প্রতিবাদী পথশিশুকে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের হামলা

প্রতিবাদী পথশিশুকে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের হামলা

গত ১৯ এপ্রিল সময়ের কন্ঠস্বর সাংবাদিক সরাসরি লকডাউন পরিস্থিতি উপস্থাপন করছিলেন। শেষ মূহুর্তে একজন পথশিশু আলাভোলা চেহারা নিয়ে ক্যামেরার সামনে গিয়ে নিজের ও সাধারণ মানুষের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বলে এই যে লকডাউন দিয়েছে, সামনে ঈদ মানুষ খাবে কি? মানণীয় মন্ত্রী যে লকডাউন দিয়েছে এটা ভুয়া এবং একজন শিক্ষিত শুশিল সচেতন নাগরিকের মত ধন্যবাদ দিতেও ভুল করেননি প্রতিবাদি পথশিশু।

এমন অপ্রিয় সত্যকথা সরাসরি লাইভে প্রচার হওয়ায় গত দু দিন সেই শিশু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাসছিলেন প্রশংসায়। কিন্তু আজ সেই পথশিশুকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিন্ন চিত্র। পথ শিশুর এমন অপ্রিয় সত্য ঘটনা সহ্য করতে না পেরে কে বা কারা হামলা করেছে বিষয়টি স্পষ্ট না হলেও যে যার মত প্রতিবাদ করছে এ হামলার তীব্র সমালোচনা সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুক জুড়ে। প্রতিবাদী পথ শিশুর পক্ষ অবলম্বন করে নানান জনের নানান মন্তব্য আরিফ আহমেদ নামে একজন লিখেছে পথ শিশুকে নিয়ে এত ভয়? উচিত ছিল পথ শিশুটির মূল্যবান বক্তব্যর মূল্যায়ন করা মোল্লা রহমতউল্লাহ নামে একজন লিখেছে ভাত দেওয়ার মুরোদ নাই কিল দেওয়ার ঘোসাই তারেক রহমান নামে একজন লিখেছে শুনেছি ওকে মেরেছে সন্ত্রাসীরা, ওর যদি কেউ সন্ধান দিতে পারেন আমার সাথে যোগাযোগ করবেন। আমার বাসায় আমার সাথে রাখব ওকে। একজন দক্ষ মানব সম্পদ বানানোর প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।

তবে তাকে কবে কারা মেরেছে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়, মারধরের ফলে শিশুটির চোখ-মুখ ফুলে গেছে। এ ঘটনার পর ওই শিশুটিকে খুঁজে বের করেছেন পারভেজ হাসান নামে একজন স্বেচ্ছাসেবী। তার একটি ছবি ফেসবুকে শেয়ার করে স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি।

পারভেজ লিখেছেন, ‘একজন পথশিশু ছেলেটি। শিক্ষিত রাষ্ট্রের শিক্ষিত ব্যক্তিদের মতো আচরণ এখনো শেখেনি। তাই হয়তো সাংবাদিক যখন লাইভ করে, তখন মজার ছলে সামনে ঈদ লকডাউন দিলে গরীব মানুষ খাবে কী? এই লকডাউন ভুয়া। এটুকুই বলেছে। পরিণামে অনেকেই অনলাইনে প্রশংসা করলেও কে-বা কারা তাকে মেরেছে, চোখমুখ ফুলিয়ে দিয়েছে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে ছেলেটি কি একবারও কথাটা মিথ্যা বলেছে?

তিনি লেখেন, ‘ও দারিদ্র্য, ক্ষুধা কী ওর থেকে ভালো কেও জানে না। তাই মনের ভেতর যে সত্যটা আসছে তাই মুখে বলে দিয়েছে। তার জন্য গায়ে হাত তুলতে হবে? ছেলেটিকে আমি খুঁজছি। কেউ যদি তাকে খুঁজে পাবার একটু ক্লু দিতে পারেন উপকার হয়। তার পড়াশোনা থেকে যাবতীয় দায়িত্ব নেওয়ার ইতিমধ্যেই প্রস্তাব এসেছে। খুঁজে পেলে ইনশাআল্লাহ ওর সাথে এবার ভালো কিছুই হবে আশাবাদী।

পরে অবশ্য ওই শিশুকে খুঁজেও পেয়েছেন। তার সঙ্গে আরেকটি ছবি তুলে দ্বিতীয় পোস্টে পারভেজ হাসান লিখেছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ অসম্ভব পরিশ্রম করে ওকে খুঁজে বের করলাম।’ এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন বলে পোস্টে তিনি উল্লেখ করেছেন।

এদিকে ওই শিশুর ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন আরও অনেকে। মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়া নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক ছাত্রনেতা লিখেছেন, ‘ক্ষমতার দম্ভ তাদের এতই অন্ধ করে ফেলছে যে, এতটুকু একটা পথশিশু বাচ্চার সমালোচনা সহ্য করার মানসিক শক্তিও তারা হারিয়ে ফেলেছে। এই বাচ্চা ছেলেটার গায়ে হাত তুলতে তাদের বিবেক এতটুকু কাঁপলো না!

তিনি লেখেন, ‘সে তো অযৌক্তিক কিছু বলেনি। অন্য অনেকেই যা বলতে চেয়েও বলেনি, সে স্বাচ্ছন্দ্যে তা বলে দিয়েছে। এটা কি খুব বেশী অপরাধের কাজ হয়ে গেল ? দুঃখজনক। তবে সবকিছুরই যে একটা শেষ আছে,এটা মনে হয় তারা ভুলে গেছে। সময় নিশ্চয়ই এর উপযুক্ত জবাব দেবে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password