স্ত্রী নাবালিকা, অষ্টমঙ্গলা সেরে একলাই বাড়ি ফিরলেন স্বামী

স্ত্রী নাবালিকা, অষ্টমঙ্গলা সেরে একলাই বাড়ি ফিরলেন স্বামী

বিয়ের পরে কেটে গিয়েছে বেশ ক'দিন। সপ্তাহখানেকের 'পুরোনো' সংসার। স্ত্রীকে নিয়ে খোশমেজাজে অষ্টমঙ্গলায় শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলেন স্বামী। কিন্তু স্ত্রী যে নাবালিকা! তাই তাঁকে সেখানে রেখে শূন্য হাতেই ফিরতে হল বারাবনির কাশকুলি গ্রামের ওই যুবককে। মেয়ে সাবালিকা হওয়ার আগে তাঁকে বিয়ে দেওয়া হবে না জানিয়ে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির নির্দেশে মুচলেকা দিলেন বাবা-মা। ভুলের স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়েছে মেয়েটির শ্বশুর-শাশুড়ির কাছ থেকেও। সরকারের উদ্যোগ সত্ত্বেও নাবালিকা বিয়ের ঘটনায় যে দাঁড়ি পড়েনি, আরও একবার সামনে এল সে কথা।

সালানপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মেলেকোলা গ্রামের ঘটনা। গ্রামের মাধ্যমিক পাশ 'কন্যাশ্রী' কিশোরীর সঙ্গে কাশকুলির ওই যুবকের বিয়ে হয় গত ১২ জুলাই। কিশোরীর বয়স ১৬ বছর ৭ মাস বয়সী বালিকার সাথে ১২ জুলাই বিয়ে হয়। বিয়ের পর অষ্টমঙ্গলা করতে গত শনিবার বারাবনি থেকে মেলেকোলায় পৌঁছয় নবদম্পতি। এ দিকে, মেয়ের যে ১৮ হয়নি, সে কথা ততক্ষণে পৌঁছে গিয়েছে চাইল্ড লাইনের কাছে। তাতেই আপাতত ছেদ পড়ল সংসারে।

খবর পেয়ে প্রথমেই বারাবনিতে যান চাইল্ড লাইনের লোকেরা। ছেলে না থাকলেও তাঁর বাবা-মা ছিলেন বাড়িতে। নাবালিকার সঙ্গে ছেলের বিয়ে দেওয়া যে ঠিক হয়নি, সে কথা তাঁদের বুঝিয়ে বলা হয় চাইল্ড লাইনের তরফে। ভুল স্বীকার করেন ছেলের বাবা-মা। এরপর কো-অর্ডিনেটর দেবায়ন সেনগুপ্তের নির্দেশে চাইল্ড লাইনের দল পৌঁছয় সালানপুরে। সালানপুর ব্লকের আধিকারিক শুভাশিস রায় ও প্রবীর মজুমদার, সালানপুর থানার পুলিশকর্মীরা এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান প্রলয় চট্টোপাধ্যায়ও যান মেয়ের বাড়িতে।

নাবালিকার বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজনদের তাঁরা বোঝান, সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী ১৮ বছরের কমবয়সি কোনও মেয়ের বিয়ে দেওয়া অবৈধ। তাই তার আগে কোনওমতেই মেয়ের বিয়ে দেওয়া যাবে না। বাড়ির লোককে বোঝানো হয়, ওই 'কন্যাশ্রী'কে অন্তত ১৮ বছর পর্যন্ত পড়াশোনা করাতেই হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারই সমস্ত সুযোগ সুবিধা করে দেবে।

ভুল স্বীকার করেন মেয়ের বাবা-মা। সরকারি নির্দেশ মেনে তাঁরা যে ১৮-র আগে মেয়ের বিয়ে দেবেন না, সে সংক্রান্ত অঙ্গীকার পত্রে সই করেন। আসানসোলের মহকুমাশাসক দেবজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, '১৮ বছর বয়স হওয়ার আগে কোনও মেয়ের বিয়ে বৈধ নয়। তা ছাড়া এখন রেজিস্ট্রি করাও বাধ্যতামূলক।' চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটর দেবায়ন সেনগুপ্ত বলেন, 'আমরা নিজেদের কাজ করেছি। এ বার ওই দুই পরিবারকে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটিতে ডেকে পাঠানো হবে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password