কুমিল্লায় ২৪ ঘন্টার মধ্যে একটি ক্লুলেস হত্যার রহস্য উম্মোচন এবং মামলার প্রধান আসামীকে আটক করেছে র্যাব। ১৮ অক্টোবর মামলার একমাত্র আসামী কানু মিয়াকে আটক করা হয়। কানু মিয়া কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার ধনপুর গ্রামের মৃত সেকান্দার আলীর ছেলে। গত ১৭ অক্টোবর সকালে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার মালিখিল গ্রামের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশের পুকুরে বস্তাবন্দি অবস্থায় আনোয়ারা বেগম (৪১) নামে এক নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
আনোয়ারা কুমিল্লা নগরীর শাকতোলা এলাকার আনার মিয়ার স্ত্রী। মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তার ছেলে বাদী হয়ে দাউদকান্দি থানায় অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে। বিষয়টি নজরে আসলে র্যাব তদন্তের কাজ শুরু করে। পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ অক্টোবর ১টার সময় কাজে যাবার কথা বলে আনোয়ারা বেগম ঘর থেকে বের হয় এরপর মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
পরে পরিবারের সদস্যরা আত্মীয়-স্বজনসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে আনোয়ারার সন্ধান না পেয়ে পরবর্তীতে দাউদকান্দি থানার মাধ্যমে হত্যার বিষয়টি জানতে পারে। পরে র্যাব মাঠ পর্যায়ে গোয়েন্দা কার্যক্রমের মাধ্যমে ভিকটিমের সাথে কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার ধনপুর গ্রামের মৃত সেকান্দার আলীর ছেলে মো. কানু মিয়ার (৫০) সাথে আনোয়ারার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল বলে জানতে পারে। পরবর্তীতে কানু মিয়ার অবস্থান সনাক্ত করে ১৮ আক্টোবর আটক করা হয়।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত জানিয়েছেন র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লার কোম্পানি অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন। তিনি জানান, ওই নারীর সঙ্গে কানু মিয়ার দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। সে ভিকটিমকে আর্থিক সহায়তা ও ভরণ-পোষণ করে আসছিল। ইতোমধ্যে কানু মিয়া জানতে পারে যে, তার সাথে ছাড়াও ভিকটিমের আরও একাধিক লোকের সাথে ঘনিষ্টতা রয়েছে।
এছাড়া বিগত কিছুদিন যাবৎ ওই নারী বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাবুর্চিদের সাথে রান্নার সহযোগী হিসেবে কাজ করতো। তবে কানু মিয়ার পছন্দ না হওয়ায় তিনি এই কাজ না করার জন্য ভিকটিমকে বলেন। জিজ্ঞাসাবাদে কানু মিয়া র্যাবকে জানিয়েছে, এসব ঘটনার কারণে আনোয়ারার প্রতি তার মনে ক্ষোভ ও প্রতিহিংসার সৃষ্টি হয়। গত শনিবার দুপুরে আনোয়ারা কানুর দোকানে গিয়ে তার বিভিন্ন আর্থিক চাহিদার কথা বললে কানু মিয়া তা দিতে অস্বীকৃতি জানায়।
এনিয়ে তাদের মধ্যে ব্যাপক কথা-কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে কানু মিয়া তার দোকানে ফার্নিচার তৈরির কাজে ব্যবহৃত ‘বাটাল’ দিয়ে প্রথমে ভিকটিমের পেটে আঘাত করে ক্ষত-বিক্ষত করে। পরবর্তীতে গলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর কৌশলে লাশ বস্তায় ভরে দাউদকান্দির ওই পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন