সারা দেশে ব্র্যাকের সকল প্রতিষ্ঠান ও পণ্য বয়কটের ঘোষণা দিবে শিক্ষার্থীরা। দেশের ৯২ শতাংশ মুসলমানরা শুধু ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় নয় ব্র্যাক সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান বয়কট করতে বাধ্য হবে। সোশ্যাল মিডিয়াতে ঝড় উঠে গিয়েছে সপ্তম শ্রেণী শরীফ শরীফার গল্প নিয়ে। এমনকি প্রচুর আলোচনা হচ্ছে বয়কট বিকাশ এ বিষয়ে নিয়ে।
গত তিনদিন ধরে ফেসবুকসহ বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাটফর্ম গুলোতে একটাই কথা উঠেছে বয়কট বিকাশ এবং বয়কট ব্রাক নিয়ে। আর ইতিমধ্যে সারা বাংলার মানুষ জেনে গেছে কিন্তু যারা জানেন নি তাদের জন্য এই প্রতিবেদনটি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সমৃদ্ধি সময়ে ঘটনা প্রায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চলে গিয়েছে। হঠাৎ করে কেন ব্র্যাকের সকল পণ্য বর্জন করছে সাধারণ মানুষেরা আর কেনই বা বিশ্ববিদ্যালয় এত সমালোচনার শিকার হচ্ছে।
দুই দফা দাবিতে মেনে না নেওয়ায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলরত শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের পাশাপাশি সারাদেশে ব্র্যাকের সকল পণ্য ও সেবা বয়কটের ডাক দিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে রাজধানীর মেরুল বাড্ডাস্থ বিশ্ববিদ্যালয়টির স্থায়ী ক্যাম্পাসে মূল ফটকের সামনে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানানো হয়। আন্দোলনকারীদের পক্ষে মারুফ রহমান এ ঘোষণা দেন।
এসময় তিনি বলেন, আমরা ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বসেছিলাম। কিন্তু আমাদের দাবিগুলো মেনে নেয়া হয়নি। তাই আমরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের পাশাপাশি সারাদেশ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যাক বয়কটের (প্রতিষ্ঠানটির সকল পণ্য ও সেবা) ডাক দিলাম।
এর আগে দুপুর ১২টার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাবকে কেন চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তার বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্য ও ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়টির স্পষ্ট অবস্থান কী তা বিবৃতির মাধ্যমে জানানোর দাবিতে মূল ফটকে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে প্রতিবাদকারীরা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করে।
প্ল্যাকার্ডে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দাবি উল্লেখ করেন, ‘শরিফ থেকে শরিফা মানিনা মানবো না’, ‘আমাদের এই বাংলায় ট্রান্সজেন্ডারের ঠাঁই নেই’ ‘ট্রান্সজেন্ঠার আর হিজড়া এক না, এক না’, ‘নো টু এলজিবিটিকিউ’, ‘তোমার আমার বাংলায় ট্রান্সজেন্ডারের ঠাঁই নেই’, ‘নো টু রেইবো টেরোরিস্ট’, ‘ডাচ ব্র্যাক সাপোর্ট এলজিবিটিকিউ ? উই ব্র্যাকিয়ানস ডোনট সাপোর্ট এলজিবিটিকিউ‘. উই ডো নোট প্রমোট এলজিবিটিকিউ‘, ‘সমকামিতার বিরুদ্ধে লড়াই করবো একসাথে‘ ‘আমার সোনার বাংলায় ট্রান্সজেন্ডারের ঠাঁই নেই‘ এসময় বিভিন্ন স্লোগান দেয় শিক্ষার্থীর।
পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষে কয়েকজন এসে আন্দোলনকারীদের ভেতরে গিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দিলেও তারা রাজি হয়নি। এসময় আন্দোলনকারীরা নানান স্লোগান দিয়ে সেখানে অবস্থান করতে দেখা গেছে। এদিকে, বিকেলে সাড়ে ৫টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে গিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দুই ঘণ্টাব্যাপী আলোচনায় বসেন।
এসময় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুনতাসির মামুন। এসময় বাকি শিক্ষার্থীরা মূল ফটকের সামনে অবস্থান করছিলেন। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছে, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে আলোচনায় দাবি দুটির পক্ষে ও বিপক্ষে সন্তুষ্টিমূলক কোনো জবাব দিতে পারেনি।
অর্থাৎ, দাবি দুটি নিয়ে মাঝামাঝি অবস্থান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ কারণে সবার সঙ্গে (শিক্ষার্থী) আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
--সপ্তম শ্রেণী শরীফ শরিফা গল্প-- ঘটনাটি ঘটেছে মূলত সপ্তম শ্রেণীর একটি পাঠ্য প্রস্তুত গল্প থেকে। এখানে একটি যোগ্য গল্প হচ্ছে এটি ট্রান্সজেন্ডারকে কেন্দ্র করে দেখা হয়েছে। আর এই গল্পকে কেন্দ্র করে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ মাহতাব উৎসব এক অনুষ্ঠানে বলেন আপনারা এই বই কিনবেন তারপর প্রথম দুই পেজ ছিড়ে দিয়ে আবার তাদের এই বইটি বিক্রি করতে বলবেন। তিনি প্রতিবাদ জানানোর কথা বলেছিলেন। এ বিষয় নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে।
তিনি প্রতিদিনের মতো ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাস নিয়ে বাসা ফিরেছেন এবং রাতের দিকে তাকে ফোন করে জানিয়ে দেয়া হয়েছে তাকে আর আসতে হবে না ক্লাস নেওয়ার জন্য। ঘটনাটি তিনি ফেসবুকে শেয়ার করেন এবং এরপর থেকেই মানুষ বিকাশ বয়কট করা শুরু করে এবং বয়কট বিকাশ নামের স্লোগান দিতে থাকেন।
বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী সহ সারা বাংলাদেশের মানুষ এখন একটাই স্লোগান দিচ্ছে ব্র্যাকের সকল পণ্য বয়কট করার জন্য। ইতিমধ্যে অনেকের দোকানপাটে বিকাশ বন্ধ করে দিচ্ছে এবং অনেকে এর প্রতিবাদ জানাচ্ছে। তবে ব্র্যাকের অফিসিয়াল ভাবে কোন ধরনের তথ্য বা আপডেট পাওয়া যায়নি এ পর্যন্ত। তারা সপ্তম শ্রেণী শরিফ শরীফার গল্প প্রতিবাদ মূলক এরকম স্লোগান দিচ্ছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন