রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকার এক তরুণীকে পাচার করা হচ্ছিল দুবাইয়ে। সন্দেহ হওয়ায় পরিবার ভিসাটি যাচাই করতে দেয়। যখন নিশ্চিত হওয়া যায় ভিসাটি ঠিক নয় ততক্ষণে ওই তরুণী দালালদের সঙ্গে এয়ারপোর্টের উদ্দেশে বেরিয়ে গেছেন। সঙ্গে মোবাইল ফোন না থাকায় যোগাযোগও করতে পারছিলেন না কেউ। এ অবস্থায় তরুণীর কলেজ পড়ুয়া ছোটভাই জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দেন। তার বুদ্ধিমত্তায় সোমবার রাতে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে উদ্ধার হন ওই তরুণী। গ্রেফতার করা হয় দুই দালালকে।
জানা গেছে, ওই তরুণীর নাম সোনিয়া (২৬)। খিলক্ষেত মধ্যপাড়া এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকেন তিনি। সম্প্রতি পরিচিত একজন তাকে জানান, দুবাইয়ে পার্লার ভিসায় লোক নিচ্ছে। ভালো বেতন, যেতে চাইলে ব্যবস্থা করে দেওয়া যাবে। ওই ব্যক্তির কথায় রাজি হয়ে যান সোনিয়া ও তার পরিবার। পরে ওই ব্যক্তি আরও দুজনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।
কয়েকদিন আগে জানানো হয় সোনিয়ার ভিসা হয়েছে। ফ্লাইট সোমবার রাত ৯টায়। সোনিয়ার পরিবারকে সোমবার ভিসার একটি কপিও দেওয়া হয়। ওই কপি দেখে পরিবারের লোকজনের সন্দেহ হয়। তারা ভিসাটি যাচাইয়ের জন্য ইউএই দূতাবাসে যোগাযোগ করেন। দূতাবাস জানায় ভিসাটি জাল।
জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ এর পরিদর্শক আনোয়ার সাত্তার মঙ্গলবার বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় ৯৯৯-এ একটি কল আসে। কলটেকার কনস্টেবল মিজানুর রহমান কলটি রিসিভ করেন। অপরপ্রান্ত থেকে একজন কলেজছাত্র তার বোনকে দালালের কবল থেকে উদ্ধারের আকুতি জানান।
কনস্টেবল মিজান তাৎক্ষণিকভাবে এয়ারপোর্ট থানা ও ইমিগ্রেশন পুলিশকে বিষয়টি জানান। ৯৯৯ ডেসপাচার সহকারী উপ-পরিদর্শক আসাদুজ্জামান সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ ও কলারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। পরে রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সোনিয়াকে উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতার করা হয়, অভিযুক্ত দালাল আবদুল খালেক ও ফয়েজুল্লাহ সবুজকে। ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহনাজ বেগম জানান, তারা ওই তরুণীর যাত্রা স্থগিত করে তাকে ভাই এবং স্বামীর জিম্মায় দিয়েছেন। এ ছাড়া এপিবিএন দুই দালালকে আটকের পর বিমানবন্দর থানায় হস্তান্তর করে।
পুলিশ জানিয়েছে, এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী সোনিয়া বিমানবন্দর থানায় মামলা করেছেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিমানবন্দর থানার উপ-পরিদর্শক আফতাব উদ্দিন বলেন, ওই মামলায় গ্রেফতার আব্দুল খালেক ও ফয়েজুল্লাহকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়।
শুনানি শেষে আদালত দুজনের প্রত্যেককে একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তিনি জানান, দালালরা সোনিয়াকে ৬০ দিনের ভিজিট ভিসায় দুবাই পাঠানোর চেষ্টা করছিল। যে ভিসাটি দিয়েছিল সেটিও জাল।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন