মরিয়ম মান্নানদের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ পিবিআইয়ের

মরিয়ম মান্নানদের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ পিবিআইয়ের
MostPlay

পিবিআই বলছে, নিয়ম অনুযায়ী বাদীকে তদন্ত প্রতিবেদনের ব্যাপারে জানানো হয়েছে। পরবর্তীতে তা লিখিত আকারেও জানানো হবে। জমির বিরোধে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মাকে ‘অপহরণের নাটক’ সাজানোর নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে খুলনার আলোচিত মরিয়ম মান্নানের বিরুদ্ধে আইনগত শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে পিবিআই। পাশাপাশি সহযোগিতার অভিযোগে মা রহিমা বেগম ও ছোট বোন আদুরী বেগমের বিরুদ্ধে একই ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

সোমবার বেলা ১২টার দিকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) খুলনার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান এ তথ্য জানান। এর আগে সকালে খুলনার মহানগর হাকিম আদালতে মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশের এই সংস্থা।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মা রহিমা বেগমকে আত্মগোপনে রেখে মরিয়ম মান্নান অপহরণের নাটক সাজিয়েছিলেন। পুলিশ সুপার মুশফিকুর বলেন, প্রধান কার্যালয় থেকে অনুমোদন নেওয়ার পর আদালতে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। ‘অপহরণ নাটকের’ মাস্টারমাইন্ড মরিয়ম মান্নান।

তাকে তার মা ও ছোট বোন সহযোগিতা করেছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৭ ধারায় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী বাদীকে ওই তদন্ত প্রতিবেদনের ব্যাপারে জানানো হয়েছে। পরবর্তী সময়ে তা লিখিত আকারেও জানানো হবে। তবে বাদী চাইলে আদালতে জমা দেওয়া ওই প্রতিবেদনে নারাজি দিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তনের আবেদন করতে পারবেন।“

পাশাপাশি ওই মামলায় ফাঁসানো আসামিদের অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা। তদন্তের বরাতে সংবাদ সম্মেলনে মুশফিকুর আরও বলেন, “মরিয়ম মান্নানের মা রহিমা বেগম যে রাতে নিখোঁজ হয়েছিলেন, সেদিনই বিকালে মাকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এক হাজার টাকা পাঠিয়েছিলেন মরিয়ম। এর ২০ থেকে ২৫ দিন আগে ঢাকায় গিয়ে মরিয়ম মান্নানের বাড়িতে কয়েকদিন থেকেও এসেছিলেন রহিমা বেগম।

“তদন্তকারী কর্মকর্তার ধারণা, বেশ আগে থেকেই পরিকল্পনা নিয়ে রহিমা বেগমের নিখোঁজের নাটক সাজিয়েছিলেন মরিয়ম। মূলত জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিবেশীকে ফাঁসাতে ওই পরিকল্পনা করা হয়। এ ঘটনার আগেও রহিমা বেগম বহুবার কাউকে না জানিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে আবার ফিরে আসেন। এসব ঘটনা পরিবারের সদস্যরা জানতেন। তবে ওই ঘটনাটি ছিল পরিকল্পিত।“

মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা খুলনা পিবিআইয়ের পরিদর্শক আব্দুল মান্নান বলেন, “তদন্তের মাধ্যমে আত্মগোপন রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়েছে। রহিমা বেগম অপহরণের পরিকল্পনা মরিয়ম মান্নানই করেছিলেন। ২০২২ সালের ২৭ অগাস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া থেকে রহিমা বেগম নিখোঁজ হন বলে অভিযোগ করেন তার পরিবারের সদস্যরা।

ওইদিন রাত ২টার দিকে খুলনা নগরের দৌলতপুর থানায় মায়ের অপহরণের অভিযোগে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন রহিমা বেগমের ছেলে মিরাজ আল সাদী। রহিমা বেগমকে অপহরণ করা হয়েছে, অভিযোগ তুলে পরদিন ওই থানায় মামলা করেন রহিমা বেগমের মেয়ে আদুরী আক্তার।

পিবিআই পরিদর্শক মান্নান বলেন, মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে তাদের প্রতিবেশী মঈন উদ্দিন, গোলাম কিবরিয়া, রফিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ জুয়েল ও হেলাল শরীফের নাম উল্লেখ করা হয়। ওইসময় তাদের গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। বর্তমানে তারা জামিনে রয়েছেন। ওই বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের একটি বাড়ি থেকে অক্ষত ও স্বাভাবিক অবস্থায় রহিমা বেগমকে উদ্ধার করে পুলিশ। রহিমা বেগম তার মেয়ে আদুরী আক্তারের জিম্মায় খুলনা শহরের একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password