শততম ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে উড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ

শততম ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে উড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ
MostPlay

নিজেদের শততম টি-টুয়েন্টি ম্যাচে জিম্বাবুয়ের দেওয়া মাঝারি টার্গেট তাড়া করে ৮ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছাল টাইগাররা। দুই ওপেনার সৌম্য সরকার আর মোহাম্মদ নাঈম শেখের ফিফটিতে ঐতিহাসিক এই ম্যাচে ১৮ ওভার ৫ বলে মাত্র দুই উইকেট হারিয়ে ১৫৬ রান করে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখলো টাইগাররা।

মূলত টাইগারদের ওপেনিং জুটির কাছেই হেরে গেছে আফ্রিকানরা। সৌম্য আর নাঈম মিলে ১৩.১ ওভারে এনে দেন ১০২ রান। এনগারাভার ওভারে প্রথম ডেলিভারিটি ডিপ মিডউইকেটে ঠেলে দিয়ে ৪৫ বলে ফিফটি (৪ বাউন্ডারি আর ২ছক্কায়) পূরণ করেন সৌম্য, কিন্তু ওই বলে দুই নিতে গিয়ে হন রানআউট। রেগিস চাকাভা বল পেয়ে দারুণ বুদ্ধিমত্তায় পায়ের নিচ দিয়ে স্ট্যাম্প ভাঙেন। সাজঘরে ফেরার আগে ৫ম বাংলাদেশি হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে তিনি করলেন ১ হাজার রান। এটি বাংলাদেশের টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটে সেরা জুটিও। এর আগে টি-২০তে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটি ছিল ৯২। গত বছর ঢাকায় এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই ওই জুটি গড়েছিলেন তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। সৌম্যের পর ফিফটি পান নাইমও। ৩ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে আসেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে রানআউটের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন তিনিও। তার সংগ্রহ ১৫ রান। বাকি কাজটা সহজেই সেরেছেন নাইম আর নুরুল হাসান সোহান। নাইম ৫১ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ৬৩ রানে অপরাজিত থেকেই শেষ করেছেন। ৮ বল খেলে একটি করে চার-ছক্কায় ১৬ রান নিয়ে তার সঙ্গে বিজয়ীর বেশে মাঠ ছেড়েছেন সোহান।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারটা দেখেশুনে খেলেছে জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় ওভারে এসেই মারমুখী হয়ে উঠেছিল স্বাগতিকরা। মোস্তাফিজের করা দ্বিতীয় বলেই সেটি গ্যালারিতে আছড়ে ফেলেছেন জিম্বাবুয়ের ওপেনার মারুমানি। করোনার কারণে দর্শকশূণ্য গ্যালারি থাকার ফলে ক্রিকেটারদেরকেই সেই বল কুড়িয়ে আনতে হয়েছে। পরপর দুই বলে ডট দিয়ে ওভারের পঞ্চম বলে দুর্দান্ত এক স্লোয়ারে মারুমানিকে বোকা বানালেন মোস্তাফিজ। উড়িয়ে মারতে গিয়ে সৌম্যের তালুবন্দী হয়ে মারুমানী ফেরেন ব্যক্তিগত ৭ রানে। ১০ রানে জিম্বাবুয়ে প্রথম উইকেট হারানোর পর ক্রমেই বিপজ্জনক হয়ে উঠেন চাকাভা–মাধেভেরে জুটি। দুজনেই হাত খুলে খেলিতে থাকেন। ফিরতি ক্যাচ নিয়ে ওয়েসলি মাধেভেরেকে (২৩) ফিরিয়ে বিপজ্জনক হয়ে ওঠা জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। লং অফ দিয়ে ওড়িয়ে খেলতে চেয়েছিলেন মাধেভেরে। কিন্তু ব্যাটের ভেতরের দিকে লেগে ক্যাচ যায় বোলারের কাছে। লাফিয়ে ক্যাচ মুঠোয় জমিয়ে ৩৮ বল স্থায়ী ৬৪ রানের জুটি ভাঙেন বাংলাদেশের প্রথম ও শততম টি-২০ খেলা একমাত্র খেলোয়াড় সাকিব।

এরপর মেয়ার্সকে নিয়ে রানের চাকা বাড়াতে থাকেন চাকাভা। শরিফুল ইসলামের করা একাদশতম ওভারে এসে জোড়া ধাক্কা খায় জিম্বাবুয়ে। দারুণ খেলতে থাকা চাকাভা (২২ বলে ৫ বাউন্ডারি আর ২ ছক্কায় ৪৫) রানআউট হন উইকেটরক্ষক নুরুল ইসলাম সোহানের বুদ্ধিমত্তায়। শরিফুলের ওভারে চার বলের ব্যবধানে সিকান্দার রাজাও আউট হন। তিন বল খেলে রানের খাতা না খুলে সোহানকে পেছনে ক্যাচ দেন স্বাগতিক অধিনায়ক। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে জিম্বাবুয়ে। দলীয় ১১৯ রানে মেয়ার্স বিদায় নিলে বড় স্কোরের আশা নিভে যায় স্বাগতিকদের। জিম্বাবুয়ের মিডল ওর্ডার ও টেল এন্ডারদের দাড়াতেই দেননি সাইফুদ্দিন ও মোস্তাফিজ। শেষ পর্যন্ত নির্ধারীত ২০ ওভারের এক ওভার আগে অর্থাৎ ১৯ ওভারেই ১৫২ রান করে অলআউট হয়েছে জিম্বাবুয়ে। জিম্বাবুয়ের হয়ে সর্ব্বোচ্চ ২২ বলে ৪৩ রান করেছেন চাকাভা। এছাড়া মেয়ার্স করেছেন ৩৫ রান। বাংলাদেশের পক্ষে মোস্তাফিজুর রহমান ৩১ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করেন। এছাড়া উইকেট সাইফুদ্দিন ও শরিফুল ২টি করে শিকার করেন।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password