ঢাকায় বাস লঞ্চ টার্মিনালে মানুষের উপচেপড়া ভিড়

ঢাকায় বাস লঞ্চ টার্মিনালে মানুষের উপচেপড়া ভিড়

করোনার সংক্রমণ রোধে ১৮ দফা নির্দেশনার পর সোমবার থেকে সাতদিন দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। এ খবরে মানুষের মধ্যে রাজধানী ছাড়ার হিড়িক পড়েছে। এজন্য সব টার্মিনালে দেখা গেছে মানুষের উপচেপড়া ভিড়।

রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায়, রাজধানী ঢাকা ছাড়তে হাতে ও কাঁধে ব্যাগ নিয়ে ফুটপাতে হাঁটছেন নানা পেশার মানুষ। তাদের লক্ষ্য যেকোনো টার্মিনাল। লকডাউনের সময় কর্মহীন সময় কাটাতেই গ্রামের দিকে ছুটছেন তারা। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষরা ঢাকা ছাড়ছেন।

ঢাকা ছাড়তে ফুটপাতে হাঁটা হাসান মাহমুদ বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাবের শুরুর দিকে বেসরকারি চাকরিটি হারিয়ে ফেলি। করোনার প্রকোপ কমলে ঢাকায় এসে হাড়ি-পাতিলের ব্যবসা শুরু করেছিলাম। এখন সাতদিনের লকডাউন আসছে। ঢাকায় বেকার বসে থাকতে হবে। আর লকডাউন যেহেতু বাড়তে পারে তাই বাড়ি চলে যাচ্ছি। ঢাকায় টাকা আয় করতে না পারলে নিজেরও খরচ চালাব কেমনে?

দিনমজুর ও ভ্যানচালক ইদ্রিস মিয়া বলেন, করোনার এ সময়ে কাজ পাওয়া মুশকিল। লকডাউনের সময় প্রায় সবকিছু বন্ধ থাকবে। এতে আমাদের আয়-রুজি হবে না। এজন্য গ্রামের বাড়ির দিকে চলছি।নির্মাণ শ্রমিক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মাসে ১০ দিন নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতে পারি। কিন্তু এখন সাতদিনের লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।

করোনা না কমলে লকডাউনের সময় আরো বাড়বে। এজন্য বেকার বসে থাকার চেয়ে বাড়িতে চলে যাচ্ছি। গাবতলী, সায়েদাবাদ ও মহাখালী বাস টার্মিনালে দেখা যায়, হাতে ব্যাগ, কোলে বাচ্চা নিয়ে নারী-পুরুষরা টার্মিনালগুলো ভিড় জমিয়েছেন। কিছু কিছু মানুষ মুখে মাস্ক ব্যবহার করলেও অনেকে স্বাস্থ্যবিধি ভালোভাবে মানছেন না।রিপন মিয়া বলেন, লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ হয়ে যাবে। এজন্য গ্রামের বাড়ি আগেই চলে যাচ্ছি। টিকিট পেতে অনেক সমস্যা হচ্ছে। দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে বাসের টিকিট মিলছে। তবে টিকিটের সংকট রয়েছে। গতকাল রাতে গাবতলী টার্মিনালে টিকিটের জন্য এসে সারি দেখে ফিরে গিয়েছি।

বাস টার্মিনালের মতো লঞ্চ টার্মিনালেও মানুষের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। শনিবার সন্ধ্যার পর সদরঘাটে ভিড় হতে শুরু করে। এরই মধ্যে বিভিন্ন ছোট যানবাহন ও মোটরসাইকেলে শিমুলিয়া ঘাটের উদ্দেশ্যে যাচ্ছে অনেকে। লৌহজং ও শ্রীনগরের কয়েকটি স্পট থেকে ট্রলারে করে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে পদ্মানদী পার হচ্ছে যাত্রীরা।রাহাত আলী বলেন, লকডাউনে যানবাহন বন্ধ হলে বাড়ি ফিরতে পারব না। তাই বাড়ির উদ্দেশ্যে নৌপথ বেছে নিয়েছি। বাসের টিকিট পেতে সমস্যা হচ্ছে। ট্রেনে টিকিট না পেলেও একটা ব্যবস্থা করা যাবে। 

 

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password