গৃহকর্মী নির্যাতন: রংপুরে যুগ্ম জেলা জজসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা

গৃহকর্মী নির্যাতন: রংপুরে যুগ্ম জেলা জজসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা
MostPlay

রংপুর নগরীর আদর্শপাড়া এলাকায় গৃহপরিচালিকা ১৪ বছরের কিশোরী আখিমনিকে টাকা চুরিরর মিথ্যা অভিযোগ এনে অমানুষিক নির্যাতন করে লোহা গরম করে গোপনাঙ্গে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাকা দিয়ে গুরতর আহত করার ঘটনায় অবশেষে ৭ দিন পর বাসার মালিক যুগ্ন জেলা জজ ও তার স্ত্রী, শাশুড়ি ও শ্যালিকা এ চারজনকে আসামী করে শনিবার রাতে মেট্রোপলিটান পুলিশের কোতয়ালী থানায় মামলা হয়েছে।

মামলাটি দায়ের করেছেন নির্যাতিতা কিশোরীর মা শিরিনা বেগম। মামলার আসামীরা হলেন নওগায় কর্মরত যুগ্ন জেলা ও দায়রা জজ রেজাউল বারী তার স্ত্রী কানিজ কান্তা শাশুড়ি খালেদা বেগম শ্যালিকা শাপলা বেগম।

পুলিশ ও স্বজনরা জানিয়েছেন, নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের মেলাবর গ্রামের তালিকাভুক্ত ভিক্ষুক মৃত বাছেদ আলী ফকিরের মেয়ে আঁখিমনি। আঁখিমনির মা শিরিনা বেগম জানান প্রতিবেশী ডালিম চন্দ্র রায় নামের এক ব্যাক্তির মাধ্যমে তার মেয়ে দুই বছর থেকে গৃহকর্মীর কাজ করতো রংপুর নগরীর আর্দশপাড়া মহল্লার যুগ্ন দায়রা জজ রেজাউল বারী ও দন্ত চিকিৎসক কানিজ আখি কান্তা দম্পতির বাসায়।

গত ২৮ নভেম্বর শনিবার ডালিম চন্দ্র রায় শিশু আখিমনির মা শিরিনা বেগমকে নিয়ে রংপুরের দন্ত চিকিৎসক কান্তা বেগমের বাসায় যায় । সেখানে গেলে তারা জানায় আমার মেয়ে টাকা চুরি করেছে। তাই তারা তাকে আর বাসায় রাখবেনা। এ সময় তার মেয়ে বলছিলো সে টাকা চুরি করেনি। তবুও বাড়ির লোকজন তাকে শারীরিক নির্যাতন ও গোপনাঙ্গে গরম ছ্যাকা দিয়েছে। এ অবস্থায় কান্তা বেগম ও তাঁর স্বামী রেজাউল বারী ৩শ  টাকার একটি সাদা স্ট্যাম্পে আমার স্বাক্ষর নিয়ে মেয়েকে আমার হাতে তুলে দেয়। আমি মেয়েকে নিয়ে গ্রামে ফিরে আসি। এখানে এসে মেয়ের শারিরিক অবস্থা খারাপ দেখতে পেয়ে গ্রামবাসীকে ডেকে বিস্তারিত জানাই।

বিষয়টি জানার পর এলাকাবাসি আমরা জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে বিস্তারিত জানায় । এরপর কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশ এসে শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

এদিকে সোমবার বিকেলে গুরতর অসুস্থ শিশু আখিমনিকে নিয়ে তার মা শিরিনা বেগম রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের  জরুরী বিভাগে ভর্তি হবার জন্য গেলে তাদের ভর্তি না করে উল্টো নানান ধরনের হুমকি দিয়ে হাসপাতাল থেকে বের করে বাধ্য হয়ে তিনি মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসেন।

এদিকে পুরো ঘটনা জানিয়ে নির্যাতিতা গৃহকর্মী আখিমনির মা শিরিনা বেগম কিশোরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে থানা থেকে নারী পুলিশ কনষ্টবলের সহায়তায় তাদের শুক্রবার রংপুর কোতয়ালী থানায় পাঠিয়ে দেয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছেন কিশোরগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত মফিজুল হক।

অবশেষে কোতয়ালী থানা উর্ধতন কতৃপক্ষের নির্দ্দেশে শনিবার রাতে যুগ্ন দায়রা জজ সহ চারজনকে আসামী করে মামলা রেকর্ড করে। মামলা নম্বর ১০ তারিখ ৫.১২.২০ইং।

সার্বিক বিষয়ে জানতে কোতয়ালী থানায় যোগাযোগ করা হলে তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মামুনের সাথে যোগাযোগ করতে বলা হয়। পরে এস আই মামুনের সাথে তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি মামলা দায়ের হবার কথা স্বীকার করে বলেন, রেজাউল বারী যুগ্ন দায়রা জজ হিসেবে নওগায় কর্মরত পুরো বিষয় তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password