ঢাকার একটি কলেজে ডিগ্রিতে পড়েন মোহাম্মদ বিল্লাল। থাকেন খিলগাঁওয়ের একটি মেসে। পড়াশোনা ও নিজের খরচ মেটাতে উবার-পাঠাও রাইড শেয়ার করতেন তিনি। প্রতিদিনের মত শুক্রবার (২৬ মার্চ) সকালে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হন বিল্লাল। কিন্তু সন্ধ্যায় সেই মোটরসাইকেল নিয়ে তার বাসায় ফেরা হয়নি। বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ ফটকে চোখের সামনে আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় উপার্জনের যানটি।
বিল্লাল জানান, দুপুর সাড়ে ১২টায় বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ ফটকে মোটরসাইকেলটি রেখে নামাজে জানান তিনি। কিন্তু নামাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদের উত্তর ও দক্ষিণ ফটকে মোদিবিরোধী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
বিকেল তিনটার দিকে উত্তর ফটক দিয়ে কোনোক্রমে বের হন বিল্লাল। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম এলাকা ঘুরে দক্ষিণ ফটকে এসে দেখেন, তার মোটরসাইকেলে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। কিন্তু তখনও দক্ষিণ ফটকে মুসল্লিদের সঙ্গে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ চলছে। তাই আগুন নেভানোর কোনো চেষ্টাই তিনি করতে পারেননি।
বিকেল ৪টার পর সংঘর্ষ থামলে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকের সামনে যান বিল্লাল। কিন্তু ততক্ষণে পুরো মোটরসাইকেলটি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। যন্ত্রাংশগুলো কঙ্কালের মতো পড়ে রয়েছে। বিল্লালের মোটরসাইকেলের পাশে আরও চারটি মোটরসাইকেল আগুনে পুড়তে দেখা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই সংঘর্ষের সময় হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের দিকে অর্ধশতাধিক টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। এই টিয়ারশেলের গ্যাস থেকে বাঁচতে মোটরসাইকেলগুলো আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেন হেফাজতের নেতাকর্মীরা।
মো. বিল্লাল সাংবাদিককে বলেন, আগে তিনি একটি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। করোনার কারণে সেই চাকরিটি এখন আর নেই। মোটরসাইকেল রাইড শেয়ার করে তিনি নিজের খরচ ও পড়াশোনার খরচ বহন করতেন। সাত মাস আগে ৪০ হাজার টাকা ধার করে এই মোটরসাইকেলটি কিনেছিলেন তিনি। এখন তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার মোটরসাইকেলের ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন