১৭ বছর বয়সে যখন শুনলেন নিজেরটুকু নিজেকেই করে নিতে হবে তখন আবার নতুন করে নাচ শেখা শুরু করলেন। ১৭ বছর বয়সে যোগ দিলেন যৌনকর্মীর পেশায়,বলিউডের অন্দরে লুকিয়ে আছে না জানা অনেক কথা। বড়ই অদ্ভুত সে জগৎ। হাজার হাজার মানুষ এই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করেন। এক একজনের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন গল্প। পুরনো অতীত ছেড়ে বলিউডে এসে আজ তাঁরা সুপ্রতিষ্ঠিত। কেউ চিত্রনাট্য, কেউ পরিচালনায় কেউ বা আবার অভিনয়ে হিট।

তেমনই একজন হলেন শগুফতা রফি। বলিউডের অন্যতম চিত্রনাট্যকার। মাত্র ১১ বছর বয়সে শগুফতা পা রাখেন চলচ্চিত্র জগতে। একটি ছোট চরিত্রে তিনি অভিনয় করেছিলেন। এরপর তাঁকে একটি প্রাইভেট পার্টিতে নাচের জন্যও অনুরোধ জানানো হয়। তখন তাঁর বয়স ১২। সেখান থেকেই বলিউডের সঙ্গে যুক্ত এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়।

শগুফতার যখন মাত্র ১৭ বছর বয়স তখন সেই ব্যক্তি তাঁকে দেহ বেচতে বাধ্য করেছিলেন। এরপর দীর্ঘ ১০ বছর তিনি যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করেন। শুধু এটুকুই নয়। তাঁর জীবনে রয়েছে আরও এক দুঃখের কাহিনি। শগুফতা জানতেন না তাঁর জন্মদাত্রী মা কে। যদিও তাঁর ছোটবেলা কেটেছিল অভিনেত্রী আনওয়ারি বেগমের উপর নির্ভরশীল থেকে।

তাঁকে আনওয়ারি যেমন যাবতীয় সুখ স্বাচ্ছন্দ্য দিয়ে মানুষ করেছিলেন একসময় তা কেড়ে নেন। বলেন, এবার শগুফতাকে নিজের মতো চালিয়ে নিতে হবে। তখন থেকে আবার নাচের অভ্যাস শুরু করেন। বিভিন্ন বারে নাচের পাশাপাশি যৌনকর্মীর পেশাতেও কাজ শুরু করেন। দীর্ঘদিন এভাবে চলার পর ১০ বছর পর তাঁকে সেখান থেকে উদ্ধার করে আনেন মহেশ ভাট। যোগ দিলেন মহেশ ভাটের প্রযোজনা সংস্থায়। তাঁর নিজের জীবনে ঘটে চলা ঘটনা নিয়েই লিখলেন প্রথম চিত্রনাট্য।এরপর ১১ টি ছবির চিত্রনাট্য লেখেন তিনি। সেই তালিকায় ছিল জন্নত ২, রাজ ৩, আশিকি ২, সড়ক ২ প্রভৃতি। এছাড়াও একটি তেলগু ছবির চিত্রনাট্য লেখেন তিনি। তবে পরিচালক হিসেবে শগুফতার আত্মপ্রকাশ টলিউডে। গত বছর মুক্তিপ্রাপ্ত মিমি চক্রবর্তী-যশ অভিনীত মন জানে না-এর পরিচালক তিনি। লিখেছেন একাধিক সিরিয়ালের স্ক্রিপ্টও।

আজ ৫৪ বছর বয়সে এসে শগুফতা প্রতিষ্ঠিত। পরিচিত নাম। কিন্তু এভাবেই তিনি দিনের পর দিন লড়াই করে গিয়েছেন। শুধুমাত্র নিজের জেদে বেঁচে থাকার জন্য যৌনকর্মী হিসেবেও কাজ করেছেন। অন্ধকার অতীত থেকে যাবতীয় শিক্ষা নিয়েই আলোর পথের যাত্রী তিনি। এভাবেই জীবন উত্তরণের তরী নিয়ে এগিয়ে চলেছেন শগুফতা।