বার বার ভেসে আসছে রহস্যময় সিগন্যাল মহাকাশ থেকে

বার বার ভেসে আসছে রহস্যময় সিগন্যাল মহাকাশ থেকে
MostPlay

৫০ কোটি আলোক`বর্ষ দূরের গ্যালাক্সি থেকে ক্রমাগত রেডিও সংকেত আসছে পৃথিবীতে। ৪০৯ দিন ধরে প্রতি ১৬ দিন পরপর এ সংকেত পাঠানো হচ্ছে। মহাকাশ গবেষণায় ব্যবহৃত শক্তিশালী টেলিস্কোপে ধরা পড়েছে এই ঘটনা।

এই সংকেতগুলোর অদ্ভুত মিল শনাক্ত করেছে দ্য কানাডিয়ান হাইড্রোজেন ইনটেনসিটি ম্যাপিং এক্সপেরিমেন্ট বা ফাস্ট রেডিও বার্স্ট (এফআরবি) প্রজেক্ট। টেলিস্কোপ দিয়ে এটি শনাক্ত করেন কানাডা ও যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীরা। গত ১২ ফেব্রুয়ারি বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন। ‌

এফআরবির ঘটনা কিন্তু নতুন নয়। কোটি কোটি বছর আগে থেকে এই ঘটনা ঘটে আসছে। কিন্তু এই ফাস্ট রেডিও বার্স্ট সম্পর্কে মানুষ প্রথম জানতে পারে ২০০৭ সালে। এরপর থেকে এ পর্যন্ত কয়েক ডজনবার শোনা গেছে এমন সিগন্যাল। ২০১৯ সালের জুনে বিজ্ঞানীরা জানান, তারা একটি এফআরবি শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে, যার উৎপত্তিস্থল গ্যালাক্সি।

তবে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ২০১৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ৩০ অক্টোবরের মধ্যে এই নির্দিষ্ট ধারা লক্ষ্য করেছেন তারা। তবে এ সময়ে যে রেডিও তরঙ্গ ভেসে এসেছে তা একটানা চারদিন আসছে। তারপর ১২ দিনের বিরতি। আবার গোটা প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু হচ্ছে।

কানাডিয়ান হাইড্রোজেন ইন্টেনসিটি ম্যাপিং এক্সপেরিমেন্টের (চাইম) ফাস্ট রেডিও বার্স্ট (এফআরবি) প্রজেক্টে কর্মরত বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি লক্ষ্য করেন, পৃথিবী থেকে ৫০ কোটি আলোক`বর্ষ দূরে একটি নির্দিষ্ট জায়গা থেকে ক্রমাগত বার্স্ট (রেডিও সিগন্যালের ধারা) আসছে। সাধারণতভাবে, একক রেডিও বার্স্ট একবারই আসে। তা বারবার হয় না। কিন্তু, এফআরবির মূল চরিত্রই হলো উচ্চশক্তিসম্পন্ন ছোট আকারের রেডিও তরঙ্গের বার্স্ট একাধিকবার পাঠানো। আর যখন সেগুলো বারবার ফিরে আসে, তখন একটি ক্লাস্টার (তরঙ্গের একটি আস্ত ঝাঁক) এবং স্পোরাডিক (এলোমেলো ও প্রচণ্ড বিক্ষিপ্ত আকার) ধারণ করে থাকে।

এফআরবির উৎস কোথায় তার খোঁজ করতে বহু চেষ্টা চালিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত প্রত্যেক বার্স্ট একটি নতুন জায়গার সন্ধান দিচ্ছে। বিজ্ঞানীদের দাবি, প্রথম বার্স্টটি যেখান থেকে এসেছিল, সেই ‘এফআরবি ১২১১০২’- এর ঠিকানা ছিল একটি ছোট ছায়াপথ। তারা বলছেন, ওই ছায়াপথে নক্ষত্র ও ধাতব বস্তু রয়েছে। আবার, ‘এফআরবি ১৮০৯১৬’ -এর ঠিকানা আমাদের নিজস্ব ‘মিল্কিওয়ে’ গ্যালাক্সির মতো কোনো চক্রাকৃতি ছায়াপথ।

বিজ্ঞানীদের প্রাথমিক ধারণা, কোনো একটি ছায়াপথের বাইরে একটি নক্ষত্র বা কোনো বস্তু তার কক্ষপথে দ্রুতগতিতে চক্কর খাচ্ছে। যে কারণে এ ধরনের তরঙ্গ সেখান থেকে নিক্ষিপ্ত হচ্ছে।

পৃথিবীর বাইরে অন্য কোনো গ্রহে প্রাণী আছে কি না, তা নিয়ে আজও বিজ্ঞানীদের মধ্যে তুমুল বিতর্ক রয়েছে। বিশেষ করে এলিয়েনের কথা প্রায়ই শোনা যায়। যদিও এর সত্যতা এখনও পাওয়া যায়নি। তাহলে যে বার্তা আসছে তা কীসের, এটা কারা পাঠাচ্ছে-এ প্রশ্নের উত্তর বিজ্ঞানীরাই দেবেন। তবে এজন্য আমাদের কতদিন বা বছর অপেক্ষা করতে হবে তা কারও জানা নেই।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password