ভারতে অদ্ভুত একটি গ্রাম ঘরে নেই দরজা ব্যাংকে নেই তালা

ভারতে অদ্ভুত একটি গ্রাম ঘরে নেই দরজা ব্যাংকে নেই তালা

ভারতের মহারাষ্ট্রের নাভাসা জেলার একটি গ্রাম এখন খবরের শিরোনামে। আহমেদনগর থেকে গ্রামটি ৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। গ্রামটির নাম শিংনাপুর।অনেকে মজা করে একে সিঙ্গাপুরও বলে।  গ্রামটিতে অবস্থিত শনি মন্দিরের দেবতার নামানুসারেই রাখা হয়েছে এর নাম। ওই মন্দিরের কারণেই গ্রামটি আশপাশের এলাকায় সুপরিচিত।

তবে তার থেকেও যে বিস্ময়ের কারণে গ্রামটি খবরের শিরোনাম, তা হচ্ছে—  দুই শতাধিক বসতবাড়ির এই গ্রামটিতে নেই কোনো প্রবেশ দরজা।চাইলে দিন-রাত  ২৪ ঘণ্টাই যে কেউ যে কারও ঘরে প্রবেশ করতে পারবে।  সব বাসিন্দার ঘরের দরজা খোলা থাকে। খোলা থাকে মানে, কারোর বাড়িতেই নেই প্রবেশের দরজা।  এ কারণে চাইলেও দরজা বন্ধ করার সুযোগ নেই।কেবল একটি ঘরের দরজা রয়েছে সেখানে, সেটি হচ্ছে— ওই গ্রামে অবস্থিত একটি ব্যাংকের। দরজা থাকলেও তাতে অবশ্য কোনো তালা ঝোলানো নেই। চাইলে যে কেউ কারও অলক্ষ্যে প্রবেশ করতে পারবে ভেতরে।

জানা গেছে, ২০১১ সালে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত একটি ব্যাংকের শাখা খোলা হয় সেখানে। ব্যাংক খোলার পরিকল্পনার সময় গ্রামবাসীর সঙ্গে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আলোচনার করে স্থির করে যে, ব্যাংকের দরজা থাকলেও তা হবে স্বচ্ছ গ্লাসের আর থাকবে না কোনো তালা।ঘরবাড়ি নির্মাণের ক্ষমতা থাকলেও দরজা বানানোর কি সামর্থ্য নেই সিঙ্গাপুরের গ্রামবাসীর? এ কেমন রহস্য?আসলে গ্রামটিতে প্রচলিত ৩০০ বছর এক লোককথাকে বিশ্বাস করেই ঘরে দরজা লাগান না তারা।প্রচলিত আছে— প্রায় ৩০০ বছর আগে গ্রামটিতে একবার প্রচণ্ড বৃষ্টি ও বন্যা হয়। বন্যা শেষ হলে গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া পানাশালা নদীর তীর থেকে উদ্ধার হয় বিশালাকৃতির কালো রঙের একটি পাথর।

এক রাখাল তার হাতের লাঠি দিয়ে পাথরটিকে স্পর্শ করতেই সেটি থেকে নাকি অঝোর ধারায় রক্ত বইতে শুরু করে।  গ্রামের সব মানুষ ভয়ে দিশেহারা হয়ে দিগ্বিদিক ছুটতে শুরু করে। তার পর হঠাৎ করেই কোনো এক অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে সবাই নাকি ঘুমিয়ে পড়ে।সবাই যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিল, তখন সবাইকে স্বপ্নে দেখা দেয় শনি দেবতা। সবাইকে তিনি জানান যে, এই মূর্তি তারই প্রতিমূর্তি। যদি তারা ঠিকভাবে তার উপাসনা করে তা হলে সবার মুক্তি ও নিরাপত্তা দেবেন ঈশ্বর। নইলে এই রক্তের ধারা বন্ধ হবে না।তার উপাসনার জন্যে দুটি শর্তজুড়ে দেন। প্রথমত এই গ্রামের কোনো জায়গায় পবিত্র মূর্তিটিকে রাখতে হবে। দ্বিতীয়ত গ্রামের কেউ তাদের ঘরের দরজা কখনই বন্ধ করতে পারবে না। সেই থেকেই এমনভাবে চলে আসছে গ্রামটিতে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password