সংগ্রামী নেতা থেকে কালজয়ী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা

সংগ্রামী নেতা থেকে কালজয়ী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা
MostPlay

 বাংলাদেশের ইতিহাসের সব চেয়ে কালো রাত ১৯৭৫-এর ১৫ই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার দীর্ঘ ৬ বছর পর ১৯৮১ সালের ১৭ মে জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনার দেশে ফিরে আসার ঘটনাটি বাঙ্গালির ইতিহাসে এক ঐতিহাসিক ও যুগান্তকারী ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।

১৯৮১ সালের ১৭ই মে আজকের এই দিনটি বাঙালীর কাছে ‘শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস’ হিসেবে পরিচিত। জাতির পিতার হত্যার পর বাংলাদেশ যখন তার আদর্শচ্যুত হয়ে উল্টো পথে চলছিল, সেদিনের সেই বৃষ্টিস্নাত বিকেল থেকে শুরু হয়েছিল আদর্শহীন শাসনের বিরুদ্ধে এক নিরন্তর সংগ্রামের অভিযাত্রা। ২০২১ সালের ১৭ মে বঙ্গবন্ধু কন্যার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের চার দশক। ২০২১ এ বাংলাদেশে তাঁর নেতৃত্বেরও চার দশক। এই চার দশক ছিল সংগ্রামের, ছিল অর্জনের। শেখ হাসিনা সব হাড়িয়েও যখন দেশে ফিরে আসেন তখনো তিনি শুধু দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে গেছেন। দেশের মানুষের প্রতি যে চিন্তা ধারা ছিল তার বাবার সে তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করছে। সেই পরিপেক্ষিতে আজ পৃথিবীর বুকে  দেশকে ধার করিয়েছে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে। তবে আজকের এইখানে দেশকে আনতে শেখ হাসিনার কম বাধা ভিপত্তি পেরোতে হয়নি।   

স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের এই চার দশকে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ কে একদিকে যেমন উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল হিসেবে গঠন করেছে, তেমনে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের  নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব ও দিয়েছেন, আবার পালন করেছেন চার দফায় রাষ্ট্র পরিচালনার গুরুদায়িত্ব। মাত্র ৩৪ বছর বয়সে আওয়ামী লীগের এক সংকটময়কালে শেখ হাসিনা সভাপতি হিসেবে দলটির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি অতুলনীয় সাংগঠনিক দক্ষতায় জাতির পিতার এই সংগঠনকে প্রতিকুল অবস্থার মধ্যেও সুদৃঢ় ভিত্তির উপর শক্ত করে দাড় করান।

জাতির পিতার হত্যার ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে দেশী বিদেশী সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে বাংলাদেশের মানুষের বিপুল সমর্থন নিয়ে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করেন। বর্তমানে একটানা তৃতীয়বারের মতো রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে চলেছেন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা তার নিজের  সাত দশকের জীবনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন চার দশক  ধরে।

১৯৭৫ এর পরবর্তী অন্ধকার সময়ে সেদিন তিনি ফিরে  এসেছিলেন বলেই হয়তো বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলো। দেশের মানুষ জানতে পেরেছিল মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস। গণতন্ত্র ফিরে পেয়েছিল বাংলার আফামো জনতা। মানুষ তার অধিকার ফিরে পেয়েছিল। তিনিই বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী হেনরী কিসিঞ্জারের তলাবিহীন ঝুঁত্ষড়ির মতো ষড়যন্ত্রমূলক অপবাদ মিথ্যা প্রমাণ করে বাংলাদেশকে আজ উন্নয়নসহ সকল ক্ষেত্রে পৃথিবীর বুকে নেতৃত্বের পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছন।  

আর্থ-সামাজিক সকল ক্ষেত্রের উন্নতিতে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ বিশ্বে আজ এক অনন্য উদাহরণ। সমগ্র বিশ্বে গণতন্ত্রের মানসকন্যা থেকে শেখ হাসিনা আজ ‘উন্নয়ন কন্যা’য় ভূষিত। তাঁর মানবিকতা আর মমত্ববোধের জন্যে তিনি ‘মানবতার মা’ হিসেবেও অভিষিক্ত। তিনি এসেছিলেন বলে খাদ্য ঘাটতির দেশ বাংলাদশ আজ খাদ্য রপ্তানির দেশ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই জাতির পিতা সূচিত বাঙালির মুক্তি সংগ্রাম সফল পরিণতির দিকে যাচ্ছে। পঁচাত্তরে পিতার হত্যার পর দেশের স্বাধীনতার সূর্য যখন প্রায় অস্তমিত হতে যাচ্ছিল, বঙ্গবন্ধু কন্যার প্রত্যাবর্তন আর তাঁর নেতৃত্বের জন্যেই বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ রাষ্ট্র সৃষ্টির সার্থকতা প্রমাণিত হয়েছে। বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতি আজ পর্যন্ত যা কিছু অর্জন করেছে, তাঁর সবটুকুই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর কন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার কারণেই হয়েছে।

ফিরে আসার পর শেখ হাসিনা সংবিধান লঙ্ঘনকারী সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের লড়াই শুরু করেছিলেন। সেই লড়াইয়ে তিনিই নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁর দাবিতেই এদেশে জবাবদিহিতামূলক সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। জাতির পিতার হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে কুখ্যাত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ তিনিই বাতিল করে খুনিদের বিচার শুরু করেছিলেন। পৃথিবীর ইতিহাসে দ্বিতীয় কোনো রাষ্ট্রে এই ধরনের বর্বর কালো আইন জারীর ইতিহাস নেই । খুনিদের বিচার এখনও কার্যকর করা হচ্ছে।

জাতির পিতার হত্যার পর বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠী আমাদের মুক্তি সংগ্রামের মহান আদর্শগুলোকে দুর্বল ও প্রয়োজনে ভুলুন্ঠিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল। এই প্রক্রিয়ায় ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তে লেখা সংবিধানকে ক্ষত-বিক্ষত করা হলো। ওই সময়ে তারা ইতিহাস বিকৃতির মহোৎসবে মেতে উঠল। জাতির পিতার নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করা হল। সরকারি ও প্রশাসনিকভাবে ‘বঙ্গবন্ধু’ নামটি নিষিদ্ধ করা হলো। সেই অন্ধকার সময়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বাতি বয়ে বেড়িয়েছেন বাংলাদেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। তিনি মানুষকে জাগিয়ে তুলেছেন, ধীরে ধীরে শক্তি সঞ্চার করেছেন। তাঁর হাতে পিতার আদর্শের বাতি দেখে মানুষ প্রজ্জ্বলিত মশাল নিয়ে ছুটেছিল।

তিনি নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়েছেন আদর্শের চেতনা, তাদের দেখিয়েছেন নতুন স্বপ্ন -বাংলাদেশের স্বপ্ন। তাঁর এই সময়টি বাংলাদেশের ইতিহাসে ‘এনলাইটেনমেন্ট’ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হবে। তাঁর ছড়ানো আদর্শ আর তাঁর দেখানো স্বপ্নে মানুষ জেগে উঠেছিল। তিনিই তাদের বুঝিয়েছেন, এই রাষ্ট্রের মালিক জনগণ – এটি রিপাবলিক, কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর কুক্ষিগত সত্তা নয়। বঙ্গবন্ধু কন্যা কে  বাঙালি বারে বারে সমর্থন দিয়েছে, তাদের সবটুকু ভালবাসা তারা তাঁকে উজার করে দিয়েছে।

রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে শেখ হাসিনা ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তে লেখা বাংলাদেশের  সংবিধানকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন। পঁচাত্তরের পর অসাংবিধানিক সরকারের সময় এই পবিত্র সংবিধানকে ক্ষত-বিক্ষত করা হয়। তিনিই এই সংবিধান থেকে মুক্তি সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শবিরোধী সকল বিধান বাতিল করেছিলেন। তিনিই ধর্মনিরপেক্ষতাকে সংবিধানে আবার প্রতিষ্ঠিত করেছেন। উন্নয়নশীল বিশ্বে তিনিই একমাত্র রাষ্ট্রনায়ক যিনি সফলভাবে সংবিধানকে সকল অপশক্তি থেকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য বিশেষ সাংবিধানিক রক্ষাকবচ তৈরি করেছেন যার সুফল আজ গণতন্ত্রকামী প্রতিটি মানুষ পাচ্ছে। তিনিই  এদেশে গণহত্যাকারী, মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে যুক্ত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যবস্থা করেছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধকারীদের গাড়িতে যখন জাতীয় পতাকা উড়ছিল, তখন এদেশে তাদের বিচার হবে না – এই রকম একটা ধারণায় যখন মানুষ হতাশাগ্রস্ত ছিল, তিনিই তখন জাতির সামনে আশার আলো প্রজ্জ্বলিত করেছিলেন। জাতির পক্ষে ঘোষণা দিয়ে এই নরঘাতকদের তিনি বিচার করেছিলেন। বাঙালির ইতিহাসে জাতি হিসেবে এটি একটি মাইলফলক অর্জন ছিল। এর কৃতিত্ব প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনার।

রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি অনন্য সাফল্য দেখিয়েছেন। জাতির পিতার দূরদর্শী সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনা ঘোষিত রূপকল্প-২০৪১ (উন্নত দেশের মর্যাদা) অর্জনে তিনি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি শুধু দক্ষিণ এশিয়ায় নয়, গোটা উন্নয়নশীল বিশ্বের একমাত্র সরকার প্রধান যিনি জ্বালানী নিরাপত্তার বিষয়টিকে জাতীয় নিরাপত্তার সমার্থক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। শেখ হাসিনার সরকার গত এক দশকের বেশি সময় ধরে দেশে ব্যাপকভিত্তিক শিল্পায়ন, বিনিয়োগ, উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও নানামুখী পদক্ষেপের মাধ্যমে অব্যহতভাবে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, উচ্চ প্রবৃদ্ধি এবং অর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সকল ক্ষেত্রে নবদিগন্তের সূচনা করে বিস্ময়কর অগ্রগতি সাধন করেছেন। এতো অল্প সময়ে পৃথিবীর দ্বিতীয় কোন রাষ্ট্র এই ধরণের উন্নয়নের নজির স্থাপন করতে পারেনি।

দেশের টাকায় পদ্মা সেতুর মত এত বড় প্রকল্প হাতে নেওয়া এবং তা বাস্তবায়ণ করা শুধু শেখ হাসিনা বলেই সম্ভব হয়েছে। শুধু তা না রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বঙ্গবন্ধু টানেল, পায়রা বন্ধরের মত এত বর প্রকল্প আজ শেখ হাসিনার জন্যই বাস্তবায়ণ হয়েছে। আজ মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ । গ্রাম কিংবা শহর সব যায়গাতেই শেখ হাসিনা করেছে সুন্দর ও সহজ যোফাযোগ মাধ্যম।  

অশান্ত পার্বত্য চট্টগ্রামে ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তির মাধ্যমে একদিকে তিনি শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন, অন্যদিকে ঐ এলাকায় বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব টেকসই করার জন্য যথাযথ আইনি উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তিনি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর স্বতন্ত্র্য সত্তাকে সুরক্ষা দিয়েছেন। এই ঐতিহাসিক ও যুগান্তকারী চুক্তির জন্য তিনি অনায়াসেই সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক পুরষ্কার পেতে পারতেন। কিন্তু বাংলাদেশ বিরোধী আন্তর্জাতিক লবি’র কারণে তাঁকে সেটি দেয়া হয়নি। পরবর্তীকালে, জননেত্রীর সব অনন্য সাফল্যের জন্য তিনি অসংখ্য বিশ্বখ্যাত পুরষ্কার ও অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছেন।

তিনি আজ বাংলাদেশকে নিয়ে গেছেন এক অনন্য উচ্চতায়। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারীর ক্ষমতায়ন, শিশুমৃত্যুর হার, পরিবেশ, জ্বালানী নিরাপত্তা, শিল্পায়ন, বিনিয়োগ ইত্যাদিতে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে একটি অনুকরণীয় রাষ্ট্র। তাঁর নেতৃত্বেই বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত রাষ্ট্র থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উপনিত হয়েছে। দেশের এই যুগান্তকারী সাফল্যের কৃতিত্ব একমাত্র তাঁরই। মানুষের প্রতি তাঁর মমত্ববোধ আর ভালবাসার কারণে তিনি আজ বাংলাদেশকে রূপান্তরিত একটি কার্যকরী কল্যাণমুখী রাষ্ট্রে। এদেশের মানুষের জন্য তাঁর প্রবর্তিত ‘সোশ্যাল সেফটি নেট’ বা সামাজিক নিরাপত্তা বলয় গোটা উন্নয়নশীল বিশ্বে এক অনন্য ঘটনা।

শেখ হাসিনার দারিদ্র্য বিমোচন ও উন্নয়ন মডেল বিশ্বব্যাপী এমনভাবে প্রশংসিত হয়েছে যে, পশ্চিমা রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ সাম্প্রতিককালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে শেখ হাসিনার দারিদ্র বিমোচনের এই মডেল অনুসরণ করতে পরামর্শ দিয়েছেন।  বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথ ধরেই তিনি দেশের সমুদ্রসীমা রক্ষা করেছেন। দেশি-বিদেশি সকল বিশেষজ্ঞ ও গবেষকের হাইপোথিসিস’কে ভুল প্রমাণ করে তাঁর সুদক্ষ ও সাহসী নেতৃত্বের কারণে তিনি মিয়ানমার ও ভারতের দাবির বিরুদ্ধে বিশাল সমুদ্রসীমা জয় করেছেন। আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে পৃথিবীর খুব কম দেশই এত সফলভাবে সমুদ্রের উপর তাদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে। এই কৃতিত্ব কেবলই বঙ্গবন্ধু কন্যার।

