সামনেই নারায়ণগঞ্জ জেলার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। ইতিমধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ১১ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের ১৬ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দিন যত যাচ্ছে ততই ঘনিয়ে আসছে নির্বাচন। ইউনিয়ন পরিষদগুলোর বইছে নির্বাচনী হাওয়া। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে এলাকার প্রতিটি আড্ডায় বাড়ছে নির্বাচনের আলোচনা। প্রতিদিন বাড়ছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নির্বাচনী সালামের ব্যানারের সংখ্যা। সম্ভাব্য নতুন প্রার্থীরা ব্যানার, ফ্যাস্টুন, উঠান বৈঠকের মাধ্যমে এলাকাবাসীকে জানান দিচ্ছে তারা জনগনের সেবা করতে প্রস্তুত। শুধু যেন জনগনের রায়ের অপেক্ষা। বর্তমান জনপ্রতিনিধিরাও থেমে নেই। তারাও প্রস্তুতি নিচ্ছেন নিজেদের স্থান ধরে রাখার। তারা তাদের উন্নয়ন কর্মকান্ড জানান দিচ্ছেন। অনেকে আবার পুরো দুস্তর ব্যাস্ত উন্নয়ন মুলক কাজ নিয়ে।
এটা অবশ্য জনগণের কাছে নতুন কোন বিষয় নয়৷ প্রতিবার নির্বাচন আসলে এইরকম কিছু হরহামেশাই দেখা যায়। নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসলেই অনেক ব্যানার, ফ্যাস্টুনের মাধ্যমে সালাম গ্রহণ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে জনগন। এমন অনেকের ব্যানার, ফ্যাস্টুন লক্ষ করা যায় যাদের জনগনের সাথে কোন সম্পৃক্ততাই নাই। নির্বাচনের সময় ছাড়া তাদের দেখাই যায় না। অনেকে আবার নির্বাচনের অন্তিম মুহূর্তে কোন এক অজানা কারণে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নেন। এমন সংখ্যাও কিন্ত নেহাত কম নয়। অনেকে আবার নতুন এসেই অল্প কয়েকদিনের মধ্যে জনগণের আস্থা অর্জন করে প্রতিনিধি নির্বাচিতও হয়ে যান। কেউ কেউ আবার বছরের পর জনগনের পাশে থেকেও ভোটের সময় সেই আস্থা অর্জনে ব্যার্থ প্রমানিত হন। তবে এবারের প্রেক্ষাপট কিছুটা ব্যাতিক্রম হতেও পারে কারণ কিছুদিন আগেও দেশে লকডাউন চলেছে। সে সময় অনেক সাধারণ মানুষ কষ্টে দিন অতিবাহিত করেছে৷ সে সময় যারা সাধারণের পাশে ছিলেন তারাই হয়তো এগিয়ে থাকবেন। তবে যাদেরকে সেই দুঃসময়ে পাওয়া যায়নি তারাও হাল ছাড়ছেন না। তারাও লড়তে চান বিজয়ের আশা নিয়ে।
ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন দলীয় প্রতিকে হবার পর থেকে দেখা যাচ্ছে যারা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী তারা ভোটারদের থেকে বেশি চিন্তায় নৌকার মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে। নৌকা পেলে জয় নিশ্চিত- এমন ধারণায় ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন পেতে জোর লবিং চলছে। এলাকা ছেড়ে মনোনয়নপ্রত্যাশী রাজধানী ও জেলা শহরে ছুটছেন দলের টিকিট পেতে। নৌকা প্রতিক পেতে প্রতি ইউনিয়নে ৫ জন থেকে ডজনখানেক নেতার তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে। তবে সদস্য (মেম্বার) পদে নির্বাচন নির্দলীয় হওয়ায় তা নিয়ে পাড়ায়-মহল্লায় যথেষ্ট আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। এদিকে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয়। বিএনপি নির্বাচনের না আসলে অনেকে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করার চিন্তা করছেন। কিন্ত দলের বাইরে গিয়ে ভোট করে কতটা লাভ হবে, তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব রয়েছে বিএনপির তৃণমূলের নেতাদের মধ্যে। জাতীয় পার্টি এখনও নিশ্চিত করেনি তারা ইউপি নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা।
উল্লেখ্য নারায়ণগঞ্জের ১৬ ইউনিয়ন পরিষদে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ ১৭ অক্টোবর, মনোনয়নপত্র বাছাই ২০ অক্টোবর, বাছাই সিন্ধান্তের বিরুদ্ধে আওইল দায়ের ২১ থেকে ২৩ অক্টোবর, আপিল নিষ্পত্তি ২৪ ও ২৫ অক্টোবর, প্রার্থীতা প্রত্যাহার ২৬ অক্টোবর, প্রতীক বরাদ্দ ২৭ অক্টোবর ও নির্বাচন ১১ নভেম্বর। ১৬ ইউনিয়নের মধ্যে মুড়াপাড়া ও কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে(ইভিএম) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন