এক রাতের মধ্যে কবরের সব লা’শ উধাও,গ্রামের বাসিন্দাসহ

এক রাতের মধ্যে কবরের সব লা’শ উধাও,গ্রামের বাসিন্দাসহ
MostPlay

পৃথিবীতে সাধারণ জায়গা কিছু কিছু কারণে অসাধারণ হয়ে ওঠে। মুহূর্তেই চলে আসে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। কানাডার নুনাভেন্টের কিভালিক অঞ্চলটিও তেমন। সেখানকার হ্রদের তীর ঘেঁষে অবস্থিত অঞ্জিকুনি নামের ছোট্ট একটি গ্রাম। আর দশটা সাধারণ গ্রামের মতোই ছিল এটি। তবে শোনা যায় এখানে গেলেই নাকি হারিয়ে যায় মানুষ।

ভাবনার অ’তলে পৌঁছে গেছেন নিশ্চয়! আর ভাবছেন হারিয়ে যায় কী’ভাবে মানুষ? চলুন এর কুল কিনারা খোঁজার চেষ্টাই করব এই লেখায়- প্রত্যন্ত এক অঞ্চলে অবস্থিত গ্রামটি পশু পালনের জন্য বেশ পরিচিত ছিল। সাধারণভাবেই এখানকার বাসিন্দারা জীবন যাপন করেন। বিপত্তি ঘটে ১৯৩০ সালের নভেম্বর মাসের এক পূর্ণিমা রাতে। জনশ্রুতি আছে জো লেবেল নামে একজন পশু পালক অঞ্জিকুনি গ্রামে গিয়েছিলেন। তবে অদ্ভুত বিষয় এই গ্রামে তিনি কোনো মানুষ কিংবা প্রা’ণী দেখেননি।

জো লেবেল এই গ্রামে আগেও অনেকবার গিয়েছিলেন। সে সময় তিনি গ্রামটিতে মানুষের দেখা পেয়েছিলেন। তার মতে প্রায় আড়াই হাজার মানুষের বাস ছিল গ্রামটিতে। পশু পালক জো লেবেল সবসময়ই অঞ্জিকুনির গ্রামবাসীদের কাছ থেকে উষ্ণ অভ্যর্থনা পেয়েছেন। তিনি ওই গ্রামে বসবাসকারী ইনুইট বা এস্কিমো উপজাতির জনগণের কাছে বেশ পরিচিত ছিলেন। তবে এবার তিনি আশেপাশে কাউকে দেখতে না পেয়ে বেশ অ’বাক বনে যান।

এর কারণ জানার জন্য গ্রামের প্রতিটি কুঁড়ে ঘর তিনি পরীক্ষা করে দেখেন। গ্রামবাসীদের বাড়িগুলোতে তাদের পোশাক, ব্যবহৃত জিনিসপত্রের সঙ্গে খাদ্য সমগ্রীও ছিল। এমনকি তাদের নিরাপত্তার জন্য রাখা রাইফেলগুলোও রাখা ছিল ঘরের ভেতর। নিজেদের নিরাপত্তার জন্যই তারা রাইফেলগুলো সঙ্গে রাখত। কোনো এস্কিমো তার ব’ন্দুক ছাড়া কোথাও যায় না।

শীতে তুষারপাত হয়েছিল। তবে রাস্তায় কোনো ব্যক্তির পায়ের ছাপও ছিল না। জো লেবেল হঠাৎ অঞ্জিকুনির গ্রামবাসীদের এমন নি’খোঁজ হওয়ার কারণে হতবাক হয়ে যান। তিনি দ্রুত কানাডিয়ান মাউন্টেন পু’লিশকে একটি বার্তা পাঠান। পু’লিশ গ্রামটিতে অনুসন্ধান চালাতে থাকেন। তন্নতন্ন করে খুঁজতে থাকেন হারিয়ে যাওয়া মানুষদের। এর সঙ্গে খুঁজতে থাকেন তাদের এভাবে উবে যাওয়ার কারণও।

খুব বেশি আগে গ্রামবাসী গ্রাম ত্যাগ না করলেও তাদের গন্তব্য স’ম্পর্কে অজানাই থেকে যায়। পু’লিশ ত’দন্তের জন্য পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের জনগণের নিকট জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। তদের মধ্যে একজন অঞ্জিকুনি গ্রামের আকাশে অদ্ভুত আলোকিত বস্তু দেখতে পাওয়ার কথা জানান। যেগুলো আকাশে ভেসেছিল। তিনি যখন গ্রামটিতে পৌঁছেছিলেন তখন স্থানটি জনশূন্য ছিল।

পু’লিশের ত’দন্তে অদ্ভুত সব তথ্য উঠে এসেছিল। গ্রামের সমাধিস্থলের প্রতিটি কবর খালি ছিল। অঞ্জিকুনি গ্রাম থেকে কিছুটা দূরে তারা সাতটি স্লেজ কুকুর দেখতে পান। কুকুরগুলো অনাহারে মা’রা যায় এবং বরফের নিচে ঢাকা পড়ে ছিল। বরফের ১২ ফুট নিচে কুকুরগুলোর দেহ পাওয়া গিয়েছিল। আশেপাশে খাবার থাকা সত্ত্বেও স্লেজ কুকুরগুলো অনাহারে মৃ’ত্যু আরেকটি গোলক-ধাঁধার জন্ম দিয়েছিল।

সব থেকে অদ্ভুত বিষয় ছিল গ্রামটির সমাধিস্থলের সব কবরের উপরটা ছিল খোলা। আশেপাশের আলামত দেখে নিশ্চিত হওয়া যায়, এটা কোনো প্রা’ণীর কাজ নয়। তবে সমাধিস্থলের র’হস্যময় ঘটনারও কোনো সঠিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে আরো ত’দন্ত করে জানা যায় জো লেবেল যাওয়ার দুই মাস আগেই গ্রামটির জনগণ নি’খোঁজ হয়েছিল।

তবে জো লেবেল গ্রামে পৌঁছানোর পরও সেখানে আ’গুন দেখতে পেয়েছিলেন। গ্রামবাসী দুই মাস পূর্বে চলে গেলে সেখানে কী’ভাবে জ্বলন্ত আ’গুন ছিল। সেটাও আরেক র’হস্য। গ্রামে গিয়ে জো রান্না করা খাবারও দেখেন। তবে সে গ্রামটিতে পৌঁছানোর দুই মাস আগেই যদি সেখানকার লোক চলে গিয়ে থাকে তবে এসব খাবার কার জন্য! এই গ্রামের মানুষেরা কী’ভাবে নি’খোঁজ হয়েছিল তার কোনো সঠিক তথ্য কখনোই জানা যায়নি। এমনকি কোনোদিন তারা আর ফিরেও আসেনি।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password