টাঙ্গাইলের অদ্ভুত সেই নারীর ‘বালু পড়া’ রহস্য নাকি প্রতারণা?

টাঙ্গাইলের অদ্ভুত সেই নারীর ‘বালু পড়া’ রহস্য নাকি প্রতারণা?

টাঙ্গাইলে ‘বালু পড়া’ দেয়া অদ্ভুত সেই নারীকে ঘিরে ব্যাপক রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। হঠাৎ উপস্থিতি, বালুতে সুগন্ধি আর মধুর সাধ নিয়ে যেমন সৃষ্টি হয়েছে চাঞ্চল্য, তেমনি উঠেছে ভয়ভীতি আর প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আদায়ের অভিযোগ।

গত শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের হালদার পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে আর ভুক্তভোগীদের দেয়া বক্তব্যে এ তথ্য নিশ্চিত হয়েছে সাংবাদিক।

হালদারপাড়ার ভুক্তভোগী দিনেশ হালদার (৮০) বলেন, ঢাকা থেকে আমার নাতনি বাড়িতে বেড়াতে আসে। শুক্রবার ওই নারীর হঠাৎ উপস্থিতি দেখে এবং বিশ্বাস করে তার গর্ভে আগত একের পর এক সন্তান নষ্ট হয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানানো হয়। এ কথা শুনে ওই নারী তাদের সন্তান আর নষ্ট হবে না বলে টাকা দাবি করেন। পরে বাধ্য হয়ে তারা ওই নারীকে ১১শ টাকা দিয়ে বিদায় দেন।

মিনতী হালদার (৫০) বলেন, গত শুক্রবার ছিল আমার ছেলে বিয়ে। সেই দিনই দুপুরে ওই নারীর আগমন হয় আমাদের গ্রামে। বিয়ের ব্যস্ততার মাঝে ওই নারী আমাকে ডেকে পাঠান ও একটি খাসি কিনে দেয়ার দাবি জানান। তা না হলে আমাদের অমঙ্গল হবে বলে হুমকি দেন। ভয়ে আমি ওই নারীকে পাঁচশ টাকা দিয়েছি।

গোপাল চন্দ্র হালদার (৩২) বলেন, শুক্রবার দুপুরে হঠাৎ ওই নারীর গ্রামে আসার খবর পেয়ে আমি যাই। গিয়ে শুনি সে বিভিন্ন মানুষরে হাতে বালু পড়া দিচ্ছে, সেই বালু থেকে সুগন্ধি ছড়ানোসহ খেতে মধুর মতো মিষ্টি লাগছে। শুনে আমিও সেই বালু খাই এবং কথার সত্যতা পাই। তবে সে কোনো কথা না বলে আমার কাছে টাকা চেয়েছে। এ কারণে আমি তাকে দেড়শ টাকা দিয়েছি। টাকা নিয়েও ওই নারী আমার হাতে থাকা রূপার বেসলেটটি চায়। প্রথমে না করলেও পরে আমি বেসলেটটা তাকে দিয়ে দিই।

তিনি আরও বলেন, পাগলের মতো অদ্ভুত ওই নারীকে আমি এলাকায় আগে কখনো দেখিনি। তবে কেউ কেউ দেখেছে বলে শুনছি। ওই নারীর পরণে কালো জামা, মাথায় জটা চুল ছেড়া কাপড় দিয়ে বাঁধা ও মুখে অদ্ভুত ধরনের মাস্ক পরা ছিল। এলাকার সবাই যার যার রোগ আর সমস্যা সমাধানের জন্য তার কাছ থেকে বালু পড়া খেয়ে টাকা দিয়েছে বলেও জানান তিনি।

গোবিন্দাসী ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ড ও খানুরবাড়ি গ্রামের ইউপি সদস্য সোহরাব আলী বলেন, ওই দিন আমি গ্রামের বাইরে ছিলাম। তবে বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি।

 এটি আসলে প্রতারণা নাকি অন্য কিছু সে ব্যাপারে পুলিশকে অবগত করা হবে।

এ প্রসঙ্গে ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল ওয়াহাব বলেন, এ ব্যাপারে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password