নীচে মাছের ঘের উপরে হলুদ রংয়ের মধুমালা তরমুজ

নীচে মাছের ঘের উপরে হলুদ রংয়ের মধুমালা তরমুজ
MostPlay

 বরগুনার আমতলীতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করে চকম সৃষ্টি করেছেন উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের সৌখিন কৃষক মোঃ রুহুল আমিন বিশ্বাস। নিচে মাছের ঘের আর তার উপড়ে মাচায় ঝুলছে হলুদ রংয়ের মধুমালা তরমুজ। এ যেন প্রকৃতির এক অপরূপ সৌন্দর্য। উপড়ে হলুদ ও ভিতরে লাল রংয়ের সুস্বাদু এ তরমুজের রয়েছে প্রচুর চাহিদা। চাষী রুহুল আমিন সখের বসে চাষ করলেও শুরুতেই সফলতা পেয়েছেন। প্রতিদিন দুর-দুরান্ত থেকে মানুষ মধুমালা তরমুজ ক্ষেত দেখতে এবং ক্রয় আসছে লোকজন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, আমতলী পৌরসভার সহকারী কর আদায়কারী আড়পাঙ্গাশিয়া গ্রামের বাসিন্দা সৌখিন কৃষক রুহুল আমিন বিশ্বাস চাকুরীর পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে সে মৎস্য ও সবজি চাষ করে আসছেন। এতে বেশ সফলতা পেয়েছেন তিনি। তার সফলতাকে আরো প্রসারিত করতে উদ্যোগ নেন গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে। উপজেলার কৃষি অফিসের পরামর্শে মধুমালা তরমুজ চাষ করেন। চলতি বছর জুন মাসের শুরুতে ১০ হাজার টাকা ব্যয়ে ২০০ মাধায় (জার) তরমুজের বীজ বপন করেন। মাছের ঘেরে মাঁচা তৈরি করে এ তরমুজ চাষ করা হয়। শুরুতেই পরিচর্যা অদম্য পরিশ্রমের ফলে বীজ থেকে তা চারায় রূপান্তিত হওয়ার দুই মাসের মাথায় গাছে ফলন ধরেছে। খুশিতে আত্মহারা সৌখিন চাষী রুহুল আমিন। বিরামহীন বর্ষণে তার অদম্য শ্রমে কিছুটা ব্যঘাত ঘটালেও তেমন কোন সমস্যা হয়নি। বর্তমানে তার গাছের তরমুজগুলো বড় হচ্ছে। থোকায় থোকায় মাঁচায় হলদে রংয়ের ভেতরে টকটকে লাল সুস্বাদু তরমুজ ঝুলছে। দুর থেকে দেখলে মনে হবে এ যেন এক অপরূপ সৌন্দর্য।

এরই মধ্যে কৃষক রুহুল আমিন বিশ্বাস তার ক্ষেতে উৎপাদিত ৫০টি তরমুজ বিক্রি করছেন। একেকটি তরমুজ ২৫০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি করছেন। কিন্তু চাহিদা থাকা সত্তেও ক্রেতাদের কাছে তরমুজ বিক্রি করতে পারছেন না। ইতিমধ্যে তিনি ১০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন। গাছে এখনো আরো অনেক তরমুজ রয়েছে। পরীক্ষামূলক হলেও শুরুতেই তিনি চমক সৃষ্টি করেছেন। তিনি আশা করছেন গাছে এখনও যে পরিমাণ তরমুজ আছে তা বিক্রি করে আরো ৪০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন।

প্রতিদিন স্থাণীয় ও দুর-দুরান্ত থেকে লোকজন এসে সৌখিন কৃষক মোঃ রুহুল আমিন বিশ্বাসের অসময়ে উৎপাদিত মধুমালা তরমুজ ক্ষেত দেখতে ভীড় করছেন।

সরেজমিনে তরমুজ ক্ষেত দেখতে গিয়ে কথা হয় স্থাণীয় সরোয়ার হোসেন এবং পার্শ্ববর্তী চাকামইয়া ইউনিয়ন থেকে আসা কৃষক আঃ হালিম হাওলাদারের সাথে। তারা জানায়, অসময়ের তরমুজ হয়েছে সেটা দেখতে এবং স্বাদ কেমন তা কিনে খেতে এখানে এসেছি। তারা আরো বলেন, মাছার উপড়ে গাছে থোকায় থোকায় হলুদ রংয়ের তরমুজ ঝুলে আছে। দেখতে খুবই সুন্দর লাগছে এ যেন প্রকৃতির এক অপরূপ সৌন্দর্য। তরমুজ কিনতে চেয়েও তা কিনতে পারিনি।

সৌখিন কৃষক মোঃ রুহুল আমিন বিশ্বাস বলেন, যখন বুঝতে শিখেছি (শিক্ষা জীবন) থেকেই মাছ ও সবজি চাষ করে আসছি। চাকুরী হওয়ার পরেও ফাঁকে ফাঁকে মাছ ও সবজি চাষ করছি। নুতন কিছু চাষের উৎসাহ মাথায় নিয়ে এ বছর জুন মাসে উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে গ্রীষ্মকালীন মধুমালা তরমুজ চাষের উদ্যোগ নেই। পরীক্ষামূলক হলেও বেশ সফলতা পেয়েছি। সখের বসত হলেও অসময়ের তরমুজ চাষে বেশ লাভবান হবো। চাহিদা থাকা সত্তেও অনেক ক্রেতাদের দিতে পারছি না।

উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম বলেন, মধুমালা তরমুজ একটি গ্রীষ্মকালীন ফল। কম খরচে এ ফল চাষে অধিক লাভবান হওয়া যায়। সৌখিন চাষী রুহুল আমিন বিশ্সবা উপজেলার মধ্যে এই প্রথম মধুমালা তরমুজ চাষ করে বেশ সফলতা পেয়েছেন। তার দেখাদেখি অনেক কৃষক এখন মধুমালা তরমুজ চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password