চালের দাম বাড়ছেই, পেঁয়াজের দামও কমছে না

চালের দাম বাড়ছেই, পেঁয়াজের দামও কমছে না
MostPlay

প্রতিদিনই কমবেশি চালের দাম বাড়ছে। মিল মালিকরা অজুহাত দেখাচ্ছেন, ধানের দাম বৃদ্ধির কারণে চালের দাম বাড়ছে। আর মিলে চালের দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়ছে পাইকারি ও খুচরা বাজারে। টিসিবির হিসাবেও দেখা যাচ্ছে, গত এক সপ্তাহে চালের দাম কেজিতে মানভেদে ৫ থেকে ৭ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এদিকে গত কয়েক দিন স্থিতিশীল থাকা পেঁয়াজের দাম আবার কিছুটা বাড়তে শুরু করেছে। গত দু’দিনে কেজিপ্রতি প্রায় ১০ টাকা বেড়েছে। তেলের দামও বেড়েছে। বাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

শুক্রবার রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরায় প্রতি কেজি মোটা গুটি, স্বর্ণা ও মোটা চাল ৪৬ থেকে ৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা দু’দিন আগেও ৪৪ থেকে ৪৬ টাকা ছিল। এক সপ্তাহ আগেও ৪০ থেকে ৪১ টাকায় এ চাল বিক্রি হয়েছে। এ হিসাবে মোটা চালের কেজিতে বেড়েছে ৭ টাকা। মাঝারি মানের বিআর-২৮ ও পাইজাম চাল ৪৮ থেকে ৫২ টাকা হয়েছে, যা এক দিন আগেও ৪৮ থেকে ৫০ টাকা ছিল। সরু চালের মধ্যে মিনিকেট খুচরায় ৫৮ থেকে ৬০ টাকা ও নাজিরশাইল মানভেদে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চালের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম বিডিটাইপকে বলেন, সম্প্রতি ৩৫ লাখ টন আউশ ধান উঠেছে। এর আগে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ অবস্থায় বাজারে ধান ও চালের ঘাটতি নেই। এখন দাম বৃদ্ধির যৌক্তিক কারণও নেই। তিনি বলেন, বাজারে চালের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি তদারকি করে ব্যবস্থা নিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসকদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। এর পরও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে মিল পর্যায়ে তদারকি অব্যাহত আছে। মন্ত্রণালয়ের টিম তদারকি করছে। অহেতুক চালের দাম বাড়ালে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।\হএদিকে জানতে চাইলে বাংলাদেশ অটো মেজর ও হাসকিং মিল মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদ বিডিটাইপকে বলেন, প্রতি মণ ধান এক হাজার ৩০০ টাকায় কিনে লোকসান দিয়ে চাল বিক্রি করা সম্ভব নয়। এই দামে ধান কিনে চালের কেজি ৫৬ টাকা পড়ে। তাহলে শুধু মিল মালিকদের দোষারোপ করে লাভ হবে না। ধানের বাজার স্বাভাবিক পর্যায়ে আনতে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

কারওয়ান বাজারের হাজি রাইস এজেন্সির চাল ব্যবসায়ী মো. মইনুদ্দিন মানিক বিডিটাইপকে বলেন, প্রতিদিনই মিলে চালের দাম বাড়ছে। গত সাত দিনে কেজিতে ৭ টাকা দাম বাড়িয়েছেন মিল মালিকরা। এতে বাজারে কম দামে বিক্রির সুযোগ নেই। তিনি বলেন, বাজারে তদারকি জোরদার করা হয়েছে। বাজার তদারকি অব্যাহত থাকুক। কিন্তু মিল পর্যায়ে অভিযান চালিয়ে ধান ও চালের মজুদ করে দাম বাড়ানোর বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা উচিত। দেশে পর্যাপ্ত ধান উৎপাদন হচ্ছে। এর পরও চালের দাম কেন বাড়ছে। মানিক বলেন, মিল থেকে আগে দুই হাজার ৪০০ টাকা দিয়ে প্রতি বস্তা মিনিকেট চাল এনেছেন। তখন কেজি পড়েছে ৪৮ টাকা। আর এখন মিলে চাল কিনতে কেজিতে ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা দিতে হচ্ছে। এই দর দিলে মিলের চালের অভাব হয় না। তাহলে পর্যাপ্ত চাল পাওয়া গেলে দাম কেন বাড়বে। এটি মিল পর্যায়ে তদারকি করে দেখা উচিত।

রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী, চালের দাম বেড়েছে। পেঁয়াজের দামও বাড়তি। দেশি পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৯০ টাকা ও আমদানি করা পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকায় রাজধানীর বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এক মাস আগেও এ পেঁয়াজ যথাক্রমে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা ও ৩০ থেকে ৩৫ টাকা ছিল।

গত দু’দিন আগেও রাজধানীর বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকা ও আমদানি পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৭০ টাকা ছিল। এ হিসাবে পেঁয়াজের কেজিতে ১০ টাকা দাম বেড়েছে। তবে বাজারে দেশি পেঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। এর পরও দাম বৃদ্ধির যৌক্তিক কারণ নেই বলে মনে করেন ক্রেতারা। এদিকে আমদানি পেঁয়াজের সরবরাহ কমে যাওয়ায় আড়ত ও মোকামে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। কারওয়ান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী মো. ইউনুস মিয়া বলেন, পাবনা ও ফরিদপুরের মোকামে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। এ কারণে দাম বাড়ছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password