২ গোল দিয়ে শিরোপার কাছে বাংলাদেশ

২ গোল দিয়ে শিরোপার কাছে বাংলাদেশ
MostPlay

দুর্দান্ত ফুটবল খেলেই ফাইনালে এসেছিল বাংলাদেশ। ফাইনালও সেই ধারাবাহিকতা ধরে রেখেই শুরু করেছে সাবিনা খাতুনের দল। কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামকে স্তব্ধ করে প্রথমার্ধ শেষে বাংলাদেশ এগিয়ে ২-০ গোলে। কানায় কানায় পরিপূর্ণ কাঠমুন্ডুর দশরথ রঙ্গশালার গ্যালারি।

স্বাগতিক দর্শকদের স্তব্ধ করে দিতে বাংলাদশের মেয়েরা সময় নিলো মাত্র ১৪ মিনিট। গ্যালারিতে হয়তো ঠিকমতো বসেও সারতে পারেননি স্বাগতিক দর্শকরা। এক ঝলকেই তাদের থমকে দিয়ে নেপালের জালে বল জড়িয়ে বাংলাদেশকে উল্লাসে মাতান শামসুন্নাহার জুনিয়র। প্রথমার্ধ্বের শেষ দিকে এসে কৃষ্ণার গোলের পর যেন পিনপতন নীরবতা নেমে আসে রঙ্গশালার গ্যালারিতে।

২-০ গোলের লিড নিয়েই বিরতিতে যায় বাংলার বাঘিনীরা। নেপালের দশরথ স্টেডিয়ামে সাফের শিরোপার লড়াইয়ে বিকেল সোয়া পাঁচটায় মাঠে নামে সাবিনা-সানজিদারা। ফাইনালের ১৪তম মিনিটেই নেপালের জালে বল জড়িয়ে বাংলাদেশকে ১-০ গোলের লিড এনে দেন বদলি নামা ফরোয়ার্ড শামসুন্নাহার জুনিয়র। দ্বিতীয় গোলটি এসেছে ফরোয়ার্ড কৃষ্ণা রাণী সরকারের পা থেকে। ম্যাচের ৪১ মিনিটে নেপাল গোলরক্ষককে একা পেয়ে দুর্দান্ত শটে তার মাথার ওপর দিয়ে বল জালে জড়িয়ে লাল-সবুজকে উচ্ছ্বাসে ভাসান কৃষ্ণা।

সাফের চলতি আসরের ফাইনালে দুই দলই দাড়িয়ে ইতিহাসের সামনে দাড়িয়ে। অধরা সাফের শিরোপার লক্ষ্যে মাঠে নেমেছে দুই দল। স্বগতিক নেপালকে হারাতে পারলেই দক্ষিণ এশিয়ার সেরার মুকুট উঠবে সাবিনা-সানজিদাদের মাথায়। দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ন ফরোয়ার্ড সিরাত জাহান স্বপ্নার ইঞ্জুরি এই ফাইনালেই কিছুটা শঙ্কা জাগিয়েছিলো কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের মনে। তবে সেই শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে ফাইনালের শুরু একাদশে মাঠে নামিয়েছিলেন স্বপ্নাকে।

তবে ১০ মিনিটের বেশি খেলতে পারেননি স্বপ্না। পায়ের চোটটা মাথা চাড়া দিয়ে উঠলে মাত্র ১০ মিনিটেই তাকে মাঠ থেকে উঠিয়ে নিতে বাধ্য হন ছোটন।। স্বপ্নার সেই উঠে যাওয়াটাই যেন সাপে-বর হয়ে এলো বাংলাদেশের জন্য। স্বপ্নার বদলি হিসেবে ছোটন মাঠে নামান শামসুন্নাহার জুনিয়রকে। আর মাঠে নেমেই স্বাগতিক নেপালের দর্শকদের স্তব্ধ করে দিয়ে মাত্র ১৪ মিনিটেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নেন শামসুন্নাহার। মনিকা চাকমার ডান প্রান্ত থেকে করা ক্রস বক্সের মধ্যে থেকে কোনাকুনি প্লেসিংয়ে তিনি বল জড়িয়ে দেন নেপালের জালে।

গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়ার পর অবশ্য ,ম্যাচে ঘুরেদাড়ানোর চেষ্টা করেছে নেপাল। আক্রমণের ধারও বাড়িয়েছে তারা। বাংলাদেশকে রক্ষণে মনোযোগ দিতে হয়েছে টুর্নামেন্টের আগের ম্যাচগুলোর চেয়ে বেশি। ব্যস্ত থাকতে হয়েছে বেশি, যা এই টুর্নামেন্টে আগে দেখা যায়নি। নেপালের একটি কর্নার ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেনি বাংলাদেশের গোলরক্ষক রুপনা চাকমা , তবে গোললাইন সেভে যে যাত্রা অক্ষতই থেকেছে বাংলাদেশের জাল।

তবে খেলার ধারার বিপরীতে গিয়েই দ্বিতীয় গোলটি করে ম্যাচের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বাংলাদেশ। ৪১ মিনিটে নেপালের ভুল পাস থেকে বল পেয়ে যান সাবিন। সেই বল বাঁ পায়ের শটে ২-০ করে দেন কৃষ্ণা রানী সরকার। ২০১৬ সালে অল্পের জন্য স্বপ্নভঙ্গ। সেবার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেও ৩-১ গোলে হার ভারতের কাছে। আজ সাবিনা-সানজিদাদের সামনে আরো একটি ফাইনাল। এবার প্রতিপক্ষ 'হিমালয় কণ্যা' নেপাল।

আবারও রঙ্গিন স্বপ্নে বিভোর লাল সবুজের সোনার মেয়েরা। অধরা সাফের ট্রফি জিতেই দেশে ফিরতে চায় বাংলার বাঘিনীরা। সেই স্বপ্নে যেন শুরুতেই পাল তুলে দিলো শামসুন্নাহার। নেপালের সিনিয়র দলকে আগে কোনো সময় হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। আজ সেই ইতিহাস পরিবর্তনের ইঙ্গিত ম্যাচের শুরু থেকেই।

নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলেই সাফের শিরোপা নিজেদের করে নেওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন গুরু ছোটন। নেপালের একাদশেও শুরু থেকে নেই তাদের সেরা তারকা সাবিত্রা ভান্ডারী। ডেঙ্গু জ্বরের কারণে পুরোপুরি ম্যাচ খেলার মতো সামর্থ্য না থাকাতেই হয়তো তাকে মাঠে নামাননি নেপাল কোচ কুমার থাপা। এখন ম্যাচ বাঁচাতে দ্বিতীয়ার্ধ্বে ত্যাকে মাঠে নামাতেও পারেন নেপালের কোচ।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password