২০ টাকায় প্রাইভেট পড়ান ৭৯ বছরের ফখরুল

২০ টাকায় প্রাইভেট পড়ান ৭৯ বছরের ফখরুল

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার ফখরুল আলম (৭৯) পেশায় একজন শিক্ষক। নিজের একটি পুরোনো বাইসাইকেল চালিয়ে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামের পথ ঘুরে ঘুরে প্রাইভেট পড়িয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। সংসারের ঘানি টানা শেষ হয়নি আজও। বয়সের ভারে নুয়ে পড়লেও কারও কাছে মাথা নোয়াননি তিনি। নিজ আদর্শে অটুট থেকে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছেন কোমলমতি শিশুদের মধ্যে। এসব তিনি করছেন নামমাত্র অর্থের বিনিময়ে।

ফখরুল আলম  বলেন, ‘বেঁচে থাকার তাগিতে তিনি গ্রামের বাচ্চাদের দিনপ্রতি ২০ টাকায় প্রাইভেট পড়ান। যারা টাকা দিতে পারেন না সেসব অভিভাবকের বাচ্চাদের বিনামূল্যে পড়ান। আবার কারও কারও কাছ থেকে ২০ টাকার কমও নেন। এভাবে অর্থের জোগাড় করে তিনি নিজের ও স্ত্রীর চিকিৎসা করাচ্ছেন। পাশাপাশি ছোট তিন ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচও জোগাড় করছেন।’

ফখরুল আলমের সংসারে তার স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক কন্যাসন্তান রয়েছে। তারা যার যার মতো সংসার করছেন। মেজ ছেলে কিছু টাকা-পয়সা দিয়ে সহযোগিতা করলেও তা দিয়ে ওষুধ কেনাও হয় না। তাই বাধ্য হয়েই নামমাত্র অর্থের বিনিময়ে কোমলমতি শিশুদের মাঝে আলো ছড়াচ্ছেন এই বৃদ্ধ।

বালিদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পান্নু মিয়া জানান, করোনাকালীন বৃদ্ধ ফখরুল একটি বেসরকারি কোম্পানির চাকরি ছেড়ে দিয়ে গ্রামে এসে বাচ্চাদের প্রাইভেট পড়িয়ে অর্থ উপার্জন করছেন। তিনি পড়ানও ভালো। বাচ্চারা তাকে খুব পছন্দও করে। এজন্য এলাকার অনেকেই তার কাছে বাচ্চাদের প্রাইভেট পড়ান।

এ বিষয়ে মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রামানন্দ পাল সাংবাদিককে বলেন, ফখরুল আলম একজন শ্রদ্ধাভাজন ও ন্যায়-নিষ্ঠাবান মানুষ। তিনি সমাজকে আলোকিত করার কাজ হাতে নিয়েছেন। এখন পর্যন্ত তিনি কোনো সাহায্য-সহযোগিতার জন্য আসেননি। তিনি যে কোনো সমস্যা উপজেলা প্রশাসনকে জানালে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করারও আশ্বাস দেন এ কর্মকর্তা।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password