 

স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বাংলাদেশে অবস্থিত গ্যাস সম্পদ সহ সকল প্রাকৃতিক সম্পদ বিদেশী শক্তি সমুহের কাছ থেকে অবমুক্ত করে আমাদেরকে দিয়ে গিয়েছিলেন, দেশের জ্বালানী নিরাপত্তা তথা সার্বিক উন্নয়নের জন্য সেই সম্পদ রক্ষা করেছিলেন তাঁরই কন্যা আমাদের প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের স্বার্থে তিনি এই সম্পদ রক্ষা করেছিলেন বলেই ২০০১ সালে এক প্রহসনমূলক নির্বাচনে তাঁকে হারানো হয়েছিল।

জননেত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ উদ্যোগ ও কার্যকরী ডিপ্লোমেসির কারণে বাংলাদেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে ভারতের সাথে স্থল-সীমান্ত সমস্যার সমাধান হয়েছে, অথচ পাকিস্তান সরকার ২৪ বছরে এবং বাংলাদেশে জিয়া-এরশাদ, খালেদা জিয়ার সরকারসহ আওয়ামী লীগের বাইরের সরকারগুলোর ২৮ বছরসহ মোট ৫২ বছরের শাসনামলে ভারতের সাথে স্থল সীমান্ত সমস্যার সমাধান করতে পারেনি।

শেখ হাসিনা দেশের তৃণমূল মানুষের স্বাস্থ্য সেবা সুনিশ্চিত করার জন্য স্বাস্থ্যখাতে কমিউনিটি ক্লিনিক ব্যবস্থা চালু সহ স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার জন্য যুগান্তকারী কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। তাঁর এই পদক্ষেপ উন্নয়নশীল বিশ্বের জন্য একটি অনুকরণীয় মডেল। রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তিনি করোনাভাইরাস উদ্ভুত সকল বিষয় ইস্পাত কঠিন মনোবল নিয়ে পারদর্শিতার সাথে মোকাবেলা করছেন। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় যা যা প্রয়োজন তিনি তাই করছেন। দেশের মানুষকে বাঁচাতে ও অর্থনীতিকে রক্ষা করতে তিনি লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার অনুদান ও প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছেন। পৃথিবীর খুব কম রাষ্ট্রনায়ক এই ধরণের যুগান্তকারী উদ্যোগ নিতে পেরেছেন।

বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সংগ্রাম আর উন্নয়নের এই অভিযাত্রায় তাঁকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অসংখ্য প্রতিবন্ধকতা ও ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হয়েছে। এমনকি তাঁকে বেশ কয়েকবার হত্যা চেষ্টাও হয়েছিল। পিতা-মাতা-ভাই সহ পরিবারের প্রায় সবাইকে হারিয়েও তিনি বাংলার মানুষের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য এখনও অদম্য গতিতে কাজ করে যাচ্ছেন। জাতির পিতার আরেক কন্যা শেখ রেহেনাও সব হারিয়ে ভালবাসা আর মমতা দিয়ে বড় বোনকে ছায়ার মতো আগলে রেখেছেন। এদেশের মানুষের কল্যাণে এবং জাতীয় স্বার্থে শেখ হাসিনা অবিচল।

তাঁকে হত্যার চেষ্টা হয়েছিল এবং সেই চেষ্টা এখনও অব্যাহত আছে, কারণ তাঁকে সরিয়ে দিতে পারলে বাংলাদেশকে থামান যাবে, বাংলাদেশের অগ্রগতিকে দমানো যাবে। ৭৫ এ একই কারণে জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়েছিলো। বাংলাদেশ বিরোধী গোষ্ঠীটি জানে, তাঁকে থামাতে পারলে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ গুলোকে আবার নির্বাসিত করা যাবে, আবার ভূলুণ্ঠিত করা যাবে।

 ‘৭৫ পরবর্তী বাংলাদেশের সকল অর্জন শেখ হাসিনার  কারণেই। তাঁর জন্যই বাংলাদেশ আজ বিশ্বসভায় মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে। যতদিন এই বাংলাদেশ বেঁচে থাকবে, জননেত্রীর সকল মহান কীর্তির জন্য রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে ততদিন তাঁর নামটিও থাকবে স্বর্ণাক্ষরে। তিনি হাজার বছর বেঁচে থাকবেন বাঙালির হৃদয়ে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password