স্বামীকে বাঁচাতে নিজের কিডনি দান করলেন স্ত্রী

স্বামীকে বাঁচাতে নিজের কিডনি দান করলেন স্ত্রী
MostPlay

একটি দৃঢ় মজবুত ভালোবাসার বন্ধন সবকিছুর ঊর্ধ্বে। আমাদের মনুষ্যত্বকে বাঁচিয়ে রাখতে সাহায্য করে। ভালবাসা অমর! সত্যিকারের ভালবাসা যে এখনো রয়েছে তারই প্রমাণ দিয়েছেন স্ত্রী সেতু খাতুন। স্বামীর দুটি কিডনিই নষ্ট হওয়ায় নিজের জীবনের কথা না ভেবে একটি কিডনি দিয়েছেন তিনি।

বাঁচতে হলে তাকে যেভাবেই হোক একটি কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হবে। এ অবস্থায় চোখে-মুখে যখন অন্ধকার দেখছিলেন রাশিদুল ইসলাম, ঠিক তখনই আশার আলো হয়ে পাশে দাঁড়ালেন তার স্ত্রী। স্বামীর প্রতি ভালোবাসার অনন্য এই দৃষ্টান্ত গড়েছেন ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার হরিশপুর গ্রামের আনসার সদস্য রাশিদুল ইসলামের স্ত্রী সেতু খাতুন। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে সবার প্রশংসায় ভাসছেন তিনি।

জানা যায়, প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে হরিশপুর গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে রাশিদুলের সঙ্গে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাতিভাঙ্গা গ্রামের হবিবর রহমানের মেয়ে সেতু খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর ভালোই চলছিল তাদের জীবন।

তিন মাস আগে হঠাৎ করে রাশিদুল ইসলাম অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে পরীক্ষা শেষে তার কিডনি বিকল হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানান। মধ্যবিত্ত পরিবার হওয়ায় নতুন করে কিডনি নেয়ার সামর্থ্য ছিল না তার। মৃত্যুপথযাত্রী স্বামীকে বাঁচাতে তাই এগিয়ে আসেন স্ত্রী সেতু খাতুন।

রাশিদুল ইসলামের চাচাতো ভাই সবুজ হোসেন জানান, গত ১২ নভেম্বর ঢাকার শ্যামলীতে একটি হাসপাতালে তাদের কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। বর্তমানে স্বামী-স্ত্রী দুজনই সুস্থ আছেন। রাশিদুল ইসলাম আইসিইউতে আর স্ত্রী সেতু জেনারেল বেডে আছেন।সেতুর মা নুরনাহার বেগম বলেন, আমার মেয়ে আমার জামাইয়ের জন্য যা করেছে তাতে আমরা খুশি। আমি সকলের কাছে দোয়া চাইছি।

হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে সেতু খাতুন বলছিলেন, মা-বাবা পছন্দ করে বিয়ে দিয়েছে। বিয়ের পর আমিও তাকে ভালোবেসে ফেলেছি। আমাদের একটি সন্তান আছে। তিনি বলেন, বিয়ের পর আমার স্বামীকে বলেছিলাম মরলে একসঙ্গে মরব, বাঁচলে একসঙ্গেই। স্বামী যদি মারা যায় তাহলে আমি কাকে নিয়ে বাঁচব। তাই আমি আমার স্বামীকে কিডনি দিয়েছি। দুজনকে আল্লাহ যতদিন বাঁচিয়ে রাখেন ততদিন বেঁচে থাকব।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password