প্রতিবন্ধী এই নারী একমুঠো ভাতের জন্য কাঁদছেন

প্রতিবন্ধী এই নারী একমুঠো ভাতের জন্য কাঁদছেন

দে,দে,দে... বলেই বাম হাতটি বাড়িয়ে দেন তিনি। পেটে যে অনেক ক্ষুধা! তাইতো এভাবেই খাবারের আকুতি জানান প্রতিবন্ধী এক নারী। বোবা ও মানসিক ভারসাম্যহীন এই নারীর ডান হাত ও পা একেবারেই অচল। তাই হাঁটতেও পারেননা তিনি। জানেনও না তার বাবা-মা কিংবা কোথায় তার জন্ম।

বলছি, নওগাঁ সদর উপজেলার মসরপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের ৭০ বছর বয়সী ময়নার কথা। তার পুরো নাম মাহমুদা বেওয়া ময়না। একসময় তার স্বামী ও সংসার ছিল। ২৫ বছর আগে তার ভিক্ষুক স্বামী মারা যান। এরপর থেকে নওগাঁর বালুডাঙ্গা আবার কখনো নওহাটা বাসস্ট্যান্ডে ভিক্ষা করেই জীবন পার করতে থাকেন ময়না।

খোলা আকাশের নিচে কিংবা যাত্রী ছাউনিতে শুয়েই জীবন পার হচ্ছিল তার। কেউ দয়া করে খাবার দিলেই ময়নার পেট ভরত, আর তা না হলে উপোসই সঙ্গী। তবে মানসিক ভারসাম্যহীন এই নারীর প্রতি দয়া দেখিয়ে প্রতিবেশীরা তাকে স্বামীর ঠিকানায় মাথা গোঁজার ঠাঁই দেন। তবে না খেয়ে আর কতদিন? তার এক বেলা খাওয়ানোর দায়িত্বও কেউ নেননি।

দুই বছর পূর্বে প্রতিবেশীদের তৈরি করে দেয়া একটি বসতি ঘরেই পলিথিনের বিছানায় প্রতিবন্ধী ময়নার দিন কাটে। ঘরটিতে নেই কোনো আলো। তার সঙ্গী মশা, মাছি, ছারপোকা আর ঠাণ্ডা বাতাস। খিদের জ্বালা সহ্য করতে না পেরে তাইতো রাস্তায় পথচারীদের শব্দ পেলেই একমুঠো খাবারের আশায় তিনি বাড়িয়ে দেন সচল হাতটি। 

প্রতিবেশীরা অবশ্য যে যতটুকু পারেন তাকে খাবার দেন। তবে তা নির্দিষ্ট নয়। এক দিন কিংবা তারও বেশি সময় না খেয়ে থাকেন ময়না। সরকারি ও বেসরকারি সব সহায়তা থেকেই বঞ্চিত ময়নার জন্মই যেন আজন্ম পাপ। 

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password