কথা বলছে গাছ,অলৌকিক নাকি কালো জাদু?

কথা বলছে গাছ,অলৌকিক নাকি কালো জাদু?

গাছ নাকি কথা বলছে, এমন অলৌকিক গল্পের পেছনে ছুটে চলছে অসংখ্য মানুষ। আর এ ঘটনা ঘটেছে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার গর্জিনা গ্রামে। এমন অলৌকিক ঘটনা দেখতে ও গাছের সঙ্গে কথা বলতে প্রতিদিন ভিড় করছেন অসংখ্য মানুষ। তবে এটি নাকি জ্বীনের কাণ্ড হতে পারে এমনটি জানিয়েছেন স্থানীয় মসজিদের এক ইমাম।

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার গর্জিনা গ্রামের সৌদিপ্রবাসী সবুর মিয়ার একটি গাছের বাগান রয়েছে। এলাকাবাসীর ভাষায় বেশ কয়েক দিন (গত শুক্রবার ১৪ জুন) আগে ওই বাগানের একটি লম্বু (স্থানীয়দের ভাষায়) গাছ কাটতে যায় স্থানীয় গ্রামের জুয়েল মোল্লার ছেলে নিরবসহ (১০) কয়েকজন শিশু।

শোনা যায় তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে গাছটির গায়ে আঘাত করলে গাছটি নাকি কথা বলে ওঠে। এ সময় ওই শিশুরা ভয় পেয়ে বাড়ি গিয়ে পরিবারের লোকজনের কাছে জানালে তারা গাছটি দেখতে আসেন। এ সময় তারা গাছের গায়ে কান পেতে রাখলে গাছের ভেতর থেকে আওয়াজ শুনতে পান বলে জানান।

এরপর থেকে অলৌকিভাবে গাছ কথা বলে- এমনটি অপ্রচারের ডালপালা ছড়াতে থাকে এলাকায়। বাতাসে ভাসতে ভাসতে তা এলাকার বাইরেও বেশ আলোড়ন তোলে। দলে দলে লোকজন আসতে থাকে, কেউ কেউ নানা মানতও করতে শুরু করেন। আর কিছু মিডিয়া বা ইউটিবার এটিকে সত্য প্রমাণ করার চেষ্টা চালিয়ে ভিউ পাবার চেষ্টা চালায়।

লোকজনও চাঞ্চল্যকর এই সংবাদটিকে সত্য ভেবে আসতে থাকেন গর্জিনা গ্রামে গাছটিকে দেখার জন্য। গাছটি দেখতে গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, বরিশাল, ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে দলে দলে লোকজন এসে ভিড় করতে শুরু করেন। স্থানীয় রাঘদি ইউপি মেম্বার সাদ্দাম হোসেন, রাঘদি গ্রামের লিয়াকত হোসেন, টেকেরহাট সোহেল মাতুব্বর, গর্জিনা গ্রামের ফরিদ মোল্লাসহ কৌতূহলী মানুষ গাছের গায়ে কান পেতে কথা শোনার চেষ্টা করেন।

শুধু বড়রাই নয়, কথা শোনার চেষ্টা করে শিশুরাও। এতে অনেক দর্শনার্থী গাছের কথা শুনতে পান দাবি করে এটি অলৌকিক বলে দাবি করেন। গাছ কথা বলে এমনটি শোনার পর সাধারণ মানুষ আসতে শুরু করলে একটি মহল গাছটির চারপাশে বাঁশ দিয়ে বেঁধে দেন। পরে এটি একটি ব্যবসা উল্লেখ করে সেই বাঁশ ভেঙে দেয় কিছু স্থানীয় যুবক।

গাছের গায়ে গোবর লেপার কারণে এক নারী অসুস্থ হয়ে পড়েছে বলেও দাবি করেন স্থানীয়রা। তবে অনেকেই গাছ কথা বলে একথা অস্বীকার করে এটি জ্বীনের কাণ্ড হতে পারে বলে জানান।

স্থানীয় মসজিদের ইমাম মাওলানা মোহাম্মদ বাদশা জানান, এ ধরনরে ঘটনাকে ইসলাম সমর্থন করে না। তবে জ্বীনকে গাছের মধ্যে আটকে রাখার কারণে এমনটি হয়তো হচ্ছে। গাছটি দেখতে প্রতিদিনই শতশত মানুষ ছুটে আসায় স্বার্থান্বেসী কোনো মহল ব্যবসা বাগাতে যাতে না পরে এবং সাধারণ মানুষ যাতে প্রতারণার শিকার না হন সে বিষয়ে প্রশাসন আগেভাগেই ব্যবস্থা নেবে এমনটাই দাবি স্থানীয়দের।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password