ফুড পয়জনিং হলে যা করবেন

ফুড পয়জনিং হলে যা করবেন
MostPlay

যদি কোনো খাবার খেয়ে বারবার বমি, পাতলা পায়খানা, জ্বর, পেটব্যথা শুরু হয়, তাহলে বুঝতে হবে ‘ফুড পয়জনিং’ হয়েছে। এ সময় অনেকই এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। অস্বাস্থ্যকর খাবার, জীবাণুযুক্ত খাবার, ময়লাযুক্ত থালাবাসনে খাবার খেলে এগুলো থেকে ফুড পয়জনিং হতে পারে।

তবে, বেশিরভাগ ফুড পয়জনিংয়ের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের কাছে না গেলেও চলে। কিছু বিষয় মেনে চলে নিজে নিজেই সেরে ওঠতে পারেন। তবে সমস্যাটিতে শরীর প্রচুর তরল হারিয়ে পানিশূন্যতায় ভুগলে আইভি’র জন্য হাসপাতালে যেতে হবে। আইভি’র মাধ্যমে শরীরে দ্রুত তরল ও খনিজ প্রতিস্থাপন করা হবে।

লিস্টেরিয়ার মতো ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট তীব্র ফুড পয়জনিংয়ের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক লাগতে পারে। কিন্তু বেশিরভাগ ব্যাকটেরিয়ার ক্ষেত্রে ওষুধের দরকার হয় না, যদি রোগীর ইমিউন সিস্টেম দুর্বল না হয় অথবা তিনি গর্ভবতী না হন। প্যারাসাইট সৃষ্ট ফুড পয়জনিংয়েও ওষুধের প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু ভাইরাসের কারণে হলে কোনো ওষুধ লাগে না।

ফুড পয়জনিংয়ের উপসর্গ : ফুড পয়জনিংয়ের লক্ষণ বা উপসর্গ খুবই মৃদু থেকে তীব্র হতে পারে। মৃদু উপসর্গ হিসেবে সাধারণ পেট ব্যথা হতে পারে, অন্যদিকে তীব্র উপসর্গ হিসেবে জ্বর ও বিরতিহীন ডায়রিয়া তথা পাতলা পায়খানা হতে পারে। ফুড পয়জনিংয়ের উল্লেখযোগ্য উপসর্গ হচ্ছে- বমিভাব বা বমি, পেটে ব্যথা বা পেট কামড়ানো ও পাতলা পায়খানা। খোলা খাবার, নষ্ট খাবার, বাসি খাবার ও অন্যান্য অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পর ঘনঘন বমি, পাতলা পায়খানা, পেট ব্যথা ও জ্বর আসলে ধরে নিতে পারেন যে ফুড পয়জনিং হয়েছে।


ফুড পয়জনিংয়ে ঘরোয়া করণীয় : ফুড পয়জনিং সমস্যায় প্রধান করণীয় হচ্ছে প্রচুর পানি পান করা। শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া খনিজ প্রতিস্থাপন করতে ওরস্যালাইনও খেতে হবে। সম্ভব হলে ডাবের পানিও পান করুন। এছাড়া আরো যা করবেন-

# পাকস্থলিকে শান্ত করতে প্রথম কিছু ঘণ্টা খাবার খাবেন না।
# পেট শান্ত হয়েছে মনে হলে খাবার খেতে পারেন। অল্প খাবার দিয়ে শুরু করুন।
# মসলাদার বা চর্বিযুক্ত খাবার থেকে দূরে থাকুন। এসময় ব্লান্ড ডায়েটের ওপর থাকুন, যেমন- ভাত, টোস্ট ও কলা।
# এসময় দুধ জাতীয় খাবার, ক্যাফেইন সমৃদ্ধ পানীয়, অ্যালকোহল ও বুদবুদ ওঠে এমন পানীয় এড়িয়ে চলুন।
# কায়িক শ্রম থেকে বিরত থাকুন। প্রচুর বিশ্রাম নিন।
# পাতলা পায়খানা বন্ধ করতে ওটিসি মেডিসিন সেবন করবেন না। প্রাকৃতিক নিরাময় প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ডায়রিয়ার মাধ্যমে শরীর থেকে জীবাণু বের হয়ে যেতে দিন।

কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন?
সাধারণত ফুড পয়জনিং নিজে নিজে নিরাময় হলেও কিছু লক্ষণ দেখলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত, যেমন-

# মুখ শুকিয়ে যাওয়া অথবা অতিরিক্ত পিপাসা।
# প্রস্রাব না হওয়া অথবা খুবই গাঢ় রঙের প্রস্রাব।
# দ্রুত হৃদস্পন্দন অথবা রক্তচাপ কমে যাওয়া।
# মাথা ঘোরানো অথবা মস্তিষ্কে দুর্বলতা/হালকা হয়ে যাওয়া।
# বিভ্রান্তি
# বমি বা মলে রক্ত
# তিনদিনের বেশি পাতলা পায়খানা
# অসহনীয় পেট ব্যথা বা মোচড়ানো
# ১০১.৫ ফারেনহাইটের ওপর জ্বর
# খাবার বা পানি মুখে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে বমি
# বাহুতে ঝিনঝিন করা
# মাংসপেশি দুর্বল হয়ে যাওয়া।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password