স্বাস্থ্য ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশেপাশে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিষেধ

স্বাস্থ্য ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশেপাশে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিষেধ

শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের ১০০ মিটারের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় করা যাবে না। সম্প্রতি প্রকাশিত স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন নির্দেশিকাতে এ কথা বলা হয়েছে। নির্দেশিকার ৮.৫ উপ-ধারাতে বলা হয়েছে, ‘সকল ধরণের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের আশেপাশে ১০০ মিটারের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ের জন্য কোন ট্রেড লাইসেন্স প্রদান না করা।’

এছাড়া ৮.৬ উপধারাতে বলা হয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের আশেপাশে ব্যতিত অন্যান্য স্থানে জনসংখ্যার ঘনত্ব ও চাহিদা বিবেচনা করে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় কেন্দ্রের ট্রেড লাইসেন্স প্রদানের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্ধারিত হবে।

এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম, এমপি নির্দেশিকায় বলেন, তামাক বিপণন এবং ব্যবহারের কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে দেশে তামাকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলে আমি মনে করি। এক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের সুযোগ রয়েছে।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার জনস্বাস্থ্য, অর্থনীতি ও পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে এদেশের জনগণকে রক্ষার লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগসহ সরকারের সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ, বেসরকারী সংস্থা, মিডিয়া, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি’র সমন্বিত কার্যকর অংশগ্রহণ প্রয়োজন। নির্দেশিকাটি স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন সকল প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রয়োগযোগ্য হবে বলে তিনি জানান।

এদিকে নির্দেশিকায় বলা হয়েছে- একটি ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণকারী ব্যক্তি/ প্রতিষ্ঠান একটি জায়গায় ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে। একাধিক জায়গার/ দোকানের জন্য পৃথক ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে এবং কোন ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, খাবারের দোকান, মুদি দোকান ও রেস্তোরাঁতে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ের লাইসেন্স প্রদান না করা। হোল্ডিং নম্বর ব্যতীত কোন প্রকার তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় কেন্দ্রকে লাইসেন্স প্রদান না করা। (৮.৩ ও ৮.৪ উপধারা)

এছাড়া ৮.১০ উপধারাতে বলা হয়েছে, তামাকজাত দ্রব্য প্রস্তুত হয় এমন চুল্লি বা কারখানাকেও ট্রেড লাইসেন্সের আওতায় আনতে হবে এবং সকল ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসসূহের আশেপাশে ১০০ মিটারের মধ্যে কোন প্রকার চুল্লি বা কারখানাকে ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করা যাবে না।

উল্লেখ্য, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন বিভিন্ন লজিস্টিক সহায়তা প্রদান করে নির্দেশিকা প্রণয়নে বিশেষভাবে সহযোগিতা করেছে বলে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন নির্দেশিকা বইয়ের মুখবন্ধতে উল্লেখ করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের পানি সরবরাহ অণুবিভাগের অতিরিক্তি সচিব মুহম্মদ ইব্রাহিম। এই নির্দেশিকাটি বাংলাদেশে ধূমপান এবং তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার হ্রাস এবং নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন নির্দেশনায় এটিও বলা হয়েছে যে, যদি কেউ এ সকল নির্দেশনা ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রতিপালনে ব্যর্থ হয় তবে তাদের ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করা হবে। নির্দেশিকার আলোকে এবার শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের আশেপাশে তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয় বন্ধ হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা প্রকাশ করেছেন।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password