কুমিল্লায় সিজারের ৫ মাস পর পেট থেকে বের হলো গজ অবস্থা সঙ্কটাপন্ন

কুমিল্লায় সিজারের ৫ মাস পর পেট থেকে বের হলো গজ অবস্থা সঙ্কটাপন্ন
MostPlay

কুমিল্লায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে সিজারের প্রায় পাঁচ মাস পর শারমিন আক্তার (২৫) নামের এক নারীর পেট থেকে গজ ব্যান্ডেজ বের করা হয়েছে। এতে দীর্ঘ সময় গজটি পেটে থাকায় তাতে পচন ধরে তার জীবন সঙ্কটাপন্ন জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) রাতে আরেকটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে অস্ত্রোপচারের পর তার পেট থেকে গজ ব্যান্ডেজ বের করা হয়।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৫ নভেম্বর জেলার দেবিদ্বার উপজেলা সদরের আল ইসলাম হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে শারমিন আক্তারের সিজার হয়েছিল। তার সিজার করান হাসপাতালের খণ্ডকালীন চিকিৎসক এবং দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ও গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. রোজিনা আক্তার। গত ৯ নভেম্বর তাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়া হয়।

বুধবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে শারমিনের বড় ভাই রুহুল আমিন বলেন, ‘ওই প্রাইভেট হাসপাতালে তার বোনকে ভর্তির পর কর্তব্যরত চিকিৎসক রোজিনা আক্তার তার বোনকে দেখে জরুরি সিজার করতে পরামর্শ দেন। ডাক্তারের কথা শুনে আমরা সিজারে রাজি হলে ৫ নভেম্বর ডা. রোজিনা আক্তার ও তার সহযোগী ডা. শামীমা আক্তার লিন্টাসহ অন্যান্য নার্স এবং ওটি বয় মিলে আমার বোনের সিজার করেন। জন্ম হয় ছেলে সন্তান।’

তিনি আরও বলেন, ‘সিজারের দুদিন পর থেকে শারমিনের পেটে ব্যথা হতে থাকে, হাসপাতাল থেকে এ সময় কিছু ওষুধ দেয়া হয়। হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পর অস্ত্রোপচারের ক্ষত থেকে পুঁজ বের হতে থাকে। পরে ব্যথা আরও বেড়ে গেলে তাকে কুমিল্লাসহ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা প্রচুর ওষুধ খেতে দেন। এক পর্যায়ে তার জীবন সঙ্কাটাপন্ন দেখে জেলার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তার অস্ত্রোপচার করে পেট থেকে গজ ব্যান্ডেজ বের করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে ডা. রোজিনা আক্তারের মোবাইল ফোনে কল করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। তবে বুধবার বিকেলে আল ইসলাম হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়াজ মোহাম্মদ হোসেন (এনাম) বলেন, ‘ঘটনাটি পাঁচ মাস আগের। এর পর রোগীর স্বজনরা আমাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করেনি। মঙ্গলবার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে বুধবার সকাল থেকে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আসছি। এটা ভুল হয়েছে, এই জন্য আমরা অনুতপ্ত।’

কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসাইন বলেন, ‘বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমেই শুনেছি। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও যে হাসপাতালে এমন ভুলের ঘটনাটি ঘটেছে তা উল্লেখ করে স্বজনরা লিখিত অভিযোগ করলে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password