যতটা সম্ভব ঘরে থাকুন,অহেতুক ঘোরাঘুরি করবেন না

যতটা সম্ভব ঘরে থাকুন,অহেতুক ঘোরাঘুরি করবেন না

সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সবাইকে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে যতটা সম্ভব ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে তিনি বিদেশ থেকে আসার প্রবাসীদের এটি সর্বোচ্চ কঠোরভাবে মেনে চলার নির্দেশ দেন। 

শনিবার (২১ মার্চ) সকালে রাজধানীর সিটি কলেজ কেন্দ্রে ঢাকা-১০ আসনের উপ-নির্বাচনে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাহিরে ঘোরাঘুরি না করে যতদূর সম্ভব নিজের ঘরে থাকেন। আর নিজেকে, পরিবার ও সাধারণ মানুষকে সুরক্ষিত রাখেন।’‘সবাই ঘরে বসেই দোয়া করেন। এই রোগ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে, বিশ্ব স্থবির হয়ে পড়েছে, তা থেকে যেন মানব জাতি মুক্তি পায়, তার জন্য সবাই দোয়া করবেন।’

বিদেশ থাকা আসা প্রবাসীদের ঘোরাঘুরি না করার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আর বিদেশ থেকে যারা আসছেন তারা এখানে সেখানে ঘুরে বেড়াবেন না। কারণ আপনি তো নিজে সংক্রামিত হতে পারেন, নিজের পরিবারকে সংক্রামিত করবেন আবার আরও ১০জনের মাঝে ছড়াবেন। কাজেই অন্যর জীবনকে এভাবে বিপদগ্রস্ত করা মোটেই সমীচীন নয়। সবাই এ ব্যাপারে সচেতন হবেন এটাই চাই।’ 

তিনি বলেন, ‘বিদেশ থেকে যারা আসছেন, তারা অনেক সময় এর বাহক হয়ে থাকেন। যারা বিদেশ থেকে আসছেন তাদের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে। তারা নিজের জন্য, নিজের পরিবারের সবার নিরাপত্তার জন্য ১৪টা দিন যাতে কোয়ারেন্টিনে থাকেন। তার মাধ্যমে যাতে তার পরিবারের সদস্য ও সাধারণ জনগণ কেউ যেন সংক্রামিত না হয়, সেই ব্যাপারে তাদের নিজেদের সতর্ক থাকতে হবে।’

আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সবাইকে নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। হাঁচি, কাশি আসলে কাপড় দিয়ে নাক ডেকে রাখতে হবে বা কনুই দিয়ে হাতটা ডেকে রাখা অথবা যেখানে সেখানে না যাওয়া।’ 

বেশি করে ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘সবাই ভিটামিন সি বেশি করে খাবেন। এখন ভিটামিন সি-র অনেক কিছুই বাজারে আছে। টমেটো, কমলা লেবু, মৌসুমী ফল, টক জাতীয় ফল বেশি বেশি খাওয়া। এটা প্রচুর খেলে করোনা ভাইরাসের প্রতিরোধক শক্তি শরীরের মাঝে জমা হবে।’শহর ছেড়ে যারা গ্রামে গেছেন ও গ্রামে বসবাস করছেন তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের মানুষ, আমাদের মাটি আছে, মানুষ আছে, সবই আছে। যারা গ্রামে যাচ্ছেন তারা একটা কাজ করতে পারেন, নিজের মাটি আছে, তাতে ফসল ফলান, তরকারি লাগান।’

করোনার ভাইরাস সংক্রমন প্রতিরোধে সরকারের নেওয়া ব্যবস্থার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কীভাবে এই ভাইরাস থেকে আমরা জনগণকে মুক্ত রাখতে পারি সেখানে প্রতিদিনই এ ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া এবং তা প্রচারেরও ব্যবস্থা করে যাচ্ছি। আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও আইইডিসিআর এই ব্যাপরে যথেষ্ট সতর্ক এবং তারা বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করে যাচ্ছে। সেই দিক থেকে বলবো বাংলাদেশ এখনও মোটামুটি ভালো আছে।’

‘গণমাধ্যমের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত সতর্কতা বার্তা দেওয়া হচ্ছে। আমি শুধু আশা করবো আমাদের দেশবাসী যাতে এটা মেনে চলে।’তিনি বলেন, ‘যখন চীনে করোনা ভাইরাস দেখা দিলো তখন থেকেই আমরা কিন্তু সবধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। সেখান থেকে ৩১৫জন শিক্ষার্থীকে ফিরিয়ে এনে তাদের ১৪দিন কোয়ারেন্টিনে রেখে ছেড়েছি। যারাই বিদেশ থেকে আসছেন তাদের আমরা পরীক্ষা করছি। আর যার ভিতরে এতটুকু সন্দেহ আছে তাকে কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যবস্থা আমরা করে দিচ্ছি।’

আক্রান্তদের চিকিৎসায় সরকারের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমরা কয়েকটি হাসপাতালও সুর্নিদিষ্ট করে দিয়েছি যেখানে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী হলে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা নিচ্ছি।’ 
ডাক্তার-নার্সসহ সংশ্লিষ্টদের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ডাক্তার, নার্সসহ যারা কর্মকর্তা আছেন তাদেরও নিরাপত্তার ব্যবস্থা আমরা করছি।’

‘ইমিগ্রেশনে যেসব পুলিশ কর্মকর্তা ও সেখানে যারা কর্মরত আছেন তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিচ্ছি। সর্বোপরি নিরাপত্তার জন্য যখন যা প্রয়োজন হয় সেটা আমরা করে যাচ্ছি। কাজেই এদিক থেকে আমরা আমাদের যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি,’ যোগ করেন তিনি। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুল, ঢাকা-১০ আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password