অবশেষে গনমাধ্যম কর্মীদের তৎপরতায় শার্শার পল্লীর বড় ভাই কর্তৃক ছোট ভাই হত্যার মামলা দায়ের হয়েছে। উপজেলার জিরেনগাছা গ্রামে আবুল কাশেমের ছেলে জসীম উদ্দিন নিজে অসুস্থতার জন্য বাড়ির জমি বিক্রি করতে চেয়েছিল। এ নিয়ে বড় ভাই আব্দুর রউফ বার বার বাধা দেয়। জসিম তার চিকিৎসার জন্য বড় ভাইয়ের কাছে টাকাও চেয়েছিল। টাকা না দিয়ে আরো উল্টো তাকে বকাঝকা সহ মারপিট করত বলে একাধিক অভিযোগ উঠেছে।
অবেশষে গত ৯ জুলাই রাত্রে টাকা চাইলে দুই ভায়ের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সম্পত্তি দখলের অপচেষ্টায় অসুস্থ জসীমকে ভোর বেলার দিকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে। আর মৃত্যূর রহস্য গোপন করতে আব্দুর রউফ জানিয়ে দেয় তার ভাই ডায়াবেটিকস এর রোগি ছিল। হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে যায় এবং মারা যায়। বিষয়টি স্থানীয় মেম্বার হাসান আলী থানা প্রশাসনকে অবহিত করলেও কোন এক অদৃশ্য কারনে সুরহাতল রিপোর্ট বাদে লাশ দাফন হয়ে যায় এবং পুলিশ বিষয়টি আমলে না নিয়ে এড়িয়ে যায়। জসীম উদ্দিনের চোখে মুখে একাধিক ক্ষত চিহৃ দেখা যায়।
বড় ভাই কর্তৃক ছোট ভাই হত্যার গুঞ্জন এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শার্শার নাভারনের এক সাংবাদিক ঘটনাস্থলে যায় ১১ জুলাই দুপুর সাড়ে ১২টায়। এসময় ওই বাড়িতে সাংবাদিকরা রহস্য উদঘাটন করে প্রশাসনকে জানানো সহ ফেসবুক ও টুইটারে স্টাটাস দেয়। এমন সংবাদ পুলিশ প্রশাসন জানতে পেরে নাভারন সার্কেল এ এসপি জুয়েল ইমরানের নেতৃত্বে ও শার্শা থানা ওসি ঘটনাস্থলে যান।
এছাড়া গোয়েন্দা শাখার সদস্যরাও বিষয়টি নিয়ে তদন্তে যান ঘটনাস্থলে। এরপর ওই বাড়ির জসিম উদ্দিনের বড় ভাই আব্দুর রউফের সাথে তার পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে থানা হেফাজতে নিয়ে আসে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের ছেড়ে দিয়ে বড় ভাই আব্দুর রউফের নামে মামলা দায়ের হয়। আর ওই মামলার বাদী হয় তাদের ছোট বোন সুমি বেগম। মামলা নং ৮,তারখি ১২/০৭/২১।
মৃৃত্যুর পর ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে আব্দুর রউফ স্থানীয় প্রভাবশালীদের মাধ্যমে ম্যানেজ করে টাকা পয়সা লেন দেন করে বলেও এলাকায় গুঞ্জন উঠেছে। ঐ প্রভাবশালী ব্যক্তিরা প্রশাসনকে ম্যানেজ করার সর্তে ৩লক্ষ টাকার লেনদেন করেন। তবে এর কোন প্রমান পাওয়া যায়নি। ওই এলাকার একাধিক লোক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলে এক হত্যা মামলা আসামী আব্দুর রউফ এর নিকট থেকে টাকা নিয়েছিল। এ এসপি জুয়েল ইমরান যখন আব্দুর রউফ এর পরিবারকে নিয়ে যায় তখন তার বোন সুমি খাতুনকে ঐ হত্যা মামলা আসামীর সাথে শলা পরামর্শ করতে দেখা যায়।
উপযাচক হয়ে মেম্বার আবুল হাসান কেন থানা প্রশাসনের কাছে গিয়েছিল কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন বিষয়টি যাতে থানা পুলিশ এসে দেখে দাফন হয় তার জন্য গিয়েছিলাম। মেম্বার বলেন ওসি বদরুল আলম ও তদন্ত ওসি তরিকুল ইসলাম তাকে জানিয়ে দিয়েছিল পরিবার থেকে কেউ অভিযোগ না করলে এই করোনার সময় অযথা সেখানে যেয়ে কি হবে।
তিনি বলেন আমি ওসিদের বলি তার স্ত্রী, সন্তান কেউ নেই অভিযোগ করার মত। তারপরও কোন পুলিশ ঘটনাস্থলে না গেলেও লাশ দাফন হয়ে যায়। আপনি বলছেন জসিম তার রোগের কারনে মারা গেছে তাহলে থানায কেন যেতে হবে এমন প্রশ্নে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যায়। আজ সোমবার হাসান মেম্বার এর নিকট টাকা পয়সা লেন হয়েছে এরকম বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার মাধ্যেমে হয়নি। টাকা পয়সা রউফের বোন সুমি গ্রামে কার কার কাছে দিয়েছিল এটা তারা জানে।
এ বিষয় শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বদরুল আলম খান বলেন, নিহতের বোন সুমি বাদি হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছে। লাশ ময়না তদন্ত হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন এটা আদালতের বিষয়।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন