ধর্ষণের পর কিশোরীকে পাচারের চেষ্টা, আসামি গ্রেপ্তার

ধর্ষণের পর কিশোরীকে পাচারের চেষ্টা, আসামি গ্রেপ্তার

রাজধানীর সবুজবাগ এলাকায় চাকরির লোভ দেখিয়ে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে এক কিশোরীকে ধর্ষণের পর ভারতে পাচারের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মহেনুমুজ্জামান ওরফে প্রতীক খন্দকার ওরফে বাবু (২৬) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। প্রতীক আন্তর্জাতিক নারী পাচার চক্রের অন্যতম সদস্য।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিটের অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ রেজাউল হায়দার।

সংবাদ সম্মেলনে শেখ রেজাউল হায়দার বলেন, ‘চক্রটি চাকরি দেওয়ার নামে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে প্রলুব্ধ করলেও ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে কোনো টাকা নিতেন না। প্রথম থেকে শুরু করে ভারতে তাদের বিক্রির আগ পর্যন্ত খুব ভালো ব্যবহার করতেন। এরপর ভারতে পাচারের পর তাদেরকে অসামাজিক কাজে লিপ্ত হতে বাধ্য করত চক্রটি। পরে ওই চক্রের কাছে এসব নারীদের বিক্রি করে অর্থ হাতিয়ে নিতেন প্রতীক।’

তিনি জানান, রাজধানীর সবুজবাগ থানা এলাকার একটি ফ্লাটে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে সাবলেট হিসেবে ভাড়া ওঠেন চক্রের হোতা প্রতীক খন্দকার ও তার সহযোগী জান্নাতুল ওরফে জেরিন। ওই ফ্ল্যাটে থাকা এক কিশোরীকে ভালো চাকরি দিয়ে মালয়েশিয়া পাঠাবে বলে প্ররোচিত করতেন তারা। একপর্যায়ে ভুক্তভোগী ওই কিশোরীকে প্রতীক ও জেরিন পাচারকারী চক্রের অন্য সদস্যদের মাধ্যমে বেনাপোল সীমান্তের একটি বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে ভুক্তভোগী কিশোরীকে আটকে ধর্ষণ করা হয়। এরপর ভুক্তভোগীকে ভারতে একটি দালাল চক্রের কাছে বিক্রির উদ্দেশ্যে পাচার করার সময় পুলিশ ওই নারীকে উদ্ধারের পাশাপাশি পাচারকারী চক্রের অন্য এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় মানবপাচারকারী চক্রের অন্যতম হোতা প্রতীক পালিয়ে যান। 

অতিরিক্ত ডিআইজি জানান, ঘটনাটি ২০১৯ সালের ২৩ নভেম্বরের। সে সময় সবুজবাগ থানায় ভুক্তভোগী ওই নারীর পরিবারের করা মামলায় প্রতারক জেরিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে টানা এক বছর অনুসন্ধানের পর গতকাল সোমবার আন্তর্জাতিক নারীপাচার চক্রের মূলহোতা প্রতীক খন্দকারকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে গ্রেপ্তার দুই আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। 

তিনি জানান, গ্রেপ্তার প্রতীক ও জেরিন দুজনই প্রতারক। তারা বিভিন্ন বয়সী নারীদের মালয়েশিয়া, দুবাই ও ভারতে ভালো বেতনে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখাতেন। পরে পাচার চক্রের কাছে এসব নারীদের বিক্রি করে অর্থ হাতিয়ে নিতেন। এর আগেও আসামিরা বিভিন্ন নারীকে সৌদি আরব পাঠানোর কথা বলে ভারতে পাচার করে এবং অনৈতিক কাজে লিপ্ত হতে বাধ্য করেছেন।

আসামি প্রতীক খন্দকারের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফি আইনে পৃথক দুটি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে বলেও অতিরিক্ত ডিআইজি রেজাউল হায়দার জানান।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password