বিকলাঙ্গ মা কুকুরের সামনে ৩ ছানাকে পিটিয়ে হত্যা, থানায় মামলা

বিকলাঙ্গ মা কুকুরের সামনে ৩ ছানাকে পিটিয়ে হত্যা, থানায় মামলা

চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা থানাপাড়ায় একটি বিকলাঙ্গ মা কুকুরের কোল থেকে গলায় দড়ি বেঁধে টেনে নিয়ে তিনটি দুগ্ধ ছানাকে জনসম্মুখে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শহর জুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ফেসবুক জুড়ে বইছে তীব্র সমালোচনার ঝর।

মঙ্গলবার বিকেলে ‘পিপুল ফর এ্যনিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন’ এর পক্ষ থেকে অভিযুক্ত রূপক মিয়কে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ সময় পাড়ার ৭ জন প্রত্যক্ষদর্শী থানায় গিয়ে এ হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গত ২২ জানুয়ারি শহরের থানাপাড়ার ছারু চেয়ারম্যানের ছেলে রূপক মিয়া তার কাজের লোক দিয়ে একটি বিকলাঙ্গ মা কুকুরের কোল থেকে তিনটি দুগ্ধ ছানাকে গলায় দড়ি বেঁধে টেনে সড়কের ধারে নিয়ে আসে। এরপর জনসম্মুখে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে একে একে তিনটি কুকুরছানাকেই হত্যা করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক থেকে জানা যায়, ঘটনার সময় পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা সুলতানুল আরেফিন তাইফু নামক এক শিক্ষার্থী কুকুর হত্যার একটি ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দেন।

ইত্তেফাকের নিজস্ব বানানরীতিতে তাইফু এর ফেসবুক পোস্ট হুবহু তুলে ধরা হলো, ‘আমার স্বচক্ষে দেখা হৃদয় বিদারক কাহিনী আমাদের পাড়ার রূপক মিয়া তার কর্মচারী দিয়ে একটি পা প্রতিবন্ধী কুকুরীর দুধের বাচ্চাগুলোকে মায়ের কোল থেকে কেড়ে নিয়ে গলাই দড়ি বেঁধে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে এসে কুকুরীর সামনেই তার বাচ্চাগুলো বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে হত্যা করে।এই পৈশাচিক দৃশ্য পাড়ার অনেকেই দেখেছেন। আরও মর্মাহত হয়েছি মা কুকুরের কান্না দেখে। পাড়ার অনেক শিশু এই ভয়াবহ দৃশ্য দেখে কান্নাকাটি শুরু করে । এতে শিশুদের উপর মানসিক খারাপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। আমরা এর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানাই।’

আর এই পোস্টেই কুকুর হত্যাকারীর বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করতে থাকেন অনেকেই। তারা কমেন্টে হত্যাকারীকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাতে থাকে।

কুকুরছানা হত্যার করার বিষয়টি স্বীকার করে রূপক মিয়া জানান, রাতে কুকুরটা ও তার ছানারা ঘেউ ঘেউ শব্দ করে। এতে বিরক্ত হয়ে কুকুর ছানা তিনটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছেন তিনি।

পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্থানীয়দের সাথে কথা বলেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিটন আলী, পশু সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুল্লাহিল কাফি ও থানার পুলিশ কর্মকর্তারা। এছাড়াও ‘পিপুল ফর এ্যনিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশেন’ যশোর জোনের কর্মকর্তারা আলমডাঙ্গায় অবস্থান করছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিটন আলী ইত্তেফাককে জানান, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কুকুর ছানা হত্যার সত্যতা পেয়েছি। এখন বিষয়টি আইনের গতিতে চলবে।

উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুল্লাহিল কাফি জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে থানায় মামলা নেওয়ার জন্য আমি একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছি।

এ বিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, থানায় একটি মামলা হয়েছে। এ ব্যাপারে আদালতে একটি প্রসিগেশন পাঠানো হবে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password