বিচারকের খাসকামরায় ঢুকে আসামিকে হত্যা,যুবকের মৃত্যুদণ্ড

বিচারকের খাসকামরায় ঢুকে আসামিকে হত্যা,যুবকের মৃত্যুদণ্ড

কুমিল্লার আদালতে বিচারকের খাসকামরায় ঢুকে ফারুক নামের এক আসামিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা মামলায় মো. হাসান (২৩) নামে এক যুবককে ফাঁসি রায় দিয়েছেন আদালত। সোমবার কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আতাবউল্লাহ এ রায় দেন। ফাঁসির রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম সেলিম ও এপিপি অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম। 

ফাঁসির রায় ঘোষণার পর আসামি মো. হাসানের মা ও স্বজনদের আহাজারিতে স্তব্ধ হয়ে পড়ে আদালত প্রাঙ্গণ। মা নয়ন বেগমের দাবি তার ছেলে মাদকাসক্ত ছিলেন। পূর্বের শত্রুতায় আদালতে ফারুককে দেখে তার মাথা ঠিক ছিল না। তার ছেলে ন্যায্য বিচায় পায়নি। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. হাসান কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার ভোজপাড়া গ্রামের হাসান মিয়ার ছেলে। 

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালে ১৫ জুলাই কোর্ট চলাকালে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের কান্দি গ্রামের হাজি আবদুল করিম হত্যা মামলার আসামি হাসান ছুরি হাতে ওই মামলার আরেক আসামি ফারুকের পেছনে ধাওয়া করে। ফারুক আত্মরক্ষার জন্য বিচারকের খাসকামরায় গিয়ে আশ্রয় নেয়। হাসান বিচারকের খাসকামরায় প্রবেশ করে ফারুককে ছুরিকাঘাতে রক্তাক্ত জখম করে। পরে তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।

মামলার আইনজীবী এপিপি নুরুল ইসলাম জানান, ২০১৩ সালে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের কান্দি গ্রামে খুন হন হাজি আবদুল করিম। এ দিন ওই মামলার জামিনে থাকা আসামিদের হাজিরার দিন ধার্য ছিল। ১১টার দিকে কুমিল্লা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের এ মামলার আসামিরা আদালতে প্রবেশের সময় ৪ নম্বর আসামি ফারুককে ছুরি নিয়ে তাড়া করে ৮ নম্বর আসামি হাসান। প্রাণভয়ে ফারুক বিচারকের খাস কামরায় ঢুকে যান। পিছু ধাওয়া করে হাসানও সেখানে ঢুকে ফারুককে টেবিলের ওপর ফেলে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে তাকে ওই কক্ষের ফ্লোরে ফেলেও আঘাত করা হয়। 

এ সময় আদালতে অন্য একটি মামলার হাজিরা দিতে আসা কুমিল্লার বাঙ্গরা থানা পুলিশের সাবেক এএসআই ফিরোজ এগিয়ে গিয়ে হাসানকে আটক করেন। এ ঘটনায় উপস্থিত বিচারক, আইনজীবী ও অন্য আসামিরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তখনকার সময় কুমিল্লা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক ছিলেন বেগম ফাতেমা ফেরদৌস।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password