মাদক মুক্ত হতে যাচ্ছে মান্দা ভারশোঁ গ্রাম।

মাদক মুক্ত হতে যাচ্ছে মান্দা ভারশোঁ গ্রাম।

মাদকাসক্তি জাতির অন্যতম প্রধান সমস্যায় পরিণত হয়েছে। বিপুলসংখ্যক তরুণ-তরুণী মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েছেন। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে মাদকাসক্তি। ঠিক কতসংখ্যক মানুষ মাদকাসক্ত, তার কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবে বছরে বছরে তা যে দ্রুতগতিতে বাড়ছে, তার স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায় মাদকদ্রব্য, বিশেষত ইয়াবা বড়ি আটকের হিসাবের দিকে তাকালে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালে বাংলাদেশে শুধু ইয়াবা বড়ি আটক হয়েছে ৪ কোটি পিস।

এটা আগের বছরের তুলনায় ১ কোটি ১০ লাখ পিস বেশি এবং ২০১০ সালের তুলনায় প্রায় ৫০ গুণ বেশি। অর্থাৎ গত সাত-আট বছরে এ দেশে মাদকদ্রব্য কেনাবেচা ও সেবন বেড়েছে প্রায় ৫০ গুণ। সাধারণভাবে আটক মাদকদ্রব্যের পরিমাণকে প্রকৃত চোরাচালানের ২০ ভাগের এক ভাগ হিসাবে অনুমান করা হয়। সেই হিসাবে ২০১৭ সালে দেশে প্রায় ৮০ কোটি পিস ইয়াবা বড়ি কেনাবেচা হয়েছে। এ থেকেই অনুমান করা যায়, এ দেশে মাদকসেবীর সংখ্যা কী বিশাল। উদ্বেগের বিষয়, মাদকসেবীরা মূলত তরুণ বয়সী। শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে একটা জাতিকে পঙ্গু করে ফেলতে পারে মাদক।

এই গুরুতর জাতীয় সমস্যার সমাধান করা অত্যন্ত জরুরি কাজ; সে জন্য মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো অবশ্যই প্রয়োজন। নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার ভারশোঁ ইউনিয়নের ভারশোঁ গ্রামের ঋষি পাড়ায় যে মাদকের কারবার হয় তার অত্র অঞ্চলের মধ্যে অন্যতম। অতিতে প্রশাসন, মানবাধিকার সংস্থা ব্রতী সমাজ কল্যাণ সংস্থা থেকে শুরু করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সহ গ্রামের সাধারণ জনগন তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ভাবে অভিযান চালিয়েছে। দু-এক দিনের জন্য বন্ধ হলেও পরে ঠিকই তারা আবার মাদকের কারবার আগের মতোই করে থাকে। কোন ভাবেই মাদক বন্ধ করা সম্ভব হয় না।

বর্তমানে স্থানীয় চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান সুমন তার ইউনিয়নে মাদক বিরোধি একটি দল তৈরী করেন। এই দলে উদ্দেশ্য হচ্ছে অত্র ইউনিয়নে তরুণ সহ সকলে যেনো মাদক মুক্ত, বাল্যবিবাহ মুক্ত, নারী নির্যাতন মুক্ত সহ বিভিন্ন সমাজ উন্নয়নে কাজ করবে। এই দলের মাধ্যমে ভারশোঁ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান সুমন ভারশোঁ ইউনিয়নে সকল মাদক নিয়ে কারবার হয় এমন গ্রাম গুলো তালিকা তৈরী করে বন্ধ করেন। শুধু ভারশোঁ গ্রামের ঋষি পাড়া ছাড়া। বর্তমানে ১৮ এপ্রিল ঋষি পাড়ায় মাদকের বিরুদ্ধে ঝটিকা অভিযান শুরু করেন। । মদ বিক্রি কিংবা খাওয়া অবস্থায় কাউকে পেলে আইনের হাতে সোপর্দ করবেন বলে ঘোষনা করেন। ভারশোঁ গ্রামের সকল জনগনকে মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার অনুরোধ করেছেন স্থানীয় চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান সুমন।

স্থানীয়দের মধ্যে মোঃ হারুন বলেন, আমরা ভারশোঁ গ্রামবাসী এই ঋষি পাড়ার মাদকের জন্য অতিষ্ঠ। পুরা মান্দাবাসীর কাছে আমরা হীন হয়ে যাই এই ঋষি পাড়ার মাদকের জন্য। এমনকি এই পবিত্র রমজান মাসে ও এখানে মাদক বিক্রি হয়। কত পরিবার যে নিঃস হয়েছে এই মাদকের কবলে পড়ে তার হিসাব নেই। আমরা ভারশোঁ গ্রামবাসী আপনার পাশে আছি। অনুগ্রহ করে এই অভিযান অব্যাহত থাক তবেই তরুন সমাজ এই ভয়াবহ মাদকের করাল গ্রাস থেকে মুক্ত থাকবে।

আপেল মাহমুদ বলেন, ভাঁরশো গ্রামের সকল লোক আছে আপনার সাথে বিশেষ করে এ বিয়য়ে। মুসলিম হিসেবে এই মাসে মদ তৈরি করা বা বিক্রয় করার তীব্র নিন্দা করছি। মোঃ মুস্তাফিজ রহমান বলেন, ২০০৮ সালের পর থেকে অভিজান চলছে, কেউ সফল হতে পারেনি।আপনার পাশে আমরা সকলে আছি, ইনশাআল্লাহ আপনার মাধ্যমে এইবার সফলতা আসবেই। অসংখ্য ভালোবাসা ও দোয়া রইলো ভারশোঁ ইউনিয়নের সফল চেয়ারম্যান সাহেব।

চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান সুমন বলেন, আপনারা আমাদের সকল কাজে সহযোগিতা করে থাকেন। আশা করছি আমার মাদক বিরোধি কাজেও সহযোগিতা করে পাশে থাকবেন। তাহলেই আমরা আমাদের ইউনিয়নকে মাদক মুক্ত ইউনিয়ন ঘোষনা করতে পারবো।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password