চরফ্যাশন উপ‌জেলার চর কুকরি মুকরিতে ভোলা জেলায় দ্বিতীয় বিদ্যুৎ লাইন সাবমেরিন কেবল স্থাপন

চরফ্যাশন উপ‌জেলার চর কুকরি মুকরিতে ভোলা জেলায় দ্বিতীয় বিদ্যুৎ লাইন সাবমেরিন কেবল স্থাপন

বঙ্গোপসাগরের উপকূলে চারেদিকে ঘন বন জঙ্গলে ঘেরা একটি দর্শনীয় স্থান ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপ‌জেলার দুর্গম চর কুকরী মুকরী। এলাকাটি অফগ্রিড অঞ্চলে পড়েছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা সম্ভাবনাময় পর্যটন এলাকা এটি। এখানে বসবাসকারী চরাঞ্চলের জনসাধারণ এবং পর্যটন বিকাশের জন্য বিদ্যুতের চাহিদার কথা মাথা রেখে সম্প্রতি এক অসাধ্য সাধন হয়েছে। বিদ্যুতের আলো এখানেও পৌঁছে গেছে।

বুড়া‌গৌড়াঙ্গ নদী‌র তল‌দেশ দি‌য়ে ৪ কি‌লো‌মিটার সাব‌মে‌রিন ক্যাবল স্থাপন ও এক‌টি ১০ এম‌ভিএ উপ‌কেন্দ্র চালুর মাধ্য‌মে এই চরে বিদ্যুতায়ন করা হ‌য়ে‌ছে। ওই অঞ্চলে ভোলা জেলাসহ পটুয়াখা‌লি জেলার অফগ্রীড চরাঞ্চল/দ্বীপাঞ্চলে বসবাসকা‌রি জনসাধারণকে বিদ্যুৎ সু‌বিধা প্রদা‌নের জন্য কাজ ক‌রে যা‌চ্ছে ভোলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। অফগ্রিড অঞ্চলে বিদ্যুতায়নের জন্য ভোলা জেলায় এটি ২য় সাবমেরিন ক্যাবল লাইন যা চরমুজিব এর পর চালু করা হয়েছে।

গত ১৭/৭/২১ ইং চরফ্যশন উপজেলার দ:আইচা সাবজোনাল অফিসের আওতায় চরমানিকা এলাকায় নবনির্মিত ১০/১৪ এমভিএ ইনডোর টাইপ ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্র পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়। প্রাথমিকভাবে দ:আইচা ও মানিকা এলাকায় ২টি ফিডারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। পরবর্তীতে দ: আইচা সাবজোনাল অফিসের আওতাধীন সকল এলাকায় ৫টি ফিডারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। উক্ত উপকেন্দ্র অত্র এলাকায় মানসম্মত বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করবে। উপকেন্দ্র বিদ্যুতায়নকালে অত্র পবিসের জেনারেল ম্যানেজার, বাপবিবো কর্মকর্তা, পবিস কর্মকর্তা, এনার্জিপ্যাক লিঃ এর প্রতিনিধি গন উপস্থিত ছিলেন।

অনেক আগে থেকেই অঞ্চল কে ঘিরে পর্যটন শিল্পের এক বিপুল সম্ভাবনা ! আর এই সম্ভাবনাকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চরফ্যাশন উপজেলার মাননীয় সদস্য জনাব আলহাজ্ব আব্দুল আল ইসলাম জ্যাকব এমপি মহোদয় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। কারণ এই দ্বীপ বঙ্গোপসাগরের বুকে এক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। এখানে রয়েছে বিভিন্ন রকমের ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট, নানা রকমের বন্যপ্রাণী অভায়ারণ্য, বিচিত্র প্রজাতির পশুপাখি ও কয়েকটি সমুদ্র সৈকত। এ সবকিছুকে কেন্দ্র করে এখানে গড়ে উঠেছে নানা ধরনের পর্যটন কেন্দ্র রিসোর্ট বিনোদন কেন্দ্র সহ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য জন্য এবং বিনোদন শিল্প কে কাজে লাগিয়ে গড়ে ওঠা সর্ব আধুনিক ইকোপার্ক। যা 2018 সালে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। যার কাজ উত্তম গতিতে প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় এগিয়ে চলছে। শুধু পর্যটন শিল্পের জন্যই নয় এ দীপ বাংলাদেশের মৎস্য শিল্পে এক বড় অবদান রেখে চলেছে।

এদেশের জেলে সমাজের এক বিরাট অংশ এই দ্বীপে বসবাস করে। যারা বঙ্গোপসাগরে প্রতিনিয়ত মাছ আহরণ করে দেশের বাজারে মৎস্য চাহিদার যোগান দিচ্ছে এবং সেই মৎস্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ অর্থনীতিতে মৎস্য খাতে ব্যাপক সাফল্য অর্জিত হচ্ছে। এসব মৎস্য কেন্দ্রকে ঘিরে গড়ে উঠেছে নানা রকমের মৎস্য প্রক্রিয়াধীন কারখানা। যেখানে বরফ কল ককশিট সহ নানা ধরনের কলকারখানা এগুলোর জন্য প্রচুর পরিমাণ বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। যা এতদিন জেনারেটর বা নানা ধরনের সৌরশক্তি থেকে আসত কিন্তু তারপরেও এসব কার্যপ্রক্রিয়া বিভিন্ন সময় ব্যাহত হত শুধুমাত্র বিদ্যুতের জন্য। এ অঞ্চলের মানুষের অনেকদিনের দাবি ছিল এই অঞ্চলকে অফ গ্রিট থেকে অন গ্রিড অঞ্চলে রূপান্তরিত করার। তারই ধারাবাহিকতায় দেশনেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টিতে আজ সেই প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রত্যেক ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেয়ার যে প্রকল্প সরকার হাতে নিয়েছে।

তা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আরো একধাপ এগিয়ে গেল বিডি টাইপ ডটকম কে স্থানীয়রা জানিয়েছেন যে তারা খুবই আনন্দিত এবং উচ্ছ্বাসিত যে অনেক আকাঙ্ক্ষা এবং অনেক চড়াই-উতরাই পরে তাদের সবার ঘরে ঘরে আজ বিদ্যুৎ এবং তাদের এই উপকূলীয় জনপদ নিয়ে তারা খুবই আশাবাদী একদিন এই জনপদ হয়ে উঠবে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে পরিচয় দেওয়ার এক অন্যতম স্থান। অঞ্চলটিতে পর্যটন শিল্পকে ঘিরে বর্তমানে সরকারের এবং ব্যক্তিগত অনেকগুলো প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে আশা করা যাচ্ছে। শীঘ্রই দ্বীপটিতে সড়কপথে যাতায়াত করতে পারবেন পর্যটকরা।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password