সুদের টাকা দিতে না পারায় মা-মেয়ের গাছের সঙ্গে বেধেঁ রাখা হয় (ভিডিও)

সুদের টাকা দিতে না পারায় মা-মেয়ের গাছের সঙ্গে বেধেঁ রাখা হয় (ভিডিও)

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সুদের টাকা না পেয়ে কাঁঠাল গাছের সঙ্গে বেঁধে মা ও মেয়েকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।  উপজেলার ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের সিরাজপুর গ্রামে বৃহস্পতিবার সকালে এই ঘটনা ঘটে। 

নির্যাতিতরা হলেন- ওই গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদের স্ত্রী মমতাজ বেগম (৪০) ও তার মেয়ে ঝুমা আক্তার (২৫)। অভিযুক্তরা হলেন- একই গ্রামের আব্দুল গফুর, কুলসুম বেগম, শিল্পী, মুক্তা আক্তার, মনির হোসনে, রিপন, শহীদ ও নয়ন সিকদার।

এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, সিরাজপুর এলাকার আব্দুল গফুর মিয়ার স্ত্রী কুলসুম বেগমের কাছ থেকে মমতাজ বেগম দুই মাস আগে ১৭ হাজার টাকা ঋণ নেন। গত দুই মাসের মধ্যে মমতাজ বেগম ঋণের সুদের টাকা দিতে না পারায় কুলসুম বেগম একাধিবার তাগাদা দেন। মমতাজ বেগম আগামী ৩ মার্চের মধ্যে সুদের টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা মানতে নারাজ পাওনাদাররা। পরে পাওনাদার আব্দুল গফুর ও তার স্ত্রী কুলসুম বেগমসহ ৭-৮ জন ব্যক্তি বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে মমতাজ বেগমের বাড়িতে এসে সুদের টাকা চান।

এসময় টাকা না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে মমতাজ বেগমকে বকাঝকা শুরু করেন। এক পর্যায়ে গফুর মিয়া ও কুলসুম বেগম রশি দিয়ে কাঁঠাল গাছের সঙ্গে মমতাজ বেগম ও মেয়ে ঝুমা আক্তাকে বেঁধে ফেলেন। পরে আব্দুল গফুর, কুলসুম বেগম, শিল্পী, মুক্তা অন্যরা তাদের জুতা দিয়ে মারধর শুরু করেন। একই সঙ্গে নির্যাতনের দৃশ্য মোবাইলে ভিডিওধারণ করেন। টাকা না দিলে সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। খবর পেয়ে গ্রামবাসী এগিয়ে এসে তাদের মারধর করা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করেন এবং স্থানীয় ইউপি সদস্য ইব্রাহিমকে খবর পাঠান।

দুপুরের দিকে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম ঘটনাস্থলে গিয়ে বেঁধে রাখা দুই নারীকে মুক্ত করেন ও তাদের থানায় গিয়ে আইনি সহায়তা নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে চলে যান। পরে সন্ধ্যায় নির্যাতিত মমতাজ বেগম বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানায় আব্দুল গফুর, কুলসুম বেগম, শিল্পী, মুক্তা আক্তার, মনির হোসনে, রিপন,শহীদ, নয়ন সিকদারের নামে অভিযোগ দায়ের করেন।

মমতাজ বেগম বলেন, কয়েক মাস আগে এক প্রতারক চক্রের কবলে পড়ে গ্রামের একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে সুদে ঋণ নেই। পরে প্রতারক চক্র আমার কাজটি না করেই সব টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায়। এরপর স্থানীয় গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে আগামী ৩ মার্চ সুদের টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও আসামিরা সকালে এসে আমাকে ও আমার মেয়েকে ঘর থেকে বের করে একটি কাঁঠাল গাছে বেঁধে জুতা দিয়ে মারধরসহ অমানবিক নির্যাতন করে। এসময় তাদের মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। বিষয়টি এলাকাবাসী ইউপি সদস্য ইব্রাহিমকে জানালে তিনি দুপুরে এসে আমাদের উদ্ধার করেন।

ইউপি সদস্য ইব্রাহিম জানান, খবর পেয়ে বেঁধে রাখা মা ও মেয়েকে উদ্ধার করে থানায় গিয়ে মামলা করার পরামর্শ দেই।

কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, পাওনা টাকার ঘটনায় কালিয়াকৈর থানায় একটা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password