সমঝোতায় ফেরে সংসারের শান্তি

সমঝোতায় ফেরে সংসারের শান্তি

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের রসুলপুর ইউনিয়নের কামরুল হাসানের স্ত্রী শেফালী বেগম। কামরুল হাসান কর্মসূত্রে প্রবাসে থাকায় শেফালী বেগমের সাথে তুচ্ছ বিষয়াদী নিয়ে শ্বাশুড়ি-ননদির খুনসুটি, ভুল বোঝাবুঝি লেগেই থাকে। দেশে ফিরে কামরুল হাসান মা-বোনের পক্ষ নেন। ততদিনে পানি অনেকটাই গড়িয়ে যায়। শেফালী বেগম অভিমান করে বাবার বাড়ি চলে যান।

এতে কামরুলের রাগ আরো বেড়ে যায় এবং আশংকা তৈরি হয় সংসার ভাঙার। এ অবস্থায় নিরুপায় হয়ে এক পক্ষ সংসার টিকাতে উপজেলা নারী ও শিশু নির্যাতন সেলে লিখিত আবেদন করেন। সেখানে দুই পক্ষের মুখোমুখি আলোচনা-সুনানী শেষে কামরুল হাসান ও শেফালী বেগমের মনোমালিন্যতা, ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়।

অর্থাৎ সমূহ ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পায় এই দম্পতির সুখের সংসার। সব ক্ষেত্রে ভাঙন রোধ করা যায় না। তীক্ততা বেশী হলে বা দুই পক্ষের অনড় অবস্থানের কারণে সংসার অবধারিত ভাঙনের মুখে পড়ে। তবে নমনীয় হলে সমঝোতার মাধ্যমে অনেক সংসার ভাঙতে ভাঙতেও টিকে যায় এবং সুখ শান্তি ফিরে আসে।

উস্থি ইউনিয়নের তারেক মিয়া ও লাইলী বেগমের ১১ বছরের সংসার জীবনে কোন সন্তানাদী হয়নি। লাইলী বেগম একটি শিশুকে দত্তক আনেন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি হয়। ভুল বোঝাবুঝির জেরে লাইলী বেগম দত্তক সন্তান নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান। এ অবস্থায় সংসারটি ভাঙনের মুখে পড়ে। এক পক্ষ উপজেলা নারী ও শিশু নির্যাতন সেলে লিখিত আবেদন করেন। পরে দুই পক্ষের উপস্থিতিতে দীর্ঘ শুনানি হলেও এক পক্ষের অনড় অবস্থানের কারণে সমঝোতা হয়নি। পরে বিধি অনুযায়ী এই দম্পতির ছাড়াছাড়ি হয়। তবে এ প্রক্রিয়ায় সমঝোতার হার অনেক বেশী।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার দপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত ৭ মাসে নারী ও শিশু নির্যাতন সেলের মাধ্যমে ২১টি পারিবারিক দাম্পত্য আবেদন বা অভিযোগের শুনানি হয়। এর মধ্যে দুইটি অভিযোগের ক্ষেত্রে ছাড়াছাড়ি (সেপারেশন) ও দুইটি অভিযোগ আইনি প্রক্রিয়ায় অগ্রসর হয়। বাকি ১৭টি পারিবারিক অভিযোগ আলাপ আলোচনা ও শুনানি করে সমঝোতার মাধ্যমে সংসারের ভাঙন রোধ করা সম্ভব হয়।

প্রসঙ্গত, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আওতায় প্রতি উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তাকে পদাতিকার বলে সভাপতি করে একটি নারী ও শিশু নির্যাতন সেল রয়েছে। পারিবারিক দাম্পত্য বিষয়াদী নিয়ে যে কেউ এই সেলে লিখিত আবেদন করলে আলাপ আলোচনা ও শুনানি করে সমঝোতার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হয়।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা খালেদা আক্তার বলেন, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির কারণে অনেক সংসার ভাঙনের মুখে পড়ে। তবে ভাঙতে ভাঙতেও যখন আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সংসারটি জোড়া লাগাতে পারি তখন খুবই ভালো লাগে। কিন্তু খুবই কষ্ট হয় যখন শত চেষ্টা করেও দুই পক্ষের অনড় অবস্থানের কারণে কোনো সংসার জোড়া লাগানো সম্ভব না হয়।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password