ডিমের দাম একলাফে ডজনপ্রতি বাড়লো ৩০ টাকা

ডিমের দাম একলাফে ডজনপ্রতি বাড়লো ৩০ টাকা

হঠাৎ করে আবারও অস্থির ডিমের বাজার। চট্টগ্রামে সব দোকানে একলাফে ডজনপ্রতি ৩০ টাকা বেড়ে, বিক্রি হচ্ছে দেড়শো টাকায়। কিনতে গিয়ে বিপাকে ক্রেতারা। অনেকে না কিনে ফিরছেন, অনেকে কমিয়ে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। গত দুয়েকদিন ধরে সরবরাহ কম বলে দাবি বিক্রেতাদের। মূল্যবৃদ্ধির জন্য খামারিদের দুষছেন আড়তদাররা।

প্রতি সপ্তাহেই বাড়ছে দাম। রাজধানীতে সপ্তাহের ব্যবধানে ডজনপ্রতি বেড়েছে ৩০ টাকা পর্যন্ত। সবশেষ গতকাল প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা দরে। বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারিতে মাত্র ৩ দিনের ব্যবধানে প্রতি ১০০ পিস ডিমে ২০০ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১ টাকার উপর, যা বাজারভেদে খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ১২ দশমিক ৫০ টাকা থেকে ১৩ টাকা। অথচ চলতি মাসের শুরুতে খুচরা বাজারে প্রতি পিস ডিম বিক্রি হয়েছে ১০ টাকা।

খামারিরা বলছেন, মূলত ডিম নষ্ট হওয়ার কারণে এপ্রিল মাসজুড়ে খামারিরা কম দামেই হিমাগার মালিকদের কাছে ডিম বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন। ফলে বাজারে ডিমের সরবরাহ এবং দাম এখন তারাই নিয়ন্ত্রণ করছে। এতেই বাজারে সংকট তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ খামারিদের।

রাজধানীর পাশাপাশি অন্যান্য জেলাতেও অস্থির হয়ে উঠছে ডিমের বাজার। শুধু হিলিতেই সপ্তাহের ব্যবধানে কেসপ্রতি ডিমের দাম বেড়েছে ৫০ টাকা পর্যন্ত। গত সপ্তাহে প্রতি কেস ডিম ৩০০ টাকা বিক্রি হলেও বর্তমানে তা বেড়ে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

জানা গেছে, রাজধানীর ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রিত হয় তেজগাঁওয়ের আড়ৎদারদের মাধ্যমে। মজুতদারদের সরবরাহের ওপর ভিত্তি করে দাম নির্ধারণ করে বিভিন্ন বাজারে এসএমএস করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে করপোরেট খামারিরাও।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বাজারে সরবরাহ কিছুটা কমলে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো সরবরাহ কমিয়ে বাজার পরিস্থিতি জটিল করে তোলে। যদি তারা সরবরাহ বাড়াতেন, তাহলে হিমাগার মালিকদের সিন্ডিকেট খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারত না। কিন্তু তা না করে তারাও সুযোগ বুঝে বাজারে ডিম সরবরাহ কমিয়েছে।

ডিমের দাম বাড়ার পেছনে সিন্ডিকেটকে দায়ী করছে প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোল্ট্র্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। সংগঠনটির সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, বড় বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানের সিন্ডিকেটের কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছেন প্রান্তিক খামারিরা।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণে ভোক্তা অধিদপ্তরের যে অংশ, তা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। হঠাৎ দাম কমিয়ে ডিম মজুত করায় নরসিংদীর এক হিমাগার থেকে ২০ লাখ পিস ডিম উদ্ধার করা হয়েছে। কিশোরগঞ্জের এগারোসিন্ধুর হিমাগার থেকেও ২৮ লাখ ডিম উদ্ধার করা হয়েছে।

এছাড়া বাজারে ভুট্টার দাম কমেছে। তারপরও কেন পোল্ট্রি খাদ্যের দাম বাড়তি তা দেখা হচ্ছে। উল্লেখ্য দেশের ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণে গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর চার কোটি ডিম আমদানির অনুমোদন দেয় সরকার। এরপরও বাজারে স্বস্তি না ফেরায় আরো কয়েক দফায় ডিম আমদানির অনুমতি দেয়া হয়। এতে নাগালে এসেছিল দাম।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password