বর্ষার আগমনে ছাতা মেরামত কারিগরদের ব্যস্ততা বেড়েছে

বর্ষার আগমনে ছাতা মেরামত কারিগরদের ব্যস্ততা বেড়েছে

এইতো ক’দিন হলো শুরু হয়েছে বর্ষাকাল। আর বর্ষার মূল উপাদানই হচ্ছে বৃষ্টি। রোদ আর বৃষ্টির লুকোচুরি খেলা নিয়েই বর্ষার আগমনি বার্তা। এই সময়ে বৃষ্টি উপেক্ষা করে কর্মজীবী মানুষ ছাড়াও অন্যান্য মানুষদের প্রয়োজনে ঘরের বাহিরে যেতে অবশ্যই ছাতা অপরিহার্য। আর বর্ষা মৌসুম এলেই বেড়ে যায় ছাতার কদর। কদর বাড়ার অন্যতম কারণ হলো বৃষ্টির সময়টাতে মানুষের অকৃত্রিম বন্ধু হলো ছাতা।

এছাড়া সবার পক্ষে বিভিন্ন ব্যান্ডের ও বাহারী ডিজাইনের নতুন ছাতা কেনা সম্ভব হয়না। তাইতো বৃষ্টির দিন এলেই অনেকেই তাদের ব্যবহৃত পুরাতন ছাতা মেরামত করার জন্য ছুটে যায় ছাতা মেরামত কারিগরদের কাছে। ফলে বৃষ্টি এলেই সর্বত্রই ছাতা মেরামতের ধুম পড়ে যায়। বছরের অন্য সময়টাতে বসে থাকলেও এই সময়টাতে বেড়ে যায় ছাতা মেরামত কারিগরদের ব্যস্ততা। 

সরেজমিন গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা যায় গাজীপুর মহানগরীর জয়দেবপুর বাজারের পুরাতন মাছ বাজারের পশ্চিম পাশের গলিতে। এখানে রয়েছে ১৫ থেকে ২০ জন ছাতা তৈরী ও মেরামতের কারিগর। এরা অন্যের দোকানের সামনে নামমাত্র ভাড়ায় বসে কাজ করেন এবং কাজ শেষে ফিরে যান। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ ছাতা কারিগররা গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে ছাতা মেরামত করে থাকেন। এই ছাতা গ্রীষ্মেও যেমন দরকার তেমনি বর্ষাতেও দরকার। তবে মূলত বর্ষাকালেই ঘরে রাখা ছাতা মেরামত করতে নিয়ে আসেন ব্যবহারকারীরা।

মূলত বর্ষার সময়ে ছাতা হাতে বের হলেও রোদ উঠলেই ছাতা নেয়ার কথা আর মনে থাকেনা অনেকের। আবার বছরের বেশিরভাগ সময় ছাতা ব্যবহার না করার দরুন অনেক সময় ছাতা হারিয়েও ফেলেন কেউ কেউ। বর্ষা মৌসুম চলে গেলে আবার কিছুদিনের জন্য ছাতার কদর ফুরিয়ে যায়। অনেকটা সময়ের জন্য ঘরের কোথাও ঝুলিয়ে রাখা অথবা কোনেই পড়ে থাকে। প্রকৃতির নিয়মে যখন গ্রীষ্ম ফুরিয়ে বর্ষা আসে ঠিক তখনই খোঁজ নেওয়া হয় কোথায় আছে বৃষ্টির বন্ধু ছাতাটি।

সরেজমিন কথা হয় জয়দেবপুর বাজারে দীর্ঘ ৩০ বছর যাবৎ ছাতা মেরামত কারিগর মোঃ শহিদুল ইসলাম ও মোঃ আলমের সাথে। তারা বলেন, পৈত্রিক সূত্রেই এই পেশার সাথে জড়িয়েছেন। এখানকার অধিকাংশ কারিগরদের বাড়ি খুলনা, মাদারীপুর,ফরিদপুরসহ অন্য জেলায়। তাদের পিতার হাত ধরেই গাজীপুরের জয়দেবপুরে আসা। আর এখানে থেকেই করে যাচ্ছেন ছাতা মেরামত ছাড়াও তালা-চাবি, টর্চ লাইট মেরামতসহ অন্যান্য কাজ।

ছাতা কারিগর শহিদুল আরো জানান, আমাদের এই পেশাটা মূলত সিজন ভিত্তিক। পাশাপাশি অন্যান্য জিনিস মেরামতের কাজও করে থাকি। প্রতিদিনের রোজগারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, গড়ে প্রতিদিন ৩শ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকেন। এবার করোনার কারণে কাজ একটু কম। লোকজন বাইরে বের হতেই চায়না। তাই আমাদের আয়ও কমে গেছে। করোনা না থাকলে এই সময়ে আমাদের ভীষণ ব্যস্ত থাকতে হয়। তারপরও ধীরে ধীরে আমাদের ব্যস্ততা একটু হলেও বাড়ছে।

ছাতা মেরামত করতে আসা শিববাড়ি এলাকার মোঃ জামাল উদ্দিন বলেন, একটি ছাতা এক বছরও যাচ্ছেনা। তাই বর্ষা শুরু হওয়াতে পুরাতন ছাতাটি মেরামত করার পাশাপাশি আরেকটি নতুন ছাতা ক্রয় করার কথা ভাবছি।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password