র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যদের মারধর ও সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে করা মামলায় অভিযুক্ত সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইব্রাহিম খলিল প্রসঙ্গে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেছে র্যাব।
বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) রাতে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক আ. ন. ম ইমরান খান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়, গত ১১ মার্চ আনুমানিক বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে র্যাব-১০-এর সিপিসি-৩ লালবাগ ক্যাম্পের একটি দল চকবাজারের খাজে দেওয়ান লেন এলাকায় দায়িত্ব পালন করছিল। এসময় এবিএম ইব্রাহীম খলিলসহ তার সহযোগীরা র্যাব সদস্যদের বাধাপ্রদান ও তাদের উপর অতর্কিত হামলা করে।
ঘটনার বিবরণে জানানো হয়, র্যাব সদস্যরা ওই এলাকায় একজন মাদক ব্যবসায়ী সম্পর্কে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে গিয়েছিল। এ সময় এবিএম ইব্রাহীম খলিল এবং তার সহযোগীরা র্যাব সদস্যদের পরিচয় জানতে চান। র্যাব সদস্যরা তাদের কাছে আইডি কার্ড, জ্যাকেট প্রদর্শন করে নিজেদের র্যাব-১০, সিপিসি-৩, লালবাগ ক্যাম্পের সদস্য বলে পরিচয় দেন।
এরপর এবিএম ইব্রাহীম খলিল ও তার সহযোগীরা র্যাব সদস্যদের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় করেন। র্যাব সদস্যরা ওই এলাকা ত্যাগ করে পার্শ্ববর্তী জায়গায় রাখা সরকারি মোটরসাইকেলের দিকে অগ্রসর হন। এসময় পেছন হতে ওই ব্যক্তিরা ‘ভুয়া র্যাব’ বলে চিৎকার করে আক্রমণ করে। এমনকি র্যাব সদস্যদের উপর্যপুরি কিল ঘুষি মেরে জখম করে। এসময় র্যাব সদস্যদের চিৎকারে আশেপাশের মানুষ সাহায্যের জন্য আসে এবং তাদের উদ্ধার করে। পরবর্তী সময়ে স্থানীয়দের সহায়তায় এবিএম ইব্রাহীম খলিলকে গ্রেফতার করা হয়। তবে তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়।
র্যাব তাদের বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানায়, গ্রেফতারকালে ধস্তাধস্তি হওয়ায় সবাইকে সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এরপর একইদিন রাত ১২টা ৪০ মিনিট চকবাজার মডেল থানায় মামলা দায়ের করে ইব্রাহীম খলিলকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। মামলা নং-৩২/১৪৫।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ১২ মার্চ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গ্রেফতার এবিএম ইব্রাহীম খলিলের একটি ভিডিও র্যাবের দৃষ্টিগোচর হয়। ভিডিওতে ইব্রাহীম খলিলের বক্তব্যের আলোকে র্যাবের বক্তব্য হলো- তিনি দাবি করেন তাকে বুধবার (১০ মার্চ) সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) সরকারি কাজে বাধা প্রদানের জন্য জনসমাগমপূর্ণ এলাকা চকবাজারের খাজে দেওয়ান ২য় লেনের রাস্তা হতে ইব্রাহীম খলিলকে গ্রেফতার করা হয়।
ইব্রাহিম খলিলকে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রেফতারের বিষয়টি ভিত্তিহীন, মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করে র্যাব।
এদিকে র্যাব সদস্যদের মারধর ও সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে করা মামলায় গত রোববার জামিন পেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইব্রাহিম খলিল।
ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মাসুদ আহমেদ তালুকদারসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী তার পক্ষে জামিন শুনানি করেন। এ সময় এজলাস কক্ষে ও বাইরে বিপুলসংখ্যক আইনজীবী স্লোগান দিতে থাকেন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন