করোনাভাইরাস বিষয়ক হটলাইন চালু

করোনাভাইরাস বিষয়ক হটলাইন চালু

বাংলাদেশেও ঢুকে পড়েছে করোনাভাইরাস। দেশে প্রথমবারের মতো করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত তিন রোগী শনাক্ত হয়েছে। করোনা ভাইরাস বিস্তার রোধ এবং এতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমাতে বিশ্ববাসীকে বেশ কিছু সাধারণ অথচ কার্যকর সতর্কতা অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

তাই আতঙ্ক না ছড়িয়ে হতে হবে সচেতন। তাহলেই মোকাবেলা করা যাবে করোনাভাইরাস। এদিকে, বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে এটি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় তথ্য ও পরামর্শ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশে হটলাইন চালু করেছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট- আইইডিসিআর।

নম্বরগুলো হলো- ০১৯৩৭১১০০১১, ০১৯৩৭০০০০১১, ০১৯২৭৭১১৭৮৪ ও ০১৯২৭৭১১৭৮৫। এসব নম্বরে ফোন করলে জানা যাবে করোনাভাইরাসের স্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শ। পাশাপাশি, কোথাও ঝুঁকিপূর্ণ কাউকে দেখলেও হটলাইনে কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নেয়া যেতে পারে। তবে, ঋতু বদলের কারণে এখন বিভিন্ন ধরনের সর্দি-জ্বর ও ফ্লু’তে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। সেক্ষেত্রে অতি উৎসাহী আচরণ না করে সতর্কতামূলক আচরণ করতে হবে।

বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ফিরে আসার ১৪ দিনের মধ্যে জ্বর, গলা ব্যাথা, কাশি ও শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে দ্রুত সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছে আইইডিসিআর। এছাড়া বিদেশ ফেরত যেকোনো ব্যক্তিকে স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি।

করোনা যেভাবে ছড়ায়
বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী করোনার যে ভাইরাসটি বিস্তার লাভ করেছে তার নাম কোভিড-১৯। এই ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে সুস্থ ব্যক্তির দেহে হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে ছড়াতে পারে।

কোনো সুস্থ ব্যক্তি যখন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির দেওয়া হাঁচি বা কাশির সুক্ষ্মকণা শ্বাসপ্রশ্বাস বা হাতের স্পর্শের মাধ্যমে মুখে নেন, তখন তার দেহেও করোনা সংক্রমণ ছড়াতে পারে।

ভাইরাসটির উৎসস্থল চীনের বেশ কিছু হাসপাতাল কোনো ব্যক্তির মাঝে দশ মিনিটের বেশি সময় ধরে হাঁচি দেওয়া বা কাশি দেওয়ার লক্ষ্মণ দেখা দিলে তাকে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি বলে চিহ্নিত করে। এছাড়াও, কোনো ব্যক্তি ইতোমধ্যেই আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির ছয় ফুটের মধ্যে থাকলে তাকেও উচ্চ সংক্রমণ ঝুঁকির কাতারে ফেলা হয়।

পূর্বলক্ষ্মণ দেখা না দেওয়া ব্যক্তিদের থেকেও ছড়াতে পারে

করোনায় আক্রান্ত অনেকের মাঝে রোগের উপসর্গ নাও দেখা যেতে পারে। এসব রোগীর মাধ্যমেও ভাইরাসটি বিস্তার লাভ করতে পারে। কোভিড-১৯ ভাইরাস সম্পর্কে এখনো অনেক কিছুই অজানা থাকায় এই রোগীদের থেকে ভাইরাসটি সংক্রমণের ঝুঁকি ঠিক কতটা বেশি তা জানা যায়নি।

সামাজিক বিস্তার

এছাড়াও আক্রান্ত রোগীর লালা, থুথু বা সর্দির ফোটা থেকে কোনো বিদ্যালয়ের বেঞ্চ বা বাসের সিট সংক্রমিত হতে পারে। সেখান থেকে সহজেই তা অন্যদের দেহে ছড়াতে পারে।

সুরক্ষার উপায়

নিয়মিত হাত ধোয়া

নিজের দুই হাত মাঝে মধ্যেই পরিষ্কার, স্বচ্ছ পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। এরপর হাতে সাবান লাগিয়ে হাতের তালু এবং পৃষ্ঠতল ঘষে ফেনা তুলুন। আঙ্গুলগুলোর মাঝেও একইভাবে পরিষ্কার করুন। এরপর আবারও পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন।

হাঁচি বা কাশি দেওয়ার সময় টিস্যু দিয়ে মুখ ঢাকতে হবে
এরপর সেই টিস্যু ডাস্টবিনে ফেলে আবারও নিজের হাত পরিষ্কার করুন। হাঁচি বা কাশি আটকাতে কখনোই নিজের হাত বা কনুই ব্যবহার করবেন না।

মুখে মাস্ক পড়ে সামান্য সুরক্ষা পাওয়া যেতে পারে
করোনা ভাইরাসের তরল উৎস হাঁচি-কাশির ফোটা থেকে ফেস মাস্ক কিছুটা সুরক্ষা দিতে পারে। তবে এর মাধ্যমে ভাইরাসের অতি সূক্ষ্মকণা আটকানো সম্ভব নয়। এছাড়া, মাস্ক পড়লেও চোখ খোলাই থাকে। ইতোমধ্যেই বেশ কিছু ব্যক্তির দেহে চোখের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়ানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে।

লক্ষ্মণ দেখা মাত্রই চিকিৎসা সেবা নিন
আপনার যদি জ্বর, কাশি এবং শ্বাস প্রশ্বাসে কষ্ট হয়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গেই নিকটস্থ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আপনি সম্প্রতি কোথায় ভ্রমণ করেছেন, সেসব কথা তাকে খুলে বলুন।

পশুবাজার পরিহার
ভাইরাস আক্রান্ত অঞ্চলে জীবন্ত পশুর বাজার এড়িয়ে চলুন এবং পশুপাখিকে স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন।

কাঁচা খাবার এড়িয়ে চলুন
আক্রান্ত এলাকা থেকে ফিরে থাকলে ১৪ দিন নিজেকে জনসমাগম থেকে ‘বিচ্ছিন্ন’ রাখুন। এর মানে, এই সময় কর্মস্থল থেকে শুরু করে অন্যান্য জনসমাবেশস্থল এড়িয়ে চলতে হবে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password