতিদিনই শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল ম্যাসেজ দিতে থাকেন। আমি উত্তর না দিলে তিনি আমাকে পরীক্ষায় ফেল করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে উত্তর দিতে বাধ্য করায়। আমাকে ম্যাসেজ দিয়ে তিনি বিভিন্ন সময়ে তার বাসা ও বিভিন্ন স্পটে নিয়ে গিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দেয়। বিষয়টি নিয়ে আমি মানষিক ভাবে ভেঙ্গে পরি। এরই মধ্যে সোমবার রাতে আমার মানষিক পরিস্থিতি দেখে আমার বড় ভাবি আমার ফোনটি নিয়ে ম্যাসেজগুলো দেখেন। তখন আমি বিষয়টি খুলে বলি।

একজন শিক্ষক হয়ে তিনি আমাকে এভাবে অসামাজিক কাজের যে প্রস্তাব দিয়ে আমাকে যেভাবে ভয়ের মধ্যে রেখেছেন তাতে আমি দিশেহারা হয়ে পড়েছি। এ ঘটনায় আমি উপযুক্ত বিচার চাই।
ভুক্তভোগি ছাত্রীর ভাই হাসান জানান, বিষয়টি আমি আমার স্ত্রীর মাধ্যমে জানতে পেরে স্কুল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করি। তারা কোন উদ্যোগ না নেয়ায় আমি বিষয়টি ইউএনওকে জানাই। তিনি আমাকে থানায় অভিযোগ দিতে বলেন। মঙ্গলবার দুপুরে থানায় অভিযোগ দিলেও বুধবার বিকেল পর্যন্ত ওসি মামলা গ্রহন করেন নি। আমার বোন মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন। আমরা এ ঘটনার আইনগত পদক্ষেপ কামনা করছি।


সেলিম শাহের স্ত্রী জানান, ওই ছাত্রীকে এ ধরনের ম্যাসেজ দেয়া ঠিক হয় নি। শারীরিক অসুস্থ্যতার কারনে আমার স্বামী সাত দিনের ছুটি নিয়েছেন। ডাক্তার পরীক্ষা করে ওষুধ দিয়েছেন। আমার স্বামী বাড়িতেই আছেন।
এ ব্যপারে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আহমদ আলী শাহ জানান, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আগে এধরনের অভিযোগ উঠলেও সে ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় নি। আর এ বিষয়টি এখনও পরিবারের পক্ষ থেকে আমাকে জানানো হয় নি। তবে শুনেছি বিষয়টি নিয়ে একটি জিডি হয়েছে।


ছুটির বিষয়ে তিনি বলেন, আমার ছুটি দেয়ার এখতিয়ার নেই। সেলিম শাহ তিনদিনের চিকিৎসা ছুটির জন্য আবেদন করেছেন। সভাপতি আমাকে বলেছেন মোবাইল ফোনে আবেদন নিয়ে রাখেন, পরে আমি স্বাক্ষর করবো। ওইভাবেই সে স্কুলে আসছে না। এখানে আমার করার কিছুই নেই।


এ ব্যাপারে রংপুর পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার জানান, মঙ্গলবার রাতে বিষয়টি জানার পর আমি বদরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দিয়েছি মামলা নিয়ে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।


বদরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ হাবিবুর রহমান জানান, এসপি স্যারের নির্দেশে আমরা সেলিম শাহের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। তাকে পাওয়া যায় নি। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর ভাই বাদি হয়ে যে অভিযোগটি দায়ের করেছেন সেটি মামলা হয় না, সে কারণে তাকে এজহার পরিবর্তন করে দেয়ার কথা বলেছি।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password