সাঁওতালি ভাষায় ‘বাহা’ অর্থ ফুল। তাদের ধর্মীয় ও সামাজিক রীতি অনুযায়ী বাহা উৎসব না হলে সাঁওতাল মেয়েরা খোঁপায় ফুল গুঁজতে পারেন না। তাঁরা বিয়ে করতেও পারেন না। বাহা বা ফুল নিয়ে তাঁদের এই আয়োজন।
রাজশাহীর তানোরে সাঁওতাল সম্প্রদায়ের ‘বাহা উৎসব’ উদযাপন উপলক্ষে সোমবার (০৭ এপ্রিল) সকাল ৯ টা থেকে সারাদিন ব্যাপি তানোর উপজেলার কচুয়া কাজীপাড়া গ্রামে সাঁওতাল সংস্কৃতির অংশ হিসেবে পা ধোয়ানোর মাধ্যমে অতিথিদের বরণ করে নেয়া হয় ও অনুষ্ঠান শুরু হয়।
রীতি অনুযায়ী নাইকির বাড়ীতে নাই সাপড়াও ও নাইকি দারাম অনুষ্ঠিত হয়। পরে জাহের থানে পূজা ও প্রসাদ বিতরণ করা হয়। পরে মান্ডি থানে পূজা প্রসাদ বিতরণ করা হয়। পুজা পর্বের শেষে গ্রামের প্রতিটি বাড়ীতে সাগুন ঠিলি আসেন বাহা বিতরণ ও গ্রহণ করা হয়। বিরতির পরে দ্বিতীয় অধিবেশনে ‘বাহা উৎসব’ নিয়ে আলোচনা এবং সাঁওতাল সম্প্রদায়ের ১০ টি গান ও নৃত্য পরিবেশ করা হয়।
এটি ইউনেস্কোর সহযোগিতায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান 'বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর'-এর উদ্যোগে "'Implementing Community-based Heritage Festivals (ICH) in eight administrative divisions of Bangladesh" শীর্ষক প্রকল্পের অংশ হিসেবে ব্রতী সমাজ কল্যাণ সংস্থা কতৃক "আনন্দ-বৈভব: উৎসবের বাংলাদেশ” শিরোনামে ২ (দুই) বছর মেয়াদী কর্মসূচী পরিচালিত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রথিতযশা নৃত্যশিল্পী ও গবেষক, সাধনার শৈল্পিক পরিচালক লুবনা মরিয়ম এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক নাফরিজা শ্যামা।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভগন হাঁসদা, সমাজসেবক ও স্যাঁন্তালী লেখক, তানোর; কামেল মার্জী, প্রধান শিক্ষক, মুন্ডুমালা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় ও সভাপতি, তানোর থানা আদিবাসী পারগানা পরিষদ; মাশতুরা আমিনা, তানোর; মোঃ আফজ হোসেন, অফিসার ইনচার্জ, তানোর থানা; লিয়াকত সালমান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, তানোর; মোজাহার রহমান, সহকারী কীপার, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর; রাশেদুল আলম প্রদীপ, সহকারী কীপ বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর; এ কে এম মাজহা ইসলাম, অধ্যাপক, নৃতত্ত্ব বিজ্ঞান বিভাগ, শাহজালাল বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং নির্বাহী পরিচালক, ইনস্টিটি অব অ্যাপ্লায়েড এনথ্রোপলজি, মো: রফিকুল ইসলাম, ডেপুটি ডিরেক্টর, ব্রতী সমাজ কল্যাণ সংস্থা; উত্তর সূরি পরিচালক জনাব মোস্তফা জামানসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রায় ৩০০০ জন এবং সাংবাদিক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন