শালিখার কৃষকরা করোনার ভীতি কাটিয়ে উঠেছে।

শালিখার কৃষকরা করোনার ভীতি কাটিয়ে উঠেছে।

মাগুরা জেলার  শালিখা উপজেলায় স্মরণকালের মহাদুর্যোগ ও সংকটেও গ্রামীণ অর্থনীতির প্রাণশক্তি কৃষিখাত এগিয়ে চলেছে পুরোদমে। করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউ কৃষি খাতে নুন্যতম প্রভাব ফেলতে পারেনি। এই খাতটি এখনো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। কর্মবীর কৃষকরা মাঠে মাঠে প্রচন্ড তাপদাহ উপেক্ষা করে কৃষিকাজ করছেন। গ্রামের কৃষকদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার তথ্য শুন্য বলে ধারনা করা হচ্ছে। 

মাগুরার শালিখা উপজেলার গ্রাম মহল্লায় কৃষক করোনায় আক্রান্ত হয়েছে এমন তথ্য স্বাস্থ্য কর্মীদের কাছে পাওয়া যায়নি। কঠোর পরিশ্রম ও রোদে পুড়ে কাজ করার কারণে কৃষকদের শরীরে করোনা ঢুকতে পারেনি বলে ধারনা করা হচ্ছে। 
এদিকে গ্রামাঞ্চলের লোকজন বিশেষ করে মাঠে মাঠে কর্মরত কৃষকরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছে এমন কোন তথ্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে নেই বলে  সাংবাদিকদের জানিয়েছেন শালিখা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ আলমঙ্গীর হোসেন।

তিনি বলেন, শালিখায় ১৩,৭০৬ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে৷ এই উপজেলায় কোন পতিত জমি নেই৷  সারাদেশেই এখন কৃষিতে বিরাট কর্মযজ্ঞ চলছে। মাঠে মাঠে ধান কাটার ভরা মৌসুম এখন। কঠোর রোদে কর্মজীবি কৃষকদের করোনা স্পর্শ করেনি। তিনি আরো বলেন এখন বোরো ধান কর্তন শুরু হয়েছে। মাঠে মাঠে পাট নিড়ানোর কাজও চলছে। এছাড়াও আদা ও হলুদসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদও চলছে। গম ও ভুট্রা কর্তন এবং গ্রীষ্মকালীন সবজি আবাদসহ এক ইঞ্চি জমি কোন সময় পড়ে থাকছে না। এসব জমি কৃষি কাজে সর্বোচ্চ ব্যবহার হচ্ছে।

করোনার কারণে শহর ও গ্রামের অনেক শিক্ষিত যুবক, ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ যাদের গ্রামে জমি আছে তারাও গ্রামে গিয়ে কৃষিকাজ করছেন বলে মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে খবর পাওয়া গেছে। এদিকে কৃষি বিশেষজ্ঞ ও অর্থনীতিবিদের মতে, কৃষি প্রধান বাংলাদেশে শতকরা ৭৫ ভাগ মানুষ সরাসরি কৃষি কাজের সাথে জড়িত রয়েছেন। কৃৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি), কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট ও মৃত্তিকা সম্পদ ইন্সটিটিউটসহ কৃষি সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের মোট আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ৮৫ লাখ ৭৭ হাজার ৫শ’৫৬ হেক্টর। আরো প্রায় লক্ষাধিক হেক্টর পতিত জমি আবাদের আওতায় এসেছে এই করোনার মধ্যে।

 অল্পজমিতে বেশি শস্য উৎপাদনের জন্য এগিয়ে যাচ্ছে কৃষি খাত৷ বাস্তব ভিত্তিক স্থায়ী পরিকল্পনা করে নিত্য নতুন শস্যজাত উদ্ভাবন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। যা আবহাওয়া ও জলবায়ু উপযোগী। ভাসমান কৃষি, জলমগ্ন কিঞ্চিৎ লবণাক্ত আবাদী জমি ও বৈচিত্রপূর্ণ ফসলের আবাদ এবং কৃষির উন্নয়নে গবেষণা কার্যক্রম জোরদারকরণ, গুণগতমান সম্পন্ন বীজ উৎপাদন  সরবরাহের লক্ষ্যে বহুমুখী কার্যক্রম চলছে। প্রভাষক মোঃ মনিরুজ্জামান জানান, করোনা পরিস্থিতিতে একমাত্র কৃষি খাতই সাচ্ছন্দ্যে কর্মকান্ড চলছে। এই মহামারীর মধ্যে কৃষিই বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করে চলেছে ৷

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password