সৌদি নারীরা সৌদি নারীরা

সৌদি নারীরা সৌদি নারীরা
MostPlay

সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের একটি অভিজাত ক্যাফের চেয়ারে বসলেন রিমা। আশপাশটা সতর্কভাবে দেখে নিলেন। দেখছেন তিনি কাউকে চেনেন কিনা। এরপর নিজের ইলেকট্রিক সিগারেটটা বের করলেন। মুখ থেকে যেন ধোঁয়ার মেঘ ছাড়লেন।‘প্রকাশ্যে সিগারেট খাওয়া আমার সদ্য পাওয়া স্বাধীনতার অংশ বলে আমি অনুভব করছি। আমি পছন্দের কাজটা করতে পারছি বলে আমি এখন সুখী’ একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরিরত এই সৌদি নারী বার্তা সংস্থা এএফপি-কে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন।

দুই বছর হয় সিগারেট ধরেছেন রিমা। তামাকের ক্ষতিকর দিক নিয়ে তার বিকার নেই। তার ভয় যদি পরিবারের কেউ দেখে ফেলে। অবশ্য যদি এমন কিছু হয় সেটার জন্যও প্রস্তুত বলে জানালেন রিমা- ‘আমি তাদের বলবো না এটা আমার ব্যক্তি স্বাধীনতার বিষয়, কারণ তারা বুঝবে না যে নারীরাও পুরুষের মতো সিগারেট খাওয়ার মতো মুক্ত’।বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকের পশ্চিমা নারীবাদীদের মতো সৌদি আরবের এই সামাজিক পরিবর্তনের যুগে কিছু নারী তাদের মুক্তির প্রতীক হিসেবে সিগারেট, শিশা পাইপ তথা ধূমপান করছেন।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে প্রকাশ্যে সৌদি নারীদের ধূমপানের দৃশ্য সচরাচর দেখা যায়। কট্টর রক্ষণশীল সৌদিতে ব্যাপক সংস্কারের সূচনার আগে এমন চিত্র ছিল অকল্পনীয়।সৌদি আরবের উচ্চাভিলাষী ‘ডি ফ্যাক্টো’ শাসক যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান দেশের মধ্যপন্থী ও ব্যবসাবান্ধব চিত্র তুলে ধরতে বেশকিছু অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংস্কারের সূচনা করেছেন।

দেশটির নারীরা এখন গাড়ি চালাতে পারে, স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখতে পারে এবং কনসার্টেও যেতে পারে। এছাড়া পুরুষ অভিভাবক ছাড়াই তারা পাসপোর্ট পাচ্ছে।উল্লেখ্য, সৌদি বাদশাহ সালমান ২০১৭ সালে ভাতিজা মোহাম্মদ বিন নায়েফকে সরিয়ে সিংহাসনের উত্তরসূরি করেন ছেলে মোহাম্মদ বিন সালমানকে। এরপর থেকে বদলের হাওয়া বইতে শুরু করেছে ‘রক্ষণশীল’ দেশ বলে পরিচিত সৌদি আরবে।

দেশটি অর্থনৈতিক সংস্কারের নামে তেলভিত্তিক অর্থনীতির ওপর নির্ভরতা কমানো, পর্যটন ও শিল্পায়নে গুরুত্ব দেওয়া, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ, আগ্রাসী পররাষ্ট্রনীতি আর নারীদের অধিকারের বিষয়ে ধাপে ধাপে অনেকটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা হচ্ছে, যার মূল কৃতিত্ব দেওয়া হচ্ছে তরুণ ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে। বাবা বাদশাহ সালমান সিংহাসনে থাকলেও কার্যত অনেকে ক্ষেত্রেই মূল ভূমিকা পালন করছেন এই যুবরাজ।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password