দীর্ঘ ১৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার ভোররাত থেকে আবারও আদানির কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি বাংলাদেশের জনসংযোগ কর্মকর্তা এ বি এম বদরুদ্দোজা খান।
তিনি জানান, আজ সকাল ৯টায় আদানি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের পরিমাণ ছিল ৬০৭ মেগাওয়াট। বদরুদ্দোজা খান আরও বলেন, গতকাল বেলা ৩টায় পিজিসিবির প্রকৌশলীদের দ্রুত পদক্ষেপে লাইনটি চালু করা হয়েছিল।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের যাবতীয় কারিগরি প্রস্তুতি সম্পন্নের পর রাত ৩টা ৪৩ মিনিটে আদানির কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। পিডিবির সদস্য (উৎপাদন) এস এম ওয়াজেদ আলী সরদার বলেন, গতকাল ২টা ৪৬ মিনিটের দিকে প্রচণ্ড বাতাসে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে আদানির বিদ্যুৎ সরবরাহ।
আদানির বিদ্যুৎ আনার জন্য বাংলাদেশ-ভারত অংশে যে ডেডিকেটেড সঞ্চালন লাইন স্থাপন করা হয়েছে, তার বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর অংশে সঞ্চালন লাইনে সমস্যা হয়েছিল। প্রসঙ্গত, দেশব্যাপী চলছে তীব্র লোডশেডিং। অন্যদিকে গরমে হাঁসফাঁস করছে দেশের মানুষ। বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়াতে সরকার শোনাচ্ছে বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা।
এই পরিকল্পনার মধ্যে আছে ভারতের আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আরও বেশি বিদ্যুৎ আনা। এই চেষ্টার মধ্যে সঞ্চালন লাইনের সমস্যার জন্য আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ আশা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। বিদ্যুৎ বিভাগ ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) জানিয়েছে, আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে পিডিবি গত কয়েক মাস ধরে গড়ে প্রায় ৭৫০–৮০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ পেয়ে আসছিল। আদানির বিদ্যুৎ সরবরাহ জাতীয় গ্রিড থেকে বন্ধ থাকায় তার নেতিবাচক প্রভাব ইতিমধ্যে পড়তে শুরু করেছিল।
ঢাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে থাকা ডিপিডিসি ও ডেসকো জানিয়েছে, আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় ঢাকার লোডশেডিং বেড়েছিল প্রায় ৩০০ মেগাওয়াট। এর আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুরে আদানি পাওয়ারের ট্রান্সমিশন লাইনে সমস্যা দেখা দেওয়ায় গতকাল দুপুর আড়াইটায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে।
গত কয়েকদিন ধরে সারাদেশে চলমান লোডশেডিংয়ের মধ্যে আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরবরাহ বন্ধ হওয়ায় দেশের পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট আরও বেড়ে যায়। দেশের ৫টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে জ্বালানি সংকটে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট সক্ষমতার পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয় গত ৫ জুন। এ ছাড়া, আরও ৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্র অর্ধেক সক্ষমতায় চললেও ঝাড়খণ্ডের আদানি পাওয়ার থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়মিত ছিল।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন