১ লাখ টাকার বেশি দামের গরুর চামড়া মাত্র ১০০ টাকা

১ লাখ টাকার বেশি দামের গরুর চামড়া মাত্র ১০০ টাকা
MostPlay

দেশে চলছে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ, আর তার মধ্য দিয়ে আজ বোধবার (২১জুলাই) সারা দেশে পালিত হলো পবিত্র ঈদুল আজহা।এবার ঈদুল আজহার কোরবানি দেওয়ার জন্য যে গরু ১ লাখ টাকার বেশি দামে যে গরু কেনা হয়েছিল কোরবানির পরে ওই গরুর চামড়া বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১০০ টাকায়। কুমিল্লার দাউদকান্দি ও মেঘনা উপজেলার উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা এই খবর জানিয়েছেন।

এইবার চামড়ার দাম এতটা কম হওয়ায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন বিভিন্ন এতিমখানার পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা। কারণ, এসব এতিমখানার বার্ষিক আয়ের অন্যতম উৎস এলাকাবাসীর দান করা কোরবানির পশুর চামড়া।মহামারি করোনার কারণে তারা সব ধরণের টাকা আসার উৎস থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তারা ভেবেছিল এবার চামড়া বিক্রি করে তা পুষিয়ে নিবে। কিন্তু চামড়ার দাম শোনে তাদের মাথায় হাত।

মেঘনা উপজেলার শামিম আহমেদ জানায়, এবার হাট থেকে ১ লাখ ৩৪ হাজার টাকা দিয়ে একটি গরু আনে তা আজ কোরবানি দেওয়ার পর এক চামড়া ব্যাবসায়ি সে গরুর চামড়ার মূল্য বলে মাত্র ১১০ টাকা। পরে তিনি জানায় চামড়া ১১০ টাকায় না বিক্রি না করে ফেলে দিব তাও ভাল।

মেঘনা এক মাদ্রাসা কমিটির চেয়ারম্যান বলে, আমরা সারাটি বছর এই দিনটির দিকে চেয়ে থাকি কিন্তু প্রতিদান হিসেবে কি পেলাম। সারা দিন কষ্ট করে চামড়া সংগ্রহ করি আবার এত দামে লবন কিনে তা মজুত করে আমরা কত বেচবো? আর মাদ্রাসাকে কি খরচ দিব?? 

অন্যদিকে দাউদকান্দি উপজেলার আদমপুর, সুন্দলপুর, পশ্চিম কাউদিয়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গ্রামগুলোর অনেকে কোরবানি দেওয়ার জন্য ১ লাখ বা এর বেশি দামে পশু কিনেছিলেন। তাঁরা সে পশুর চামড়া বিক্রি করেছেন ১০০ টাকায়। আদমপুর গ্রামের মতিন সৈকত বলেন, তাঁর কোরবানির পশুর চামড়াও এই দামে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন।

সুন্দলপুর গ্রামের ফরহাদ প্রধান, পশ্চিম কাউয়াদি গ্রামের মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, সময়মতো চামড়া বিক্রি করতে না পারলে সংরক্ষণের অভাবে তা নষ্ট হয়ে যাবে। তাই ক্রেতাদের সঙ্গে দর–কষাকষি করলেও কম দামেই বিক্রি করতে হয়।

গ্রামে গ্রামে ঘুরে কোরবানির পশুর চামড়া কেনেন মৌসুমি ব্যবসায়ী নুরু মিয়া। তাঁর বাড়ি সুন্দলপুর গ্রামে। তিনি তাঁর গ্রাম থেকে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা দামে পশুর চামড়া কিনেছেন। বাসরা গ্রামের আলী আহমেদ মিয়াজী ১ হাজার গরুর চামড়া কিনেছেন। সব কটির দাম গড়ে ১০০ থেকে ২৫০ টাকা।

এসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বলেন, গ্রামে গ্রামে ঘুরে একটি চামড়া ১০০ টাকায় কিনলেও সংরক্ষণের খরচসহ গড়ে দাম পড়ে ২০০ টাকা। ঢাকায় নিতে প্রতি চামড়ায় ৩৫ টাকা খরচ হয়। লাভের আশায় তাঁরা পশুর চামড়া কিনে গত দুই বছর লোকসান দিয়েছেন।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